শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

সোনারগাঁয়ে মামলায় জামিন নিয়ে বাড়িতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার দুইজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৭:০০, ২৭ মার্চ ২০২৪

সোনারগাঁয়ে মামলায় জামিন নিয়ে বাড়িতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার দুইজন

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা এলাকায় হত্যা মামলার জামিন পেয়ে বাড়িতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন দুই ব্যক্তি।

বুধবার (২৭ মার্চ) এ ঘটনায় আহত মোঃ আলম সরকার বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে দুধঘাটা পূর্ব পাড়া মসজিদের সামনে এ হামলার শিকার হয়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

জানা যায়, পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচনে গত ৯ মার্চ শনিবার সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ইউপি সদস্য পদে দুধঘাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোরগ প্রতীকে আব্দুল আজিজ সরকার ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। ভোট গ্রহন শেষে আজিজ সরকার মোরগ প্রতীকে ৯২৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এসময় ফলাফল জানার পর ওই কেন্দ্রের প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে পুনরায় ভোট গননার অনুরোধ করেন। পুনরায় ভোট গননা করে রাজুর পক্ষে এক ভোট যুক্ত হয়। এ নিয়ে রাজুর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। রাজু প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তাকে তৃতীয় দফায় ভোট গননা করতে দাবি করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে রাজু কৌশলে কেন্দ্রের বাহিরে চলে যান। 

এ বিষয়টি তার কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা লোকজনকে উপজেলায় আসতে বাধা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে পুলিশ ও রাজু সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এসময় পুলিশের গুলিতে কায়সার আহম্মেদ রাজুর সমর্থক দুধঘাটা গ্রামের আমির আলী ভূঁইয়ার ছেলে হৃদয় ভূঁইয়া ও কামাল ভূঁইয়ার ছেলে ওমর ফারুক (২৭) গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর হৃদয় ভূঁইয়া নিহত হয়। এছাড়াও আপন, সাখোয়াত, মফিজুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, রাশেদ ও রিপনসহ ১২জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গিয়ে সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সাইফুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক(এএসআই) খবিরউদ্দিন, কনস্টেবল, মঞ্জু মিয়া, জুয়েল রানা, আব্দুস সালাম, কবির হোসেন, নূর মোহাম্মদ, আল আমিন আহত হন। পুলিশ সদস্যদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় নিহতের ভাই মো. ইকবাল হোসেন বাদি হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ দুই শতাধিক আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর থেকে সকল আসামি পলাতক থাকে। গত ১৯ মার্চ হাইকোর্ট থেকে প্রধান আসামি আজিজ সরকার ছাড়া সকলেই জামিন পায়। 

জামিন পাওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বাড়িতে যাওয়ার পর হত্যা মামলার আসামি ইকবাল ভূইয়ার নেতৃত্বে রাজু, ফারুক,  মইনউদ্দিন জহির ভূঁইয়াসহ ১০-১৫জনের একটি দল তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আব্দুল হাফেজ ভূঁইয়া (৬৫) ও আলম সরকার(৫৪) আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, আমার ভাইকে তারা হত্যা করেছে। তাদের ওপর হামলা তো ছোট বিষয়। আমার ভাইকে ফিরিয়ে আনা কি সম্ভব।
সোনারগাঁ থানার ওসি এস এম কামরুজ্জামান পিপিএম বলেন, হামলার ঘটনায় অভিযোগ গ্রহন করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসামীদের হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন। তাদের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।