খাবারের দোকান
নারায়ণগঞ্জে সম্প্রতি খাবারের অস্থায়ী, স্থায়ী এবং নানা রকমের দোকানের অধিক্য দেখা যায়।নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে এরকম দোকানে দেখা যায় নগরবাসীর ভিড়। মুখরোচক এসব খাবারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে নিয়মিত এ ধরনের খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর জামতলা, খানপুর, চাষাঢ়া শহীদ মিনারের পেছনে, দেওভোগ, ২ নং রেলগেটসহ বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ও স্থায়ী এসব স্ট্রিটফুড বা জাংক ফুডের দোকান বসেছে। এসব দোকানে নিয়মিত ভিড় করছেন শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও। অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে এসব দোকানে নিয়মিত খাচ্ছেন।
নগরীর বাসিন্দা আনিস জানান, আমাদের বাচ্চাদের আমরা এ ধরনের রিচফুড বা ফাস্টফুড দিয়ে অভ্যস্ত করে ফেলেছি। আর মোড়ে মোড়েই এখন খাবারের দোকান এসব দোকান দেখে বাচ্চাতে খেতে চাইলে তো আর না করা যায়না। খাবারের মান ভালোনা তা সত্যি তবে এসব দেখার জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর রয়েছে। যদিও এসব দপ্তরের নিয়মিত অভিযান বা তদারকি এখন আর চোখে পড়েনা।
নগরীর শহীদ মিনারের পেছনে অস্থায়ী দোকানগুলো, খানপুরের দোকানগুলো ও দেওভোগের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, এসব দোকানে এক তেলেই বার বার ভাজা হচ্ছে খাবার। যেই তেলে মাছ ফ্রাই সেই তেলেই হচ্ছে মুরগী ফ্রাই। আবার এই তেলেই হচ্ছে লুচি। তেল থেকে গেলে তা আবার পরের দিন এরপর থেকে গেলে সেটি আবার পরে মিলিয়ে নিয়ে রান্না হচ্ছে। পথের পাশের ধুলোবালি নিয়মিত এসব খাবারে পড়লেও তা ঢেকে রাখতে নেই উদ্যোগ।
খানপুরের অস্থায়ী এক দোকানি জানান, খাবার ঢেকে রাখলেও খাবে না রাখলেও খাবে। মান নয় এখানে কে কত স্পাইসি ও মজাদার খাবার পরিবেশন করতে পারে তাই দেখে ক্রেতারা। আমরা ক্রেতাদের খুশি রাখতে অনেক কিছুই বজায় রাখতে পারিনা। কোন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান নেই বলেও জানান তিনি।
একই অবস্থা দেওভোগের। সেখানে এক বিক্রেতা জানান, আমরা বার বার তেল পরিবর্তন করে অল্প দামে তো খাবার দিতে পারবোনা। যেভাবে সবকিছুর দাম বেড়েছে আমাদেরও তো সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই আমরা এভাবেই চালাচ্ছি। তবে আমাদের ক্রেতারা খুশী। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে জানালে বিক্রেতা জানান, আমরা তো এগুলোতেই অভ্যস্ত। মানিয়ে নিয়েছি তাই ঝুঁকি নেই।
নগরীর সচেতন নাগরিকরা জানান, রাস্তার আশেপাশে অনেক মুখরোচক খাবারের দোকান দেখা যায়। এসব খাবার শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সি মানুষই কমবেশি খেয়ে থাকে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা বা ক্ষুধার তাড়নায় আমরা খেয়ে নিচ্ছি। এসব দোকানের অধিকাংশ খাবারই তৈরি হয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এবং পূর্ব-ব্যবহূত তেল ব্যবহারের মাধ্যমে। একই তেলে বারবার ফ্রাই করার কারণে এসব খাবার হয়ে ওঠে চরম অস্বাস্থ্যকর এর ফলস্বরূপ হূদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকগুণ। এবং খাবারগুলো থাকে পুরোপুরি খোলামেলা অবস্থায়, যার ফলে রাস্তার ধুলাবালিসহ বিভিন্ন রোগ-জীবাণু খাবারের সঙ্গে মেশে। এর ফলে অনেক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এ অবস্থায়, খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিতকরণে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।