যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ননএসি বাসের ভাড়া ৫০ টাকা করতে যা যা করা প্রয়োজন সব ধরনের কর্মসূচী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের। বিভিন্ন সময়ে বর্ধিত বাস ভাড়া, পরিবহন নৈরাজ্য নিয়ে আন্দোলন করা ফোরামের নেতাদের দাবী, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাস ভাড়া কোনভাবেই ৫০ টাকার বেশী হতে পারে না।
বুধবার (১০ আগস্ট) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নে ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের আহবায়ক রফিউর রাব্বি।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকৃত শীতল এসি পরিবহনের বাসে ৬৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা, বিআরটিসি ডাবল ডেকারের বাসে ৪০ টাকা থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৫০ টাকা, হিমাচল পরিবহনের বাসে ৪৫ টাকা থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ টাকা নেয়া হচ্ছে। সেই সাথে বন্ধন ও উৎসব পরিবহনের বাসে ৪৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৬০ টাকা করে নিচ্ছে। যেটা গত ৭ আগস্ট ৪৫ টাকা থেকে ২০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ টাকা করে নিচ্ছিল। সেই টাকা থেকে তারা ৫ টাকা কমিয়ে ৬০ টাকা করে নিচ্ছেন।
রফিউর রাব্বি বলেন, নারায়ণগঞ্জে বাস ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি দীর্ঘদিনের। এখানে পরিবহন মালেকরা গোষ্ঠী বিশেষের পক্ষ হয়ে সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো ভাড়া নির্ধারণ করে বছরের পর বছর নারায়ণগঞ্জের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় এখানে আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।
রাব্বি বলেন, বিআরটিএ নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলার অভ্যন্তরের ক্ষেত্রে বাস ও মিনিবাস ভাড়া নতুন করে নির্ধারণ করেছে প্রতি কিলোমিটার ২ টাকা ৪০ পয়সা। নারায়ণগঞ্জের ১নং রেলগেটের বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা যেতে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। আর ঢাকা থেকে এখন সানারপাড় হয়ে নারায়ণগঞ্জ আসতে দূরত্ব ১ কিলোমিটার বেড়ে হয়েছে ১৯ কিলোমিটার। গড়ে সাড়ে ১৮ কিলোমিটার। নতুন নির্ধারিত ভাড়া হিসেবে ৪৪ টাকা ৪০ পয়সা। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল ৫ টাকা যুক্ত করে সর্বমোট ভাড়া দাাঁড়ায় ৪৯ টাকা ৪০ পয়সা। তাই আমরা সর্বোচ্চ ৫০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি। সাথে সাথে সরকারের পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি বাসের ভাড়া সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা করার দাবি জানাচ্ছি।
পরিবহনের সঙ্গে রেল প্রসঙ্গে রাব্বি বলেন, পরিবহন সংকটের এই সময়ে হঠাৎ করেই নারায়ণগঞ্জে রেলের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সরকারী সংস্থা বিআরটিসি ও রেল কর্তৃপক্ষ জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে স্থানীয় পরিবহন মালিকদের সাথে আতাত করে সরকারী এ গণপরিবহনকে লোকসানে ফেলেছে। দ্রুত এ সংকটের সমাধান না হলে উদ্ভূত সকল পরিস্থিতির জন্য সরকার ও প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে।
ফোরামের সদস্য সচিব ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, দুলাল সাহা, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন প্রমুখ।
দুলাল সাহা বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা পরিবহনের মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন যদি চাঁদাবাজী না হয় তাহলে অনেক কমে আমরা ভাড়া নিতে পারবো। আগে যখন ভাড়া ২৮ টাকা করেছিল। তখনো বলেছিল চাঁদাবাজী বন্ধ হলে ২২ টাকা নিতে পারবে। যখন ৪৫ টাকা করা হয়েছে তখনও বলেছে চাঁদাবাজী বন্ধ হলে ৩৫ টাকা নেওয়া যাবে।