
জলাবদ্ধতা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে ভুগছেন স্থানীয় লোকজন। এ জন্য তারা সড়কের পাশে নালা নির্মাণকাজের ঠিকাদারের গাফিলতিকে দায়ী করেছেন। তাদের ভাষ্য, সড়ক থেকে প্রায় দুই ফুট উঁচু করে নালা নির্মাণ চলছে। আশপাশের এলাকার পানি নামার কোনো পথই রাখা হয়নি। যে কারণে বৃষ্টির পানি সড়ক উপচে মার্কেট ও দোকানপাটে ঢুকে পড়ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় পানি নিষ্কাশনে গত বছর নালা নির্মাণের উদ্যোগ নেয় নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। সে জন্য মোগরাপাড়া ফুট ওভারব্রিজ থেকে শহীদ মজনু পার্ক পর্যন্ত ৭২৬ মিটার নালা নির্মাণ ও গুরুত্বপূর্ণ চারটি জায়গায় আরসিসি ঢালাইয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসমত অ্যান্ড ব্রাদার্স। তারা চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি কাজ শুরু করে। ৬ মাসের মধ্যে অর্থাৎ চলতি জুন মাসেই কাজটি তাদের শেষ করার কথা। কিন্তু সরেজমিন জানা গেছে, ১ জুন পর্যন্ত এই কাজের মাত্র ৫৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
এলাকাবাসী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নালা নির্মাণকাজে ধীরগতির অভিযোগ করেছেন। তাদের ভাষ্য, নালাটি রাস্তা থেকে উঁচু করে নির্মাণ শুরু করায় বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না। এ ছাড়া নালা দিয়ে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে পানি আটকে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সেই পানি আশপাশের মার্কেট ও দোকানে ঢুকে পড়েছে।
ওই এলাকার এম রহমান প্লাজায় কাপড়ের দোকান রয়েছে লিংকন রহমানের। তাঁর অভিযোগ, অদৃশ্য কারণে ধীরগতিতে নালা নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বৃষ্টির পানি জমে পুরো এলাকা একাকার হয়ে পড়েছে। এ পথ দিয়ে মানুষকে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
আইয়ুব প্লাজার ব্যবসায়ী আহসান উল্লাহ বলেন, মোগারাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার মহাসড়কের পানিসহ আশপাশের গ্রামের পানিও এ সড়ক দিয়ে নামছে। ফলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ময়লা-আবর্জনা ওই পানিতে মিশে দুর্গন্ধ সৃষ্ট হয়েছে।
বাড়ি মজলিস গ্রামের গৃহবধূ কামরুন নাহারের ভাষ্য, প্রতিদিনের ভোগান্তি আর ভালো লাগে না। দ্রুত নালাটির নির্মাণকাজ শেষ করতে না পারলে এর শেষ হবে না। নালার কাজ শেষ করে রাস্তাও দ্রুত সময়ের মধ্যে উঁচু করে তৈরি করতে হবে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসমত অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী হাসমত আলী হাসুর দাবি, তারা কার্যাদেশ মেনেই নির্মাণকাজ করছেন। নির্ধারিত সময়েই তা শেষ করার আশা করছেন। জমে থাকা পানি নিষ্কাশন ও বৃষ্টির পানি যাতে আটকে না থাকে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, তিনি পানি জমে জলাবদ্ধতার বিষয়টি জানেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুতই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবেন।