রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

|

পৌষ ১২ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

ধসে পড়ার শঙ্কায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০০:২৩, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ধসে পড়ার শঙ্কায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বালু নদের ওপর নির্মিত চনপাড়া-ডেমরা সেতু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ সেতুর উভয় পাশে ‘সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ’ সাইনবোর্ড দিলেও ঝুঁকি নিয়েই যানবাহন চলাচল করছে। যেকোনো যানবাহন পারাপারকালে সেতুটি কেঁপে ওঠে। যেকোনো সময় সেতুটি ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা এলাকাবাসীর। 

জানা যায়, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও গাজীপুরের কালীগঞ্জের যোগাযোগের সুবিধার্থে ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এলজিইডির অর্থায়নে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে বালু নদের ওপর ডেমরা-রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ সড়কের চনপাড়া এলাকায় ১১০ ফুট দীর্ঘ এবং ১২ ফুট প্রস্থ সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতু থেকে পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। পিলার ও রেলিংয়ের রড বেরিয়েছে কঙ্কালের মতো। সেতুর পিলার ঘেঁষে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচলে কখনও বাল্কহেডের ধাক্কায় পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চলমান ট্রলারের ধাক্কায় সেতুর চারটি পিলার, ভিম ও রেলিংয়ের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়ছে। সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও এখনও ভারী যানবাহন চলাচল করছে। গাড়ি পারাপারের সময় সেতু কেঁপে ওঠে। সেতুটি যেন মারণফাঁদে পরিণত হয়েছে। 

স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, রাজধানীর সঙ্গে রূপগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার যোগাযোগের জন্য সহজ পথ হিসেবে এসে দুটি ব্যবহার করে থাকেন এখানকার মানুষ। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু হলেও বাধ্য হয়ে একমাত্র চলাচলের পথ হিসেবে এটি ব্যবহার করতে হয় এলাকাবাসীকে। শুধু তাই নয়, জনবহুল এলাকা হওয়ায় সার্বক্ষণিক সেতুটিতে যানবাহনের চাপ অত্যন্ত বেশি। প্রশস্ত কম হাওয়ায় যানবাহন পাশাপশি চলতে হিমশিম খেতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি সংস্কার অথবা নতুন করে নির্মাণের দাবি জানালেও এখনও কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। যেকোনো সময় সেতুটি ধসে বড় দুর্ঘটনা বা হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। 

কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ, যেকোনো সময় ধসে পড়ে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুটি সংস্কার অথবা নতুন নির্মাণে উপজেলা প্রশাসনকে বারবার তাগিদ দিচ্ছি।

রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন, ডেমরা সেতুটি সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে এলজিইডি সদর দপ্তরে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা এখনও অনুমোদন পাইনি। সেতুটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ হওয়ায় নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্পে ডিপি প্রণয়ের লক্ষ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। 

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বালু নদের চনপাড়া-ডেমরা সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রূপগঞ্জসহ নারায়ণগঞ্জের অধিকাংশ মানুষ এবং নরসিংদী মানুষ এই সেতুটি ব্যবহার করে ঢাকায় প্রবেশ করেন। এখনে নতুন সেতু নির্মাণে মন্ত্রণালয়ে তিনটি পত্র দেওয়া হয়েছে। এর আগে সেতু নির্মাণের অনুমোদন করা হলেও পর্যাপ্ত জমি না পাওয়ায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।