
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ব্রাজিল বাড়ির মালিক ও ফতুল্লার তেলচোর সিন্ডিকেটের শীর্ষ অপরাধী টুটুল আত্মগোপনে রয়েছেন। পাঁচ আগষ্টে আওয়ামী লীগের পতনের পর টুটুলের ব্রাজিল বাড়ি পুড়িয়ে দেয় স্থানীয় জনতা। এর পর থেকেই আর দেখা পাওয়া যায়নি এই টুটুলের। তেল টুটুল আত্মগোপনে থাকলেও দেশে বিদেশে গড়ে তোলা তার সম্পদের পাহাড় এখনও টিকিয়ে রেখেছেন তিনি।
ফতুল্লার রাষ্ট্রয়াত্ব তেল কোম্পানী যমুনা অয়েল কোম্পানীর ক্যান্টিন বয় থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রভাবে ফতুল্লার তেল মাফিয়া হয়ে ওঠেন টুটুল। অবৈধ টাকা দিয়ে এলাকায় বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন তিনি। টুটুলের বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল এলাকাবাসী। পাঁচ আগষ্টের পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী টুটলের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়।
জানা যায়, জয়নাল আবেদীন টুটুলের বাবা মো: রফিক একসময় ছিলেন ফতুল্লার পঞ্চবটিতে অবস্থিত রাষ্ট্রয়াত্ব তেল কোম্পানী যমুনা অয়েল কোম্পানীর সিকিউরিটি গার্ড। কর্তব্যপালনরত অবস্থায় তিনি মারা যাওয়ার পর তার পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে টুটুল যুমনা তেল ডিপোতে কাজ পায়। তবে স্থায়ী কোন চাকরী নয়। অস্থায়ী ভিত্তিতে (নো ওয়ার্ক নো পে) ডিপোর ক্যান্টিন বয় হিসেবে। তার কাজ ছিল প্লেট ধোয়ার। বিনিময়ে দৈনিক ৫০ থেকে ৫৫ টাকা পেতেন। গ্রামের স্কুলে থ্রি-ফোর পর্যন্ত, তারপর ফাইভ-সিক্স নারায়ণগঞ্জের লেখা-পড়ার কথা জানিয়েছেন টুটুল।
ক্যান্টিন বয় থেকে এক সময় স্থায়ী চাকরী পেয়ে যান ডিপোর গ্রেজার (তেল মাপার অপারেটর) সেকশনে। তেল মাপার চাকরী পাওয়ার পর টুটুলকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে তার ভাগ্যের চাকা খুলে যায়। অল্পদিনের মধ্যে তেল চুরির বিদ্যা রপ্ত করেন তিনি। প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার তেল চুরির সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন টুটুল। যমুনা অয়েল কোম্পনীর নিয়ন্ত্রণ করা তিনজন কর্মকর্তা ও দুইজন সিবিএ নেতার সমন্বয়ে ওই সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের ইশারায় বদলী, পদায়ন থেকে শুরু করে সব কিছুই হত সেসময়।
যমুনা অয়েল কোম্পানীর সংশ্লিষ্টদের মতে, তেল চুরি সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত এসকল গ্রেজারের প্রত্যেকের দৈনিক আয় কমপক্ষে ১ লাখ টাকা। কখনো কখনো মাসে এ টাকার অংক ছাড়িয়ে যেত কোটিতে।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের আমলে তেল চুরির টাকায় হাজার কোটি টাকার সম্রাজ্য গড়ে তোলেন টুটুল। টাকার ভাগ পেতেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারাও। অবৈধ এ টাকা দিয়ে ফতুল্লাসহ দেশে বিদেশে কোটি কোটও টাকার সম্পদ গড়ে তোলেন টুটুল। পাঁচ আগষ্টের পর আত্মগোপনে থেকেই নিজের সম্পদ তদারকি করছেন টুটুল।