সোমবার, ০২ জুন ২০২৫

|

জ্যৈষ্ঠ ১৮ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

নারায়ণগঞ্জে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৯৭ হাজার পশু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৭:৫২, ৩১ মে ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৯৭ হাজার পশু

ফাইল ছবি

পবিত্র ঈদুল আজহার এখনো সপ্তাহখানিক সময় বাকি। তবে এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে প্রস্তুতি। বসতে শুরু করেছে পশুর হাট। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্থল-জলপথে নারায়ণগঞ্জে আসতে শুরু করেছে গরু। কোরবানির আগের দিন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু আসা অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে খামারগুলোও বেশ জমজমাট।

ভোগান্তি এড়াতে অনেকে আগে থেকেই পছন্দের পশু অগ্রিম কিনে রাখছেন এসব খামার থেকে। তবে লালন-পালনের খরচ বাড়ায় এবার পশুর দাম তুলনামূলক বেশি বলে জানিয়েছেন খামারিরা। তাদের প্রত্যাশা, দাম কিছুটা বাড়লেও শেষ পর্যন্ত কোনো কোরবানির পশু অবিক্রিত থাকবে না।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে সাড়ে ১৪ হাজার গবাদি পশুর খামার রয়েছে। এসব খামারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৯৭ হাজার ৪১৭ পশু। আর জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা ৯৯ হাজার ২৫২টি। ফলে ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৩৫টি পশু।

খামারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত পশুগুলোর মধ্যে ৫৬ হাজার ২৭৩টি ষাঁড়, ৮ হাজার ৪৬৫টি বলদ, ১৬ হাজার ৭৯৩টি গাভী, ৯১০টি মহিষ, ১১ হাজার ৪০টি ছাগল, ৩ হাজার ৭৭৫টি ভেড়া, ১৬১টি অন্যান্য পশু রয়েছে।

উপজেলা অনুসারে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ২২ হাজার ৩০০টি, বন্দর উপজেলায় ১৮ হাজার ৫৩৩টি, রূপগঞ্জ উপজেলায় ১৭ হাজার ৯৫টি, আড়াইহাজার উপজেলায় ২৫ হাজার ৯২০টি এবং সোনারগাঁ উপজেলায় ১৩ হাজার ৫৬৯টি কোরবানির পশু রয়েছে।

আরকে এগ্রো ফার্মের ম্যানেজার আব্দুস সামাদ বলেন, আমাদের খামারে সংকর জাতীয় গরু বেশি। সব সময় ঈদের দুদিন আগেই সব গরু বিক্রি হয়ে যায়। কোনো গরু অবিক্রিত থাকে না। আশা করছি, এবারও তাই ঘটবে। আমরা এরই মধ্যে অনলাইনে এবং সরাসরি গরু বিক্রি শুরু করেছি। অনেক ক্রেতা বুকিং মানি দিয়ে গরু কিনে খামারেই রেখে যাচ্ছেন। তাদের ইচ্ছামতো ঈদের দু-একদিন আগে গরু ডেলিভারি দেওয়া হবে।

আলমগীর হোসাইন নামের এক খামারি বলেন, এখনো তার খামারে বেচাকেনা শুরু হয়নি। তার খামারে শতাধিক গরু রয়েছে। সবগুলোই বিক্রির জন্য প্রস্তুত। নারায়ণগঞ্জের বাইরের লোকজনও এখান থেকে গরু কিনে নিয়ে যায়। এই সপ্তাহের শেষের দিক থেকে ক্রেতাদের চাপ বাড়বে আশা করছি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, নারায়ণগঞ্জে কোরবানির পশুর সামান্য সংকট থাকলেও তা শেষ পর্যন্ত থাকবে না। হাটগুলো চালু হলে চাহিদার চেয়ে পশু উদ্বৃত্ত থেকে যাবে। সব মিলিয়ে বলতে পারি এবার নারায়ণগঞ্জে কোরবানির পশুর সংকট হবে না। আশা করছি, এবার প্রায় ৫০০ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হবে।

তিনি আরও বলেন, খামারিরা প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন কি না এ বিষয়ে আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। এছাড়া পশুর হাটগুলোতে আমাদের ভেটেনারি টিম থাকবে। যে কোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকবো। এবার যেহেতু উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি, তাই পশুর দাম বেশি হওয়া স্বাভাবিক। তবে দাম অতিরিক্ত হবে না বলা যায়।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, কোরবানির পশুবাহী ট্রাককে ঘিরে যেন সড়কপথে কোনো চাঁদাবাজি না হয় সেদিকে নজর রেখেছি। একই সঙ্গে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ কাজ করছে। জেলাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আশা করছি, নারায়ণগঞ্জবাসীকে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় এবার ৯৫টি গরুর হাট বসছে। আমরা পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছে যে, হাটের গরু সেই হাট ছাড়া অন্য কোনো জায়গায় থাকলে ব্যবস্থা নেবো। সেই সঙ্গে গরুর হাটকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রত্যেক হাটেই আনসার বাহিনী থাকবে।