হামলা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের চরকিশোরগঞ্জে পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার ঘটনায় সোনারগাঁও থানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা এবং জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে মাহমুদা আক্তার বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করে এ মামলা এবং অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন আরমান মিয়া (২৫), তুষার (২২), মোঃ নাইম (২১), অন্তর আহমেদ (২০), শাহাদাৎ মিয়া (২৫), সাকিব মিয়া (২০), মোঃ জহির (৪০), সাকিব আহমেদ (২১), মুন্না (২২)।
মামলা এবং অভিযোগসূত্রে জানা যায়, গত ১২ মার্চ রাতে চরকিশোরগঞ্জ এলাকার সাবেক নাছির মেম্বার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী স্থানীয় চরহোগলা ফাড়ির ইনচার্জ এসআই রেজাউল হক তার শ্বশুর বাড়ীতে অতর্কিত হামলা করে। হামলায় তার স্বামী আওলাদ হোসেন শেখকে দেশীয় চাপাতি দ্বারা পিঠে কোপ দেয় ও লোহার রড দ্বারা স্বজোরে মাথায় আঘাত করে। এরপর সন্ত্রাসীরা তার ভাসুর আব্দুর রব ও শহীদের উপর হামলা করলে তাদেরকে রক্ষার জন্য তিনি এবং তার ভাসুর শহীদের স্ত্রী শাকিলা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদের উপরও হামলা করে। এসময় তার ভাসুর শহীদের ৫ বয়সী ছেলেকে সন্ত্রাসীরা সজোরে লাথি মারে। সন্ত্রাসীরা তাদেরকে হুমকি প্রদান করে বলে, "যদি এই গ্রামে থাকতে চাস তবে আমাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, নতুবা তোদেরকে খুন করে নদীতে ভাসায় দিব, কেউ টেরও পাবে না। আর মামলা হামলার ভয় আমাদের দেখাবি না, থানায় তোদের মামলা কেউ নিবে না, নাসির ভাই থানার অফিসারকে বলে দিছে। পুলিশ আমাদের লোক, আমাদের হয়ে কাজ করবে, তোদের টাইম নাই। যদি বাইচ্চা থাকতে চাস তবে ইদুর হইয়া যা। বেশী বাড়াবাড়ি করিলে কেল্লা ফতে কইরা ফালামু।" এ রকম আরো অনেক হুমকি দিতে থাকলে তারা চিৎকার শুরু করলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তখন নাসির মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনীরা ঘরে থাকা নগদ ২ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা এবং ১৩ ভরি ৭ আনা ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকার ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমরা স্থানীয় সোনারগাঁ থানায় মামলা করতে গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার মামলা গ্রহণ করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। আবার, গত ১৪ মার্চ চর হোগলা ফাড়ির ইনচার্জ এস.আই রেজাউল হক ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে বলে "মামলার চেষ্টা করে লাভ নাই, কোন অবস্থাতেই মামলা গ্রহণ করা হবে না। বরং এতে তোদের আরো বিপদ হবে৷ এ যাত্রায় তো জানে বেঁচে গেলি, পরের বার হয়তো বাঁচবি না। আমি নাছির ভাইয়ের লোক, সে যা বলবে তাই করব।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু জানান, মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে সোনারগাঁও থানা পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, মামলা নেইনি এ কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাদের পক্ষ থেকে এখনো কেউ থানায় আসে নি। মূলত সেদিন রাতে পুলিশের একটি টিম ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করতে চরকিশোরগঞ্জে যায়। তখন তারা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে পুলিশের উপর হামলা করে। পুলিশের উপর হামলার সময় এলাকাবাসী তাদেরকে হামলা করতে মানা করে। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় গত ১৩ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা (নং-২৭) হয়।