শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৫ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

বদলি আসামি হয়ে কারাগারে গিয়ে ধরা, আদালতের নির্দেশে মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০১:০১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

বদলি আসামি হয়ে কারাগারে গিয়ে ধরা, আদালতের নির্দেশে মামলা

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামির পরিবর্তে আরেকজনের সাজাভোগের ঘটনায় প্রক্সিদাতা ও মামলার সাজাপ্রাপ্ত মূল আসামির বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সেইসঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোকেয়া সুলতানা ঘটনার জন্য আদালতে প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং আদালত তাকে কঠোরভাবে সর্তক করে দিয়ে তার প্রার্থনা মঞ্জুর করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন।

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালত প্রক্সিদাতা ও মূল আসামির বিরুদ্ধে মামলার আদেশ দেন। এরপর আদালতের নির্দেশে বেঞ্চ সহকারী জহিরুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

মাদক মামলায় দণ্ডিত প্রকৃত আসামির নাম জাকির হোসেন সোহেল গাজী। তিনি বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকার মৃত সামাদ মিয়ার ছেলে। আর তার হয়ে প্রক্সি দিয়ে কারাবরণকারী মো. জুয়েল বন্দরের কদম রসুল এলাকার আলাউদ্দিনর ছেলে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী জহিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আদালত আমাকে বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ২০৫, ৪১৯ ও ১০৯ ধারায় মামলা করার নির্দেশ দেওয়ায় আমি দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, আদালত মূল আসামির হয়ে প্রক্সি দিয়ে জেল খাটতে যাওয়া মো. জুয়েলকে মাদক মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আর মূল আসামিকে মাদক মামলায় সাজা ভোগের জন্য কারাগারে পাঠিয়েছেন। তবে এ দুই আসামির বিরুদ্ধেই আবার নতুন মামলার আদেশ দিয়েছেন। মামলায় তারা দোষী প্রমাণ হলে তাদের সাজা হতে পারে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে ২০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হওয়া জাকির হোসেন সোহেল গাজীর বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১০ আগস্ট তার অনুপস্থিতিতে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১০ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত। কিন্তু সোহেল নিজের পরিবর্তে তার পরিচিত মো. জুয়েলকে গত ১২ সেপ্টেম্বর তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোকেয়া সুলতানার মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করান।

এরপর জুয়েলকেই সোহেল হিসেবে সাজা খাটতে কারাগারে পাঠানো হলে বিষয়টি প্রথমে কারা কর্তৃপক্ষর নজরে আসে। কারণ জুয়েল এর আগে ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে ছিলেন। কারা কর্তৃপক্ষ জুয়েলকে চিনে ফেলে এবং তার নাম সোহেল গাজী নয় বলে চ্যালেঞ্জ করলে তিনি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকার করেন যে তার প্রকৃত নাম মো. জুয়েল। তিনি মাদক মামলায় দণ্ডিত সোহেল গাজীর হয়ে কারাভোগ করতে এসেছেন।

বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ কারা কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট আদালতকে জানালে আদালত প্রকৃত আসামি সোহেল গাজীকে গ্রেফতারের জন্য ফের পরোয়ানা জারি করেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর বন্দর থানা পুলিশ মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত আসামি সোহেলকে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালতে সোপর্দ করে।

সেই ঘটনায় বুধবার সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত আসামি সোহেল গাজী ও তার হয়ে প্রক্সি দিয়ে কারাগারে যাওয়া জুয়েলকে আদালত উপস্থিত রাখার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আসামি সোহেল গাজীর আইনজীবী রোকেয়া সুলতানাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।