
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জুবায়ের বিন মোহাম্মদ নামে এক স্কুলশিক্ষার্থীর নদী থেকে লাশ উদ্ধারের ৪১ দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা যায় বন্ধুরা শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দিয়ে নৌকাডুবির নাটক সাজায়।
এর আগে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল উপজেলার ভোলাব গাবতলা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে শিক্ষার্থী জুবায়েরের লাশ উদ্ধার করা হয়। জুবায়ের উপজেলার চারিতালুক এলাকার তপন মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় মিনারা বেগম বাদী হয়ে জুবায়ের হোসেনকে হত্যার অভিযোগ এনে রূপগঞ্জ থানায় মামলার দায়ের করেন।
নিহত স্কুলশিক্ষার্থীর মা মিনারা বেগম জানান, গত ১৮ এপ্রিল বিকেলে তার ছেলে জুবায়ের বন্ধু শাহিন, রাজিব ও সিয়ামের সঙ্গে ভোলাব আতলাপুর এলাকায় ঘুরাঘুরি করতে যায়। সন্ধ্যার দিকে বন্ধু শাহীন ও তার মামি মাজেদা বেগম, রাব্বি ও সিয়াম মিলে মা মিনারা বেগমকে জানায় আতলাপুর দিয়ে নৌকা পারাপারের সময় নৌকা ডুবে জুবায়ের নদীতে নিখোঁজ হয়। তারা সাঁতার কেটে নদীর পাড়ে চলে এলেও জুবায়ের ডুবে যায়। গত ১৯ এপ্রিল ইছাপুরা নৌ পুলিশের এসআই পরিতোষ চন্দ্র সরকার ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি বেলা ১১টার দিকে ভোলাব গাবতলা এলাকা থেকে জুবায়েরের লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখতে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের নাজমুল হোসেন মতামত দেন বুকে ও মাথায় আঘাতের পর শ্বাসরোধের কারণে জুবায়েরের মৃত্যু হয়। ডাক্তারের মতামতের ভিত্তিতে মিনারা বেগম খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বন্ধু শাহীন ও তার সহযোগী রাব্বি ও সিয়াম সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গাবতলা এলাকায় নদীর পাড়ে নিয়ে বুকে ও মাথায় আঘাত করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে। হত্যার ঘটনা ধামচাপা দিতেই তার বন্ধুরা নৌকা ডুবে যাওয়ার নাটক সাজায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টর আনার সময়ও শাহীন, রাজিব ও সিয়াম ও তার আত্মীয় স্বজনরা মিনারা বেগমে হুমকি ধামকি ও বাধা দেয়।
এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, এ ঘটনায় নিহত জুবায়েরের মা মিনারা বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।