সাধু পৌলের গীর্জা
নারায়ণগঞ্জে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। শহরের দুটি গির্জায় আলোকসজ্জাসহ দিনটি উদযাপনে নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) বড়দিন উপলক্ষে শহরের গীর্জাগুলোতে বিশেষ প্রার্থনা, কেক কাটা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বড়দিন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত সাধু পৌলের গীর্জা ও কালীর বাজার এলাকায় অবস্থিত ব্যাপ্টিস্ট চার্চ। তৈরি করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি।
জেলা খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পিন্টু পলিকাপ পিউরিফিকেশন বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বড়দিন উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আগামীকাল আমাদের বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও কেক কাটা অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এবার বিশেষভাবে আমরা কাউকে দাওয়াত জানাইনি। বড়দিনের উৎসব মানে সবার দাওয়াত। এখানে যে কেউ কেক নিয়ে আসতে পারে আমাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ জানান, আমার ওয়ার্ডের দুটি গির্জা অবস্থিত। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রতি বছরের মতো আলোকসজ্জা ও রঙয়ের কাজ করে দেওয়া হচ্ছে।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী দুটি গোত্রের (ক্যাথলিক ও ব্যাপ্টিস্ট) জন্য নারায়ণগঞ্জ শহরে দুটি গির্জা রয়েছে। ক্যাথলিকদের জন্য শহরের ১৩৫ বঙ্গবন্ধু সড়কে সাধু পৌলের গির্জা ও ব্যাপ্টিস্টদের জন্য সিরাজউদ্দৌলা সড়কে ব্যাপ্টিস্ট চার্চ। ব্যাপ্টিস্ট চার্চটি ১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। চার্চ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে রেভারেন্ড রামচরণ ঘোষের নাম বিশেষভাবে উল্লেযোগ্য। এ চার্চে ধর্মীয় আচার ছাড়াও বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজকর্মও হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে চিকিৎসা সেবা, মাতৃসদন, শিক্ষাদান উল্লেখযোগ্য।
অন্যদিকে সাধু পৌলের গির্জা ১৯৪৯ সালে ইতালিয়ান ফাদার জন সে ক্যাথলিক গির্জা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি গির্জার নাম দেন সাধু পৌলের গির্জা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহর ছাড়াও ফতুল্লার সস্তাপুর, পাগলা, দেলপাড়া, বন্দরের লক্ষ্মণখোলা, সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড, সদর থানার গোগনগর এলাকায় খ্রিস্টানদের বাস। তাদের বেশির ভাগই চাকরিজীবী। বিশেষ করে গার্মেন্টস, বায়িং হাউস, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও বিউটি পার্লারে কর্মরত। নারায়ণগঞ্জে ক্যাথলিক ও ব্যাপ্টিস্ট ছাড়াও খ্রিস্টানদের কয়েকটি ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের লোকও রয়েছে। তাদের জন্য নারায়ণগঞ্জে কোনো চার্চ নেই। তারা বাসায় কিংবা অফিসে অথবা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বড়দিন উপলক্ষে অস্থায়ী গির্জা তৈরি ও ক্রিসমাস-ট্রি সাজিয়ে থাকেন।