
ফাইল ছবি
অবশেষে পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের রূপগঞ্জের আনন্দ হাউজিং এ থাকা প্রায় ২৪ কাঠার ডুপ্লেক্স বাড়িটিতে ২য় দফায় তল্লাশি করে পুরোপুরি দখলে নিলো নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
১০ জুলাই বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বাড়ির ভেতরে তল্লাশি চালিয়ে বাড়িটি পুরোপুরি দখলে নিয়ে নেয়। তল্লাশির তালিকায় মিললো চায়ের কাপ,পেয়ালা, টিভি, ওয়ালটন কোম্পানির ফ্রিজ, ডাইনিং টেবিলসহ ৩টি খাট।
এর আগে, দুদুকের মামলায় মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে (৬ জুলাই) শনিবার দুপুরে বাড়িটি জব্দ করেন তারা। তবে দরজায় লাগানো ডিজিটাল লক থাকায় বেনজিরের প্রযুক্তির কাছে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। পরে ১০ জুলাই বুধবার দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ৫ ঘন্টার তল্লাশিতে পাওয়া শুধুমাত্র কয়েকটি চায়ের কাপ,পেয়ালা, টিভি, ফ্রিজ, ডাইনিং টেবিলসহ ৩টি খাট।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শফিকুল আলম, নারায়ণগঞ্জ জেলা দুদকের উপ পরিচালক মাইনুল হাসান রওশানী, নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিমন সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা তল্লাশিতে অংশ নেন।
বিকাল ৫ টায় সাংবাদিকদের সামনে প্রেসব্রিফিং করে দুদক কর্মকর্তা মাইনুল হাসান রওশানী বলেন, আমরা আদালতের নির্দেশ পালন করেছি মাত্র। এখানে ভেতরে থাকা মালামালের তালিকা করতে সময় লেগেছে। যা আদালতের কাছে আমরা জমা দেব। এখানে সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত আসবাব ও তৈজস ছাড়া কিছু পাইনি।
এদিকে, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বাড়িতে দ্বিতীয় দফায় তল্লাশিকে কেন্দ্র করে অভিযানের বিষয়টি জানতে আশপাশের এলাকার লোকজন ভিড় জমান।
উল্লেখ্য যে, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ দেশের নানাস্থানে অবৈধ স্থাপনা গড়েছেন। বাদ যায়নি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের দক্ষিণবাগ চোরাবো মোড়ের ডুপ্লেক্স বাড়িও। আনন্দ হাউজিং নামীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের গড়া আবাসন কোম্পানিতে ২৪ কাঠা জমিতে তার মেয়ে মির্জা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজিরের নামে গড়ে তুলেছেন আলিসান বাড়ি। যেখানে সাধারণের প্রবেশ ছিলো নিষেধাজ্ঞা। বেনজির যেদিন আসতেন এ বাড়িতে আর যতক্ষণ অবস্থান করতেন বন্ধ রাখা হতো এখানকার রাস্তা। পুলিশের পাহাড়ায় এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরী করতেন তিনি।
সূত্র জানায়, আট বছর আগে এলাকার প্রয়াত প্রেমানন্দ সরকারের সন্তানদের কাছ থেকে ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ৫৫ শতাংশ জায়গা কেনেন তিনি। পরে বছর চারেক আগে এই জমিতে ওই বাড়ি করেন তিনি। তাঁর ওই বাড়ি ঘিরে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা গল্প, রহস্য। অভিযোগ রয়েছে একটি জাতীয় দৈনিকে বেনজিরের আলাদিনের চেরাগ নামে সংবাদ প্রকাশের পর বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক আবদুল্লাহ ভেতরে থাকা মালামাল সরিয়ে ফেলেছেন।
প্রায় সময়ই পুলিশের সাইরেন বাজিয়ে গাড়ির বহর নিয়ে বাড়িতে আসতেন বেনজীর। এতে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরী হতো।