
ফাইল ছবি
বন্দরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের বিরোধের জের ধরে জোড়া খুনের পর পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে ২২ নং ওয়ার্ডের হাফেজিবাগ এলাকা। সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ দিকে এ ঘটনায় বন্দর থানায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা হয়েছে।
নিহত আবদুল কুদ্দুসের(৬৫) মেয়ে রোখসানা আক্তার বাদী হয়ে একটি এবং বন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মেহেদী হাসান হত্যার ঘটনায় তার ভাই খালেদ সাইফুল্লাহ বাদী হয়ে অপর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, রাজমিন্ত্রী আব্দুল কুদ্দুস হত্যা মামলায় সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারকে প্রধান আসামী করে বাবু ওরফে জুয়াড়ি বাবুসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের মেয়ে রোখসানা আক্তার। মেহেদী হাসান হত্যার ঘটনায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয় ৬ জনকে।
এদিকে ঘটনার তিনদিন পর মঙ্গলবার হাফেজিবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। পুরুষ শুন্য পুরো এলাকা। নারী ও শিশুদের মাঝে বিরাজ করছে আতংক।
নিহত কুদ্দুসের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী পারভীন আক্তার জানান, তার স্বামী রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। তিনি নিরাপরাধ, কোন ঝুট ঝামেলায় নাই। অথচ তাকে কুপিয়ে হত্যা করে বাবু-মেহেদীর লোকেরা। তিনি স্বামীর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি জানান।
নিহত মেহেদী হাসানের বাড়িতে কথা হয় তার ভাই খালেদ সাইফুল্লাহ সঙ্গে। তিনি জানান, তার ভাই বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তার ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে রনি-জাফরের লোকজন। তিনি তার ভাইয়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ,অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল এবং নানা বিষয় নিয়ে ৫ আগষ্টের পর থেকে ওই এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপ রনি-জাফর ও বাবু-মেহেদী গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধ আরও চরম আকার ধারণ করে। গত শুক্রবার রাতে তাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়।
গত শনিবার রাত ৯ টার দিকে বন্দর বাসস্ট্যান্ডে রনি জাফর গ্রুপের পারভেজের বাবা রাজমিস্ত্রী আব্দুল কুদ্দুসকে(৬৫) কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। কুদ্দুস হত্যাকান্ডের আড়াই ঘন্টার মধ্যে রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেহেদী হাসানকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ।