বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

|

বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

মঙ্গলবার সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৬:১০, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

মঙ্গলবার সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী

ফাইল ছবি

আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ -৫ (সদর-বন্দর) আসনের সাবেক এমপি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত জননেতা একেএম নাসিম ওসমানের ১০ম মৃত্যু বার্ষিকী। 

২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল ভারতের দেরাদুনে চিকিৎসাকালীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মুত্যু বরণ করেন। মরহুম নাসিম ওসমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আপাদমস্তক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি শুধু মহান ৭১’এ প্রত্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধই করেননি, ১৯৭৫’এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে অংশ নিয়েছিলেন প্রতিরোধ যুদ্ধেও। 

প্রয়াত নাসিম ওসমান ১৯৫৩ সালের ৩১ জুলাই নারায়ণগঞ্জে ঐহিতাসিক ওসমান পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত (মরোণত্তর) প্রয়াত এ কে এম শামসুজ্জোহা ছিলেন ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তাঁর মা মরহুম বেগম নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষা সৈনিক। স্বদালাপী নাসিম ওসমান ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান।

ছাত্র জীবনে পরিবারের ভুমিকায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নাসিম ওসমান আওয়ামীলীগের রাজনীতি দিয়ে জীবন শুরু করেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন অকুতোভয় বীর সেনানী। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নাসিম ওসমান ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি গেরিলা যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে এসে যুদ্ধ করেন।

১৯৭৫সালের ১৪আগষ্ট রাতে নাসিম ওসমানের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর জেষ্ঠ্য পুত্র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, যে অনুষ্ঠানে তোলা ছবিটি ছিল শেখ কামালের জীবনের তোলা শেষ আলোকচিত্র। পরদিন তথা ১৫ই আগষ্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর একটি অনুষ্ঠান থাকায় নাসিম ওসমানের অনুরোধ সত্বেও শেখ কামাল ঐ রাতে নারায়ণগঞ্জে আসেননি। তিনি নারায়ণগঞ্জে এলে বাংলাদেশের ইতিহাস হয়তো অন্যভাবেও রচিত হতো। ১৯৭৫’র ১৫ই আগষ্ট নিজের নবপরিনীতা স্ত্রীকে রেখে পরিবারের সকল নারী সদস্যদের অলংকার সংগ্রহ করে নাসিম ওসমান চলে যান বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে। 

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হলেও শুধুমাত্র তৎকালীন সময়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতি ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সুরক্ষার কথা ভেবে কৌশলগত কারণে আশির দশকের শুরুতে নাসিম ওসমান যোগ দেন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে। তিনি আমৃত্যু জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। তিনি যথাক্রমে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে মোট ৪ বার জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ ৫ (সদর ও বন্দর) আসনের  সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বন্দরের নাসিম ওসমান উচ্চ বিদ্যালয়ে মিলাদ ও দোয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এতিমখানা, মসজিদসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকেও পবিত্র কোরআন খতম ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি তার ছোট ভাই ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমানের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার শ্রমিক ও এতিমদের নিয়ে দোয়ার ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় অংশ নেয়ার আকুল আবেদন জানানো হয়েছে।