বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১১ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

১০০ জন থাকলে পাবে মদ বিক্রির লাইসেন্স : বিধি বাতিলে রুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৩ জুন ২০২২

১০০ জন থাকলে পাবে মদ বিক্রির লাইসেন্স : বিধি বাতিলে রুল

প্রতীকী ছবি

‘কোনো এলাকায় ১০০ জন দেশি মদ বা বিলেতি মদের পারমিটধারী থাকলে মদ বিক্রির লাইসেন্স প্রদান করা যাবে’- অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২২ এর এমন বিধি কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০২২ এর ৭ এর (২), (৪) ৯ এর (৩), ১৫ এর (২) ক, এবং ১৫ এর (২) কেন বাতিল করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

রোববার (১২ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার।

চার সপ্তাহের মধ্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহাপরিচালকসহ (ডিজি) সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।  

গত ২০ এপ্রিল অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০২২ চ্যালেঞ্জ করে ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার ও ব্যারিস্টার মো. মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রিট আবেদনটি করেন। 

ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ এর অধীনে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০২২ জারি করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো অ্যালকোহল বা মদ উৎপাদন, কেনাবেচা, পান করা, পরিবহন ও আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়মনীতি স্পষ্ট করা হয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮, অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ (লাইসেন্স ও পারমিট ফিস) বিধিমালা-২০১৪, মুসলিম প্রহিবিশন রুল-১৯৫০ ও এক্সাইজ ম্যানুয়াল (ভল্যুম-২) ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে অ্যালকোহল সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা হতো।
 
অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০২২ অনুযায়ী, মদ কেনাবেচা, পান ও পরিবহনের ক্ষেত্রে লাইসেন্স, পারমিট ও পাস নিতে হবে। কোথাও কমপক্ষে ১০০ জন মদের পারমিটধারী থাকলে ওই এলাকায় অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া হবে। আর ২০০ জন হলে দেওয়া হবে বারের লাইসেন্স।

২১ বছরের কম বয়সের ব্যক্তি মদপানের অনুমতি পাবেন না। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্যাক্রামেন্টাল ওয়াইন (আঙুরের নির্যাস থেকে তৈরি মদ) ব্যবহারের জন্য বিশেষ পারমিট দেওয়া যাবে। বিধিমালায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য চোলাই মদের মহালের সংখ্যা ও অবস্থান নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মদপানের অনুমতি পাবেন চা বাগানের শ্রমিকরাও।

বিদেশি মদের খুচরা পাইকারি অফ শপ ১৬ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সকাল ৮টা এবং ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত সকাল ১০টায় খুলবে। আর বন্ধ হবে রাত ৯টায়। বিদেশি মদের অন শপ বেলা ১১টায় খুলে বন্ধ হবে রাত ৯টায়। দেশি মদের দোকান খুলবে বেলা ১১টায়। বন্ধ হবে ১৬ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত রাত ৯টায় এবং ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত রাত ৮টায়।

লাইসেন্স বা অনুমোদন ফি ও এগুলোর নবায়ন ফি নতুন করে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এই বিধিমালায়। সর্বনিম্ন ফি ১৫০ টাকা, আর সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা। ডিস্টিলারি স্থাপনের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। দেশি মদপানের অনুমোদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। বিদেশি মদপানের অনুমোদন ফি তিন হাজার টাকা।

বিধিমালায় ‘অন শপ’ এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যে স্থান থেকে বিদেশি নাগরিক বা পারমিটধারী দেশীয় নাগরিক বিলাতি মদ বা বিদেশি মদ বা অ্যালকোহলজাতীয় পানীয় কিনে ওই স্থানে বসে পান করতে পারেন।

অ্যালকোহল সেবন, বহন ও বিক্রির জন্য লাগবে পৃথক পৃথক অনুমোদন। অ্যালকোহল বহন ও পরিবহনের ক্ষেত্রে লাগবে পাস। লাইসেন্স ও অনুমোদনের মেয়াদ হবে ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত।

রেল, সড়ক, নৌ ও আকাশপথের যেকোনো একটি বা একাধিক পথে অ্যালকোহল বহন বা পরিবহন করা যাবে। তবে পাসের ওপর অবশ্যই বহন পথ লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। পাসে উল্লিখিত পথ ছাড়া অন্য কোনো পথে আলকোহল বহন বা পরিবহন করা যাবে না।

অ্যালকোহলের প্রতিটি বোতল, মোড়ক বা পাত্রের গায়ে ‘মদ্যপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ এবং ‘আইনের বিধান ব্যতীত মদ্যপান দণ্ডনীয় অপরাধ’ লালকালিতে সুস্পষ্টভাবে লেখা থাকতে হবে। এছাড়া অনুমতি ছাড়া দোকান, বার বা অ্যালকোহল ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত স্থানে বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা যাবে না।