মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

|

আষাঢ় ৯ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

ফতুল্লায় গ্যাস চুরিতে সক্রিয় ৩০ জনের চক্র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১২:০৪, ২৪ জুন ২০২৫

ফতুল্লায় গ্যাস চুরিতে সক্রিয় ৩০ জনের চক্র

প্রতীকী ছবি

ফতুল্লায় গ্যাস চুরিতে সক্রিয় অন্তত ৩০ জনের একটি দালালচক্র। অভিযোগ রয়েছে, তারা কলকারখানা ও বাসাবাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেন আবার প্রতিমাসে অফিসের কথা বলে কথিত গ্যাস বিলও আদায় করেন। যারা বিল দিতে সময়ক্ষেপণ করেন, তাদের সংযোগ দেন বিচ্ছিন্ন করে। এ চক্রটি প্রতিমাসে গ্যাস চুরি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রায় ৬ বছর ধরে এসব দালাল রয়েছেন বহাল তবিয়তে। গ্যাস অফিস মাঝেমধ্যে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান চালালেও যারা চুরি করে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন, তাদের নাম-পরিচয় জানার পরও রহস্যজনক কারণে নেওয়া হয় না কোনো আইনি ব্যবস্থা।

সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২১ মে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করে তিতাসের আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংযোগ দেওয়া বন্ধ করে দেয় জ্বালানি বিভাগ। এরপর থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া এলাকায় অবস্থিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন (টিএন্ডডি) জেনারেল অফিসে দালালচক্র ভিড় করতে থাকে। বিভিন্ন অসাধু কর্মকর্তাকে হাত করে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় প্রকাশ্যে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়া শুরু করেন। প্রতিটি সংযোগ থেকে দুই থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে থাকেন। এরপর প্রতিমাসে চুলাপ্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা সেই দালালরাই আদায় করে নিয়ে আসেন। এছাড়া বিভিন্ন কলকারখানায় বৈধ সংযোগের সঙ্গে অবৈধ সংযোগ দিয়ে প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছেন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। আবার অনেক কারখানা থেকে এর চেয়ে কয়েকগুণ টাকা আদায় করে থাকেন দালালরা। দালালদের নির্ধারিত সময়ে টাকা না দিলেই সেসব বাসা বা কারখানায় চালানো হয় অভিযান। বিষয়টি গ্রাহকরা অভিযানে অংশ নেওয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানিয়েও কোনো সুফল পায় না। উলটো গ্রাহকদেরই জরিমানা গুনতে হয়। এককথায়-গ্যাস অফিস ম্যানেজ করেই দালালচক্র গ্যাস চুরিতে সক্রিয় রয়েছে।

গ্যাস অফিস কর্মকর্তাদের মাধ্যমে শনাক্ত করা এমন ৩০ দালালের নাম পাওয়া গেছে। যারা গ্যাস চুরি করে কোটিপতি বনে গেছেন। দালালদের মধ্যে রয়েছেন শহরের গলাচিপার কসম কামাল, তার ভাই সোহেল, সুমন, বেসলাইট সোহেল, চাষাঢ়ার রিংকু, ডনচেম্বারের আনু, কায়েমপুরের সুমন, লামাপাড়ার রবি, সানাল, পঞ্চবটির বেকারি সুমন, বেকারি সাইদ ও রাজ, নয়ামাটির হানিফ, মিশনপাড়ার বাগান দুলাল, জামলাতলার সামসুল মিয়া, পাইকপাড়ার শিপলু, দাপা আদর্শ স্কুল এলাকার সেন্টু, কাঠেরপুল এলাকার জুয়েল, লুঙ্গি দুলাল, পাগলা এলাকার সাইফুল, গোদনাইলের রিংকু আক্তার ও রুমা আক্তার, তল্লার রনি, কাশিপুরের মহিউদ্দিন, ইসদাইরের কাইল্লা সোহেল, সস্তাপুরের দরবেশ মোজাম্মেল এবং পূর্ব নয়ামাটি ইসলামনগরের আশোক আলী ও জনি। নারায়ণগঞ্জ গ্যাস অফিসের ডিজিএম (উপমহাব্যবস্থাপক) প্রকৌশলী মামুনার রশীদ বলেন, যাদের বাসায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই। অভিযান অব্যাহত আছে। আমাদের সঙ্গে কোনো গ্যাস চোর বা দালালের কোনো সম্পর্ক নেই।

সূত্র: যুগান্তর