শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৫ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

আদমজী ইপিজেড ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সংঘর্ষ, থানায় মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০০:০৩, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

আদমজী ইপিজেড ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সংঘর্ষ, থানায় মামলা

প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি)  সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা। 

এর আগে গতকাল বুধবার (২৫ জানুয়ারি)  রাতে সুমন মাহমুদ (৩৮) নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে সুমিলপাড়া এলাকার মৃত করিম কশাইয়ের ছেলে ও নাসিক কাউন্সিলর মতির সহযোগী পানি আক্তারকে প্রধান আসামি  এবং আরও ৫জনকে অজ্ঞাত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে , নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) ৪ নং ওয়ার্ড ওয়াপদা কলোনির এলাকার আব্দুল ছাত্তার মোল্লার ছেলে সুমন মাহমুদ (৩৮) দীর্ঘ ৭বছর যাবত আদমজী ইপিজেডে বিভিন্ন মালামালের সাপ্লায়ার হিসেবে নিয়োজিত। এ কারণে প্রধান আসামি পানি আক্তারের সঙ্গে ব্যবসায়ীক বিরোধ চলছিল তার। পরবর্তীতে ২৫ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে বাদী ও তার ব্যবসায়ীক পার্টনার লিমন শেখ (৪২) এবং আল আমীন (৪১) ব্যবসায়ীক কাজে ইপিজেড প্রবেশ করলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একটি প্রাইভেটকার এবং মোটরসাইকেলযোগে এসে ইপিক নামক ফ্যাক্টরির সামনে তাদের উপর হামলা চালায় পানি আক্তারসহ আরও পাঁচজন। একপর্যায়ে বাদীর সঙ্গে থাকা আল আমীন পালিয়ে গেলে অপর পার্টনার লিমন শেখকে হত্যার উদ্দেশ্যে কপালে আঘাত করে  আক্তার এবং তাদের হাতে থাকা এসএস পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। পরে তাদের হৈ-হুল্লোড় শুনে আশপাশের লোকজন এবং বেপজার সিকিউরিটি গার্ডরা উপস্থিত হলে আসামিরা পালিয়ে যায়।
 
মামলার বাদী সুমন মাহমুদ মুঠোফোনে বলেন, আমি চেক পয়েন্ট সিস্টেম নামক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন যাবত সাপ্লায়ার হিসেব ব্যবসা করে আসছি। একসময় চেক পয়েন্ট প্রতিষ্ঠানটির ওয়েস্টিজ, সাপ্লায় সহ সব ধরনের ব্যবসা আমাদের ছিলো। পরবর্তীতে তাঁরা জোরপূর্বক ভাবে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। কোম্পানির সাথে আমাদের ২০২১ সাল পর্যন্ত যুক্তি ছিলো। তবে এ চুক্তি থাকাকালীন ২০১৮ সালে পানি আক্তার ক্ষমতার জোরে ওয়েস্টিজটা নিয়ে গেছে। তারপরও আমরা সাপ্লায়ার ও লেভার দেওয়া  হিসেবে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। কিন্তু চেক পয়েন্ট প্রতিষ্ঠানটি নতুন আরেকটি ফ্যাক্টরি করেছে। সেখানে আমরা চাচ্ছিলাম কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে আমরা ওয়েস্টিজটা নিতে পারি কিনা। মূলত আমরা গতকাল প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিলাম আমাদের বকেয়া বিলের জন্য। সেখান থেকে বের হওয়ার পরই হামলা চালানো হয় আমাদের উপর। 

এ বিষয়ে মামলার আসামি পানি আক্তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি কখনো ঝামেলা করি না। কিন্তু মানুষজন বলে আমি ঝগড়াঝাঁটি করি। আদমজী ইপিজেডে রানিং ব্যবসা আমাদের। গত মঙ্গলবার নাসিকের তিন কাউন্সিলর বাদল, নূরউদ্দিন এবং খোকন এরা মহড়া দিলো এবং পরেরদিন বুধবার আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সুমন মাহমুদদের সাথে। গত ১৩ বছর ধরে আমি চেক পয়েন্ট সিস্টেম নামক প্রতিষ্ঠানে ব্যবসা করে আসছি। এখন উল্টো আমার নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, পানি আক্তারের নামে মামলা দায়ের হয়েছে। তাকে গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল (২৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে তিনটায় আদমজী ইপিজেড এর চেক পয়েন্ট সিস্টেম বিডি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দু'পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরবর্তীতে বর্তমান ব্যবসায়ী ১২ মামলার আসামি পানি আক্তারের ম্যানেজার মোঃ আকরাম হোসেন এবং অপর পক্ষের সুমন এবং লিমন শেখ গুরুতর আহত হন। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পরে ইপিজেড এর অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি ভয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মরত ওর্য়ার্কারাও অনেকে আজ কর্মস্থলে আসেননি বলে জানা গেছে।