বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১০ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

সোনারগাঁয়ে লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে স্টল পেতে মামলা করে নিঃস্ব হচ্ছেন ১৩ কারুশিল্পী 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০০:৫৫, ১৯ নভেম্বর ২০২২

সোনারগাঁয়ে লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে স্টল পেতে মামলা করে নিঃস্ব হচ্ছেন ১৩ কারুশিল্পী 

প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের কারুপল্লীতে কারুশিল্পীদের তাদের কারুপন্য বিপননের জন্য বরাদ্ধকৃত স্টল পেতে মামলা করে নিঃস্ব হওয়ার পথে ১৩ কারুশিল্পী। কারুশিল্পীদের অভিযোগ, তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে লাখ লাখ টাকা খরচ করে পথে বসার অবস্থা হয়েছে। কারুশিল্পীরা তাদের নিপুন হাতের তৈরি কারুপন্য বিক্রি করে কোন মতে সংসার চালাতে হচ্ছে। এর উপর মামলার অতিরিক্ত খরচ। ফলে দিন দিন নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন তারা। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে বর্তমানে ৮ টি স্টল রয়েছে। এ স্টল গত বছরের মার্চ মাসে কয়েকটি স্টল ভেঙ্গে ফেলা হয়। এতে করে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় । তাদের এ স্টল বরাদ্দের জন্য উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন কারুশিল্পীরা। গত ২০২১ সালের ২২ ফেব্রæয়ারী সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চে ১৩ জন কারুশিল্পীদের পক্ষে কারুশিল্পী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে এ পিটিশন দায়ের করেন। রিট পিটিশনে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের সচিব, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়। আদালতে রিট পিটিশন দায়েরের পরও ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ কারুশিল্পীদের দোকান  ভেঙ্গে দেন।  

জানা যায়, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের অভ্যান্তরে কারুশিল্পীদের কারুপন্য বিপননের জন্য ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ কারুপল্লী স্থাপন করেন। ওই মার্কেটে ৩৫টি স্টল ছিল। মার্কেটটি জরাজীর্ণ হওয়ার কারনে ২০১২ সালে পুনরায় সংস্কার করে ৪৮টি দোকান তৈরি করে কারুশিল্পীদের মধ্যে বরাদ্দ দেন। এ ৪৮টি দোকান থেকে ২০ জন প্রকৃত কারুশিল্পী দোকান বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হন। এ দোকান বরাদ্দ না পেয়ে কারুশিল্পীরা ২০১৩ সালে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ৪ ফেব্রæয়ারী রিটে কারুশিল্পীদের পক্ষে আদালত রায় প্রদান করেন। ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ ২০ জন কারুশিল্পীদের দোকান বরাদ্দ দিয়ে ২৮টি দোকান থেকে পুনরায় ১৩ জন কারুশিল্পীর দোকান বরাদ্দ দিতে তালবাহানা শুরু করে। ফলে ১৩ জন কারুশিল্পীদের পক্ষে সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে এ রিট পিটিশন দায়ের করেন। উচ্চ আদালতে পিটিশন দায়ের করেন, সেলিনা আক্তার, মো. হাবিবুর রহমান ডালিম. সামসুন্নাহার, মো. রায়হান, মো. জাহাঙ্গির আলম, মনিরুজ্জামান মনির, আছমা বেগম, মো. হাবিবুর রহমান, রুবিনা আক্তার,  মো. সালাউদ্দিন, মো. আনোয়ারুজ্জামান, নারগিস আক্তার ও মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। গতকাল শনিবার আদালতকে উপেক্ষা করে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ কারুশিল্পীদের দোকান ভেঙ্গে দেন। 

কারুশিল্পী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ফাউন্ডেশনের শীর্ষ তিন কর্মকর্তা দোকান বরাদ্দে অনিয়ম করেছেন। তাদের নামে বেনামে এ কারুপল্লীতে দোকান (স্টল) রয়েছে। তারা আত্মীয় স্বজনের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন। 

কারুশিল্পী  হাবিবুর রহমান ডালিম জানান, ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ দু’দফায় আমাদের দোকান বরাদ্দ দিয়েছেন। ওই দোকান আমাদের বুঝিয়ে দেননি। বিষয়টি মিমাংসার জন্য উচ্চ আদালতের গিয়েছি। 

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম জানান, কারুশিল্পীরা রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। আদালতে মিমাংসা হলে কারুপল্লীতে আরো দোকান (স্টল) রয়েছে সেখান থেকে তাদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হবে।