মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৯ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

ফারদিনের মৃত্যু: ডিবির তদন্তে আশ্বস্ত বুয়েট শিক্ষার্থীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২

ফারদিনের মৃত্যু: ডিবির তদন্তে আশ্বস্ত বুয়েট শিক্ষার্থীরা

ডিবি কার্যালয়ে শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে আশ্বস্ত হয়েছেন তার সহপাঠীরা।

তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছ থেকে বিভিন্ন আলামত দেখে এগুলো প্রাসঙ্গিক বলে দাবি করেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বুয়েটের ৪০ জন শিক্ষার্থী ফারদিনের আত্মহত্যার বিষয়ে জানতে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে আসেন।

প্রায় তিন ঘণ্টা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষার্থীরা আশ্বস্তের কথা জানান। তবে তারা নিজেদের নাম-পরিচয় জানাতে রাজি হননি।

জানতে চাইলে এক বুয়েট শিক্ষার্থী বলেন, ডিবি কর্মকর্তারা আমাদের আলামতগুলো দেখিয়েছেন। সবকিছু দেখে আমাদের কাছে প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে, তদন্তে ডিবি তাদের বেস্ট এফোর্ট দিয়েছে। তবে কিছু গ্যাপ আছে। যেগুলো হয়তো আগামগামীতে সমাধান করবে তারা।

গ্যাপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, তাদের এভিডেন্স সবকিছুই প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে। তবে ফারদিনকে ব্রিজের পাড়ে নামিয়ে দেওয়ার পর হেঁটে সে ব্রিজের মাঝখানে গিয়েছে। তার সঙ্গে আর কেউ ছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়। তবে আমরা ডিবির কার্যকলাপ ও সহযোগিতায় আশ্বস্ত।

তিনি বলেন, তারা (ডিবি) এখনো মামলার রিপোর্ট জমা দেয়নি, সেখানে হয়তো কিছু না কিছু বাদ আছে। এজন্যই তারা এখনো রিপোর্ট জমা দেয়নি। ডিবি প্রথম দিন থেকে যে কাজ করছে, তা আমাদের দেখিয়েছে। তাদের অগ্রগতির ধরন দেখে আমরা সন্তুষ্ট। তাদের ধন্যবাদ।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ফারদিনের আত্মহত্যার হানড্রেড পার্সেন্ট মোটিভ নেই। যেসব এভিডেন্স আছে, তাতে সারকামস্ট্যান্সেস (স্থান বা অবস্থা) এভিডেন্স নেই। এ জায়গায় আরেকটু কাজ করা যেতে পারে। তারা বলেছে কাজ করবে।

পরবর্তী কর্মসূচীর বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা জানান, বুয়েটে গিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে জানানো হবে।

বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধারের পরপরই সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে নারায়ণগঞ্জের চনপাড়ার বস্তি।

ওই বস্তির কাছাকাছি ফারদিনের মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়ায় তদন্ত সংশ্লিষ্টরা ধারণা করেন চনপাড়া বস্তিতে তাকে হত্যা করা হতে পারে। তবে প্রায় এক মাসের তদন্তের পর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানায়, ঘটনার দিন ফারদিনের চনপাড়া যাওয়ার প্রমাণ মেলেনি।

ডিবি জানায়, নিখোঁজ হওয়ার আগে ফারদিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় একাই ঘুরে বেরিয়েছেন। তদন্তের এই পর্যায়ে বোঝা যাচ্ছে, ফারদিন হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি, হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

গত ৪ নভেম্বর রাতে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় বান্ধবী বুশরাকে বাসায় যাওয়ার জন্য এগিয়ে দেন ফারদিন। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন ফারদিন। ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ৯ নভেম্বর রাতে ডিএমপির রামপুরা থানায় ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে ছেলে হত্যার অভিযোগ এনে বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনের নামে একটি মামলা (নম্বর-৯) দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত করছিল ডিবি পুলিশ। ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে এমন নানা তথ্যের মধ্যেই তদন্তে তার আত্মহত্যার তথ্য জানাল ডিবি।