শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

মাদক ইভটিজিং সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে মানুষের সাথে মিলে কাজ করবে পুলিশ জনপ্রতিনিধি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৭:৩৭, ২৪ মার্চ ২০২৪

মাদক ইভটিজিং সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে মানুষের সাথে মিলে কাজ করবে পুলিশ জনপ্রতিনিধি

উঠান বৈঠক ও বিট পুলিশিং সভা

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো: সোহান সরকার বলেছেন, আমরা আপনাদের বন্ধু হতে চাই। আমরা জনতার পুলিশ। আমরাও আপনাদের মত সাধারণ মানুষ, আমারও পরিবার আছে। আবার আপনাদের পরিবারের অনেকে পুলিশ আছে। আমরা সবাই মিলে পুলিশ পরিবার। আপনারা আপনাদের সমস্যার কথা বলেছেন। এখানে ইভটিজিং, কিশোর গ্যাং ও মাদকের সমস্যা রয়েছে। আপনারা খুব শিঘ্রই এদের তালিকা করবেন। এটা আপডেটেড হতে হবে। দায়সারা তালিকা যেন না হয়, আপডেট তালিকা করতে হবে।

রোববার (২৪ মার্চ) বন্দর থানার উদ্যোগে আয়োজিত উঠান বৈঠক ও বিট পুলিশিং সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।  

তিনি বলেন, প্রকাশ্যে অনেকে হয়ত বলতে চান না। ডিউটি অফিসারদের নাম্বার আছে। আপনারা প্রয়োজনে মেবাইলে এসএমএস দিয়ে অপরাধীদের কথা জানাবেন৷ আপনাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে। বর্তমানে যারা সক্রিয় তাদের নাম আমরা জানতে চাই। প্রথমে আমাদের তথ্য দরকার। তারপর আমরা এ্যাকশনে যাবো।

আমরা চাইলে সবকিছু পারি এটা সত্য নয়। আমাদেরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের জনবলের ঘাটতি আছে। আমাদের পেট্রোলিং করতে হয় আবার তদন্তও করতে হয়। আপনারা আমাদের স্পটগুলো জানাবেন। কোন কোন স্পটে ওরা এসকল কাজগুলো করে।

ইভটিজাররা কিন্তু অন্য জায়গা থেকে আসেনা। তারাও আপনাদের এলাকার সন্তান। আমরা সবাই সচেতন হলে সামাজিক বন্ডিং তৈরি করতে পারলে এগুলো থাকবে না। আগে ইভটিজিং ছিল না। কারণ সবাই সবাইকে চিনত। আমরা মুরুব্বিদের ভয় পেতাম। আমরা যা ইচ্ছে তা করতাম না। সামাজিক সুরক্ষাও প্রয়োজন। ১৬ বছরের একটা ছেলেকে মামলা দেয়ার কথা আসলে তার ভবিষ্যত নিয়েও ভাবতে হয়। তাই সামাজিক ও আইনগত দুভাবে এগুলে আমরা অবশ্যই এটা করতে পারবো।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের সাথে আলাপ করে চেষ্টা করবো। দিনের বেলা সিমেন্টের গাড়িগুলো যেন না চলে। নারায়ণগঞ্জের আরেকটা সমস্যা হল এখানে অনেক অটোরিকশা চালক খুন হয়। আপনারা সচেতন হয়ে চলবেন। রাতের বেলা যাত্রীদের কেউ দূরে যেতে চাইলে মোবাইলে কল দিয়ে পাঁচ সেকেন্ড রেখে কেটে দিন। তাহলে এটা ট্রেস করা যাবে। তাহলে সে যত খারাপই হোক এগুলো করতে সাহস পাবে না।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করা বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, এখানে কোন মাদক ব্যাবসায়ীদের আবাসস্থল হবে না। এ ব্যাপারে আপনারা কী একমত। যদি একমত হন আজ থেকে আমাকে অঙ্গিকার করুন এ ওয়ার্ডে কোন মাদক ব্যাবসায়ী থাকবে না। হয় এখানে মাদক ব্যাবসায়ী থাকবে নয়তো আমরা থাকবো। এখানে ভদ্রলোকের বাস, এখানে মাদক ব্যাবসায়ী থাকবে না৷ মাদক ব্যাবসায়ী দেখলে জানাবেন, পাঁচ মিনিটে পুলিশ উপস্থিত হবে।

তিনি বলেন, এখানে দুটো থেকে তিনটি মেয়ে যদি চলে যায় এর দায়ভার কে নেবে। থানা নেবে, মায়ের কী দায়িত্ব না মেয়ের দেখাশোনা করা৷ মা থাকে এক ঘরে তো মেয়ে আরেক ঘরে। আমরা যারা মাদক বিরোধী আন্দোলন করতে চাই এটা মুখে বললে হবে না। আসুন আমরা একসাথে নামি। কোন তদবির চলবে না।

তিনি আরো বলেন, রাস্তায় দোকান আমি বসাই না, আপনারাই বসান। যে দোকান বসায় তারও বিবেক আছে যে রাস্তা দিয়ে যায় তারও বিবেক আছে। আপনি কী কখনও বলেছেন তুমি একটু সাইডে চেপে বসতে পারো বা যে দোকান বসায় সে কী ভাবে না যে রাস্তাটা একটু ছেড়ে দোকান বসাই। আমাদের বলবেন অনিয়ম দেখলে আমরা অবশ্যই আপনাদের সাথে যাবো।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা বলেছেন, ধর্মীয়ভাবে এ জায়গাটা একটা হার্ট। এখানে হিন্দু ধর্মের মন্দির আছে। শ্মশানও এই ২৩ নং ওয়ার্ডে। আমাদের ওয়ার্ডের পরিবেশ এখন ভাল। একসময় এখানে মাদকের হাব ছিল। এখনও এখানে মাদকের উপদ্রব রয়েছে। আমার কাছে প্রত্যেকের লিস্ট আছে। আপনারা যদি শুধু বলার জন্য না বলে সত্যি চান তাহলে ২৩ নং ওয়ার্ডে মাদকের সমস্যা সমাধান সম্ভব।

তিনি বলেন, আকিজকে আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মেয়র মহোদয়ের মাধ্যমে চিঠি দিয়েছিলাম। আমাদের এখানকার অনেকেই তাদের বেনিফিশিয়ারি। একমাত্র আমিই তাদের বিরুদ্ধে কথা বলছি। আমি আবেদন করেছিলাম তাদের লাইসেন্স স্থগিত করার জন্য। কিন্তু সেটা হয়নি। আগে আমাদের এলাকায় অনেক ফসল হত। এখন কিছুই নেই।

মাদকের সাথে কিশোর গ্যাংয়ের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের মত যারা নেতা আছে আমরাই কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করি। এটা আইনের আওতায় এনে নিয়ন্ত্রণ করবেন। আমাদের এলাকায় অবৈধ গ্যাসের সংযোগসহ বিভিন্ন সমস্যা আছে। এ ওয়ার্ডে বেশিরভাগ মানুষই শান্তিপ্রিয়। এখানে ওয়াকওয়ে হওয়ায় অন্যান্য এলাকা থেকে ছেলেরা হেটে এখানে মাদক বিক্রি করে। ইভটিজিংয়ের ভয়াবহ অবস্থা। আমাদের সন্তানরাই ভয় পায়। স্কুল ছুটির পর এখানে একটি গাড়ি থাকলে এ সমস্যা হবে না। এখানে কোন বিট অফিস নেই। এটা থাকলে আমাদের এ সমস্যাগুলো হত না।

তিনি আরো বলেন, আমরা রুট লেভেলে কাজ করি। আমাদের সাথে অনেকেরই পরিচয় হয়। খারাপ লোকদের সাথে যেন আমরা না চলি। মাদকের জন্য প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিকে দোষ দিবেন না। পরিবার শক্ত না হলে এটা হবে না। তালিকা চাইলে কালকের মধ্যে তালিকা দেব। আমার পক্ষ থেকে কোন তদবির যাবে না।