শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

সবকিছুর দাম বাড়তি, সংসার কেমনে চালাই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

সবকিছুর দাম বাড়তি, সংসার কেমনে চালাই

দ্বিগুবাবুর বাজার

'সামান্য শাক পাতা দিয়া যে ভাত খামু সেই অবস্থাটাও নাই। বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি নাই৷ ডিমের হালি পঞ্চাশ টাকা। সবকিছুর দাম বাড়তি। সংসার কেমনে চালাই'

বাজার করতে এসে কথাগুলো বলছিলেন জাহাঙ্গীর মিয়া। পেশায় তিনি একজন হোসিয়ারি শ্রমিক। বাড়িতে বৌ আর ছয় বছরের ছেলে রয়েছে। জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, মাসে পনেরো হাজার টেকা বেতন পাই। এই টাকায় ঘর সংসার কেমনে চলে। চালের দাম ডালের দাম সবকিছুর দামই বেশি। চার বছর আগে গাইবান্ধা থেকা এদিকে আইসি। গ্রামে তাকতে শাক সবজি কিনতে হয় নাই। এই বাজারে শাক সবজিরই যেই দাম, মাছ মাংসের কথা বাদই দিলাম।

সেমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জ শহরের দ্বিগুবাবুর বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায় বাজারে শাক সবজির চড়া দাম। 

বাজারে সবচেয়ে সাশ্রয়ী দামের সবজি পাওয়া গেল কাঁচা পেঁপে, বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন সবজি বাজারে ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় বাজারে সবজির দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার ফলে কমেছে শাক সবজির চাহিদা।

শসা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা। বাজারে সিমের কেজি ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা  ৮০ টাকা, চাল কুমড়া পিস ৬০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, পেঁপের কেজি ৪০ টাকা, বটবটির কেজি ৮০ টাকা, ধুনধুলের কেজি ৬০ টাকা।

সবজি বিক্রেতা মহিউদ্দিন জানান, আমাদের মোকামে দাম বেশি। আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়। কম দামে কেমনে বিক্রি করি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর থেকেই সবজির দাম বাড়তি। সাধারণত বছরের এ সময় এমনিতেও একটু দাম বেশি থাকে। তবে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম বেশি। তবে আশা করা যায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শীতকালীন সবজির আগাম ফলন উঠতে শুরু করলে সবজির দাম আবারও স্বাভাবিক হবে।

এদিকে বাজার করতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা আনিসুল ইসলাম বলেন, কাঁচা বাজারে প্রায় সবকিছুর দামই বেশি। খেতে তো হবে। তাই বাধ্য হয়েই বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। 

খাদ্য দ্রব্যের দামের ঊর্ধ্বগতির ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের মধ্যবিত্ত, নিন্ম মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষজনদের। শ্রমিক অধ্যুষিত এই জেলায় বেশিরভাগ বাসিন্দাই নিন্ম মধ্যবিত্ত শ্রেনীর। 

ফতুল্লা এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক আরাফাত খন্দকার জানান, এই সামান্য বেতনে বাসা ভাড়া দিয়ে খেয়ে পড়ে থাকার মত আর কিছু থাকে না। মেসে আগে বেশিরভাগ সময় আলু ভর্তা আর ডিম দিয়ে খাওয়া দাওয়া সারতাম। সেই ডিমের হালিও এখন পঞ্চাশ-পয়তাল্লিশ টাকা।

দ্বিগুবাবুর বাজারের ডিমের আড়তে ঘুরে দেখা যায়, ফার্মের মুরগির লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। বাজারে হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২১০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২১০ টাকা।  

ডিম বিক্রেতা মাসুম বলেন, গত সপ্তাহে দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। তবে পাড়া-মহল্লার দোকান গুলোতে লাল ডিমের ডজনে ৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে।