বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

|

আষাঢ় ১০ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

না.গঞ্জে বিভক্তিতে যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল, কমিটি ছাড়া ছাত্রদল!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১১:৩৪, ২৫ জুন ২০২৫

না.গঞ্জে বিভক্তিতে যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল, কমিটি ছাড়া ছাত্রদল!

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে এখন দেখা দিয়েছে চরম অস্থিরতা ও বিভাজন। বিশেষ করে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে জর্জরিত। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে নেই সক্রিয় কোনো ছাত্রদল কমিটি। এতে করে স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবদলের দুই অংশের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে। মহানগর যুবদলের বর্তমান কমিটি ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের বিরোধের কারণে হচ্ছে না কমিটির অগ্রগতি। অন্যদিকে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির সাথে বিরোধ তৈরি হয়েছে আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজীবের। এর ফলে জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও ইউনিট কমিটি গঠনের কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।

জানা যায়, বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কেউ কেন্দ্র ঘেঁষা, আবার কেউ স্থানীয় সিনিয়র নেতাদের ছত্রছায়ায় নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে মরিয়া। একাধিক কর্মসূচি পৃথকভাবে ডাকা হচ্ছে, যার ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা।

যুবদল নেতাকর্মীরা বলেন, আমরা মিছিল করতে গেলেও ভাবতে হয় কার সঙ্গে যাবো। এক পক্ষ গেলে আরেক পক্ষ সমালোচনা করে। সংগঠনের ভিতটাই নড়বড়ে হয়ে গেছে।

এদিকে সোমবার (২৩ জুন) জাতীয়তাবাদী যুবদলের সহ দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক ও সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনিকে সতর্ক করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল।

এসময় আগামী সাতদিনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় যুবদল।

এসময় যৌথ বিবৃতিতে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন জানান ইতিপূর্বে একাধিকবার নির্দেশনা দেয়া হলেও জেলা যুবদল পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়নি। এটি সংগঠনের নীতি ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড।

এসময় চূড়ান্ত সতর্কবার্তা হিসেবে আগামী সাত দিনের মধ্যে জেলা যুবদলের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় জাতীয়তাবাদী যুবদল।

এদিকে স্বেচ্ছাসেবক দলেও একই অবস্থা। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমানকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক। ইতিমধ্যে দল তাকে শোকজও করেছে। ফলে থমকে আছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কার্যক্রমও। এদিকে আহবায়কের সাথে বর্তমানে প্রকাশ্যে বিরোধ রয়েছে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রফিকুল ইসলাম ও সদস্য সচিব সালাহউদ্দিন সালুর।

আর ছাত্রদলের অবস্থাও আশাব্যঞ্জক নয়। নারায়ণগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর কোনো জেলা বা মহানগর ছাত্রদল কমিটি নেই। কমিটি ছাড়াই বিচ্ছিন্ন ভাবে নিজ নিজ এলাকায় মিছিল মিটিং করে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চেষ্টা করছেন ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশীরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের অন্তঃদ্বন্দ্ব, আস্থাহীনতা ও সাংগঠনিক স্থবিরতা দিন দিন নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আন্দোলনের মাঠে দল হিসেবে একক কোনো শক্তি ৫ আগস্টের পর আর দেখা যায় না, বরং ছোট ছোট গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে আছে পুরো কাঠামো।

স্থানীয় এক বিএনপি নেতা বলেন, উপরে ঐক্যের কথা বললেও নিচে বিভক্তি প্রকট। কেন্দ্রীয়ভাবে হস্তক্ষেপ না হলে এই সমস্যা কাটবে না। নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন জোরদার করতে হলে যুব, ছাত্র ও স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলোর পুনর্গঠন, নেতৃত্বে স্বচ্ছতা এবং তৃণমূলের আস্থার জায়গা তৈরি করাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, বিএনপি বিশাল দল এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আছে তবে বিভক্তি নেই। কমিটি গুলো নিয়ে জেলা মহানগর ও কেন্দ্র কাজ করছে। দেশ ও দলের জন্য এবং মানুষের জন্য বিএনপির সবাই এক।