বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

|

বৈশাখ ১৬ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

নারায়ণগঞ্জে মার্কেট ও ফুটপাতে ঈদের কেনাকাটার ধুম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৬:১১, ১৮ মার্চ ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে মার্কেট ও ফুটপাতে ঈদের কেনাকাটার ধুম

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জে ঈদ উল ফিতরকে কেন্দ্র করে মার্কেটগুলোতে জমে উঠেছে বেচাবিক্রি। জেলার বড় বড় মার্কেটগুলো থেকে শুরু করে ফুটপাতে হকারদের দোকান পর্যন্ত সর্বত্রই ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের ভীড়। 

রমজানের সময় হওয়ায় দিনে মার্কেটগুলো ফাঁকা থাকলেও বিকেল থেকে ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়তে থাকে মার্কেট ও ফুটপাতে। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ যত কাছে আসবে ক্রেতাদের এই ভীড় তত বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) শহরের আলমাস পয়েন্ট, কালীরবাজার ও চাষাঢ়া এলাকার বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে। 

এসময় ঘুরে দেখা যায়, নগরীর শপিংমল আর বিপণিবিতানগুলোতে বাড়তে শুরু করেছে ঈদ কেনাকাটা। দেশি ফ্যাশন হাউজগুলোতে ঈদকে কাপড় ও রঙের ব্যবহারে পোশাক তৈরি করা হয়েছে। এসকল মার্কেটে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। 

এছাড়াও শহরের আলমাস পয়েন্টসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় শো-রুমগুলোতেও ক্রেতাসমাগম বেড়েছে বলে জানা গেছে। ঈদের কেনাকাটা করতে শহর ও উপজেলাগুলোর ক্রেতারা জড়ো হচ্ছেন পছন্দের পোশাক কিনতে।

কালীরবাজারের ফ্রেন্ডস মার্কেটের কাপড়ের দোকানের কর্মচারী মাহবুবুর রহমান সাকিব জানান, রমজানের শুরু থেকেই বিক্রিতে ঈদের আমেজ শুরু করেছে। বর্তমানে ঈদের বেচাকেনা পুরো দমে চলছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরেই ভাল পরিমাণ ক্রেতা আসছেন। ঈদের আগে আগে এ ভীড় আরও বাড়বে।

এদিকে শহরের ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ব্যাপক ভীড় দেখা গেছে। ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে এসকল দোকানে শার্ট, প্যান্ট, ১০০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে নানান রকমের পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন রকমের পোষাক বিক্রি হচ্ছে শহরের ফুটপাত ও হকার্স মার্কেটে। নিন্ম আয়ের মানুষেরা এসকল দোকানে ঈদের কেনাকাটার জন্য ভীড় জমাচ্ছেন।

শহরের হকার্স মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা আফজাল হোসেন জানান, ঈদের সময় মার্কেটে অনেক ভীড় থাকে। সেসময় দামও বেশি থাকে। তাই আগেই কেনাকাটা করছি। ছেলে-মেয়ের জন্য জামাকাপড় কিনেছি।

নূর মসজিদের সামনের অস্থায়ী পাঞ্জাবি ও পায়জামার দোকানে কেনাকাটা করতে আসা আফ্রিদি জানান, শোরুম ও নামি-দামি দোকানে পাঞ্জাবির অতিরিক্ত মূল্য। তাই এখান থেকেই নিজের জন্য ও অন্যদের উপহার দেয়ার জন্য পাঞ্জাবি কিনছি। 

এছাড়াও জেলার পাইকারি কাপড় ও পোষাকের মার্কেটগুলোতেও পুরোদমে বেচাকেনা চলছে। শহরের দেওভোগ মার্কেটে ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। এসকল মার্কেটে ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০০ টাকা দামের ড্রেস পর্যন্ত রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের খুচরা ব্যাবসায়ীদের পাশাপাশি আশেপাশের জেলা থেকেও খুচরা ব্যাবসায়ীরা এখান থেকে পোষাক কিনে নিয়ে যান।

দেওভোগ মার্কেটের ব্যাবসায়ী ফাহিম সাহারিয়ার জানান, দেওভোগ মার্কেট নারায়ণগঞ্জ শহরে তৈরি পোষাকের সবচেয়ে বড় মার্কেট। ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে বেশিরভাগ খুচরা ব্যাবসায়ী আমাদের কাছ থেকে পন্য ক্রয় করে থাকেন। তাই আমাদের বেচাকেনাটা রমজান শুরুর আরও আগেই শুরু হয়ে যায়। এবারও বাজারে ভাল ক্রেতা আছে। নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ থেকে আমাদের এখানে ব্যাবসায়ীরা পোষাক কিনতে আসে।

শহরের বাইরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাউছিয়া মার্কেটে ঘুরেও ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের ব্যাপক ভীড় দেখা গেছে। পাইকারি দরে শাড়ি, পাঞ্জাবিসহ নানা রকমের কাপড় কিনতে এখানে ভীড় জমিয়েছেন খুচরা ব্যাবসায়ী ও ক্রেতারা। 

নারায়ণগঞ্জ থেকে কাপড় কিনতে আসা ইবনুল হাসান জানান, আমাদের একটি ছোট ফ্যাক্টরি আছে। ঈদে আমরা শ্রমিকদের কাপড় উপহার দেই। এখানে কাপড়ের দাম অনেক কম। তাই এখান থেকে একেবারে সকলের জন্য কাপড় কিনে নেই প্রতিবছর।

গাউছিয়া মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক জানান, গতবছরের তুলনায় আমরা এবার ব্যাবসায়ের ব্যাপারে অনেক আশাবাদী। এটি এশিয়ার সর্ববৃহৎ একক মালিকানাধীন মার্কেট। অতীতে নিরাপত্তা নিয়ে ক্রেতারা শঙ্কিত থাকলেও এ বছর আমরা নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাহায্য পাচ্ছি। আমরা আশা করছি এবছর বেশ ভাল ব্যাবসা হবে।