অন্ধ আজগর আলী
অবশেষে আলোকিত হলো অন্ধ আজগর আলীর ঘর। তিনি বৈদ্যুতিক সংযোগ পেয়েছেন। তবুও তার আক্ষেপ রয়েই গেল। তিনি একটি সরকারি ঘর পাননি। অন্যের ঘরে আশ্রিতা হয়েই তাকে থাকতে হবে। ৬৮ বছরের দৃষ্টি প্রতিবন্ধি আজগর আলীর আক্ষেপ ‘আর কতদিনই বাঁচমু। নিজের একটি ঘর পাইলাম না। শেখের বেটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন। তানি যেনো আমাকে একটা ঘর দেন। মাটির কব্বরে শোয়ার আগে যেনো নিজের ঘরে ঘুমাইতে পারি।’
বিভিন্ন পত্রিকায় অন্ধ আজগর আলীর সংবাদটি প্রকাশের পর আড়াইহাজারের গোপালদী পল্লী বিদ্যুতের টনক নড়ে। শুক্রবার (১৭ জুন) গোপালদী পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মোহাম্মদ ছারওয়ার জাহান নিজে উপস্থিত থেকে আজগর আলীর ঘরে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেন। এ সময় গণ্যমান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক ইত্তেফাক এর আড়াইহাজার সংবাদদাতা মাসুম বিল্লাহ, গোপালদী পল্লী বিদ্যুতের ইসি আলাল উদ্দিন মিয়া, ওয়্যারিং পরিদর্শক বিশ্বনাথ রায়, এল,এম (গ্রেড-১) শাহিনুর রহমান ও এল,সি,এল-১ প্রদীপ হালদার ও পল্লী চিকিৎসক নজরুল ইসলাম।
জানাগেছে, আজগর আলী (৬৮) একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। স্বাধীনতার আগে পরে তার দু’টি চোখ অসুখে নষ্ট হয়ে যায়। আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী পৌরসভার দাইরাদী গ্রামের বাসিন্দা অন্ধ আজগর আলীকে সবাই ঝালমুড়ি বিক্রেতা হিসেবেই চিনে। ভিক্ষা না করে ঝালমুড়ি বিক্রি করতো বলে আশপাশের দশ গ্রামের মানুষ তাকে সমীহ করতো।
প্রতিবন্ধি হয়েও জীবনে কারো কাছে হাত পাতেননি। ভিক্ষা না করে কাজ করেছেন। ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতেন। দীর্ঘ ৫০ বছর স্ত্রী খুরশিদা বেগমের কাধে হাত রেখে হাটে বাজারে ঘুরে ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করে অভাবের সংসারের চাকা ঘুরিয়েছেন। রোদ বৃষ্টি ঝড়ঝঞ্জা মাথায় নিয়েই এক সময় ঝালমুড়ি বিক্রি করতেন।
জীবন যুদ্ধে কখনো হার মানেনি অন্ধ আজগর আলী। আজ জীবন সায়াহ্নে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঝালমুড়ি বিক্রি করতে পারেন না। এক বছর ধরে বিছানায় ছটফট করে মরেন। মেয়ের কাছে ঠাঁই মিলেছে। দু’বেলা খেতে পান। মেয়ে রতœা বৃদ্ধ পিতামাতাকে ঠাঁই দিয়েছেন স্বামীর বাড়িতে। অনেক গঞ্জনা সহ্য করে পুরনো টিন দিয়ে কোনমতে একটি ছোট একচালা টিনের বানিয়ে দিয়েছেন। বুড়োবুড়ি কোনমতে একটি চৌকি পেতে সেখানে রাত কাটান। মেয়ের আশ্রয়েই দিন কাটাচ্ছেন আজগর আলী। সরেজমিনে দেখা গেছে, লাইন পেয়ে আনন্দে কেদেঁ ফেলেন আজগর আলীর স্ত্রী খুরশিদা। তাছাড়া ও বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দেশের মানুষের জন্য খিচুরি রান্না করে গরীব মানুষকে খাওয়াচ্ছে। তিনি ধন্যবাদ জানান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।