
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জে পাঁচ আগষ্টের পর নানান ঘটনায় গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা। নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষেও জড়িয়েছে যুবদলের নেতাকর্মীরা। এসকল সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিপ্লব ও সংহতি দিবসকে কেন্দ্র করে র্যালীর আয়োজন করে বিএনপি। র্যালীতে সামনে দাড়ানোকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় যুবদলের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
র্যালী শুরুর সময় মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদের নেতৃত্বে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা মিশনপাড়া এলাকায় আসে। এসময় বিএনপি নেতা শাহেন শাহর অনুসারীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রথম দফায় মারামারির ঘটনা ঘটে।
পরবর্তীতে র্যালিটি নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে পৌছালে যুবদলের কিছু সমর্থক যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফকে ধ্বাক্কা দেয়। এসময় জোসেফের অনুসারীরা তাদের মারধর করে। এঘটনায় মাসুম নামের এক যুবদল কর্মী গুরুতর আহত হন।
২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জের টেকনোয়াদ্দা এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধে জড়ায় স্থানীয়রা। এসময় দুই গ্রুপের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যাক্তি পিস্তল নিয়ে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এসময় রাসেল আহম্মেদ (৩৩) নামের এক স্থানীয় যুবদলকর্মী গুলিবিদ্ধ হন।
২০২৫ সালের ১৮ মার্চ রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়ান। ১৮ মার্চ রাতে চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদল নেতাকর্মীদের মাঝে বাকবিতান্ডা হয়। এসময় থানা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শামীমের অফিসে স্বেচ্ছাসেবক দলের রবিনকে তুলে নিয়ে আটকে রাখে। পরবর্তীতে রবিনকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী হাছিবুর, রাসেল, বাশারসহ অন্তত দশজন আহত হন। পরবর্তীতে ১৯ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাছিবুরের মৃত্যু হয়।
২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর আড়াইহাজারে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির অভিযোগে শহিদুল্লাহ (২৮) নামের এক যুবদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ভাংচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
২০২৫ সালের ১৭ জুন রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়ায়।
জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবদল নেতা আরিফ মিয়ার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল নেতা রকি মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে নিরোধ চলে আসছিল। একপর্যায়ে গোলাকান্দাইল নতুন বাজার এলাকার দক্ষিণপাড়া ঈদগাহ মাঠের সামনে আরিফের সঙ্গে রকি মিয়ার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে বাবলু মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম, তাইবুদ্দিনের ছেলে সুমন মিয়া, রফিকুল ইসলামের ছেলে আরিফ মিয়া, হারুন মিয়ার ছেলে পিয়াল মিয়া, ইমন মিয়া ও সিফাত মিয়াকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
২০২৫ সালের ১১ মার্চ আড়াইহাজারে যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আড়াইহাজারের পাঁচগাও মোল্লাপাড়া এলাকায় ছাত্রদল নেতা মোহন মিয়া ও দেওয়ানপাড়া এলাকায় যুবদল নেতা জুম্মন খান নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। পাঁচগাও গোলাপবাগ বাজারটি বড় একটি ব্যবসাকেন্দ্র হওয়ায় বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয় নেতার অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ হয়। সেই সঙ্গে এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও জুয়ার আসর থেকেও অর্থনৈতিক লেনদেন হয়। এ এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য ও আধিপত্য নিয়ে এর আগে বেশ কয়েকবার ছাত্রদল নেতা মোহন মিয়া ও যুবদল নেতা জুম্মন খানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সবশেষ ১১ মার্চ রাতে দুই পক্ষ ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
এসময় সংঘর্ষে মোহন মিয়া (২০), তারা মিয়া (৫৫), খাইরুল ইসলাম (৩৫), জুম্মন খান (৩৫), মুন্না মিয়া (২৬), জামান মিয়া (৪০), ফালান মিয়া (৩৫), ইয়াকুব মিয়া (৩৭), ইয়াছিন ভূঁইয়া (৪০), আবুল কাসেম ভূঁইয়া (৪২), সোলেমান মিয়াসহ (৩৮), পারভেজ মিয়াসহ (২৪) অন্তত ১৫ জন আহত হন। এদের মধ্যে আবুল কাসেম, খাইরুল ইসলাম ও মোহন মিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।