
সংবাদ সম্মেলন
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র পরিচয়ে নাজমুল হুদা নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। জাল দলিলের মাধ্যমে প্রতারনা করে আদালতে মামলা ও জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে মোটা অংকের টাকা দাবির অভিযোগ তোলা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের এ অভিযোগ তুলেন। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. আল মামুন নামের এক ব্যবসায়ী। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন তার ব্যবসায়ীক সহযোগী রুহুল হায়দার শামীম, মফিজুল ইসলাম মুকুল, শহিদুল ইসলাম পান্না।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ী আল মামুন বলেন, মোগরাপাড়া ইউনিয়নের আলাপদী এলাকার কৃষ্ণাদি মৌজায় তারা ৯ বন্ধু একত্রিত হয়ে ব্যবসায়ের জন্য ১২৬ শতাংশ জমি আম মোক্তার নামা দলিলের মাধ্যমে এম এ বাছেত ও তার স্ত্রী দৌলতুন নেছার কাছ থেকে ক্রয় করে ভোগ দখলে আছেন। পরবর্তীতে এম এ বাছেতের মৃত্যু হলে স্ত্রী, তার বড় ছেলে আরিফুল রহমান, দ্বিতীয় পুত্র নাজমুল হুদার কাছ থেকে অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটনীর মাধ্যমে দলিল করে নেন। ওই দলিলে নাজমুল হুদার শ্বশুর আনোয়ার হোসেন ও চাচা শ্বশুর বদিউর রহমান স্বাক্ষী হিসেবে দলিল সম্পাদন করেন।
তিনি আরো বলেন, তাদের কাছে জমি বিক্রি করার পরও সিনিয়র সহকারী জজ সোনারগাঁ আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করেন। ওই মামলায় অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটনীর মাধ্যমে দলিল বাতিল চাওয়া হয়। আদালতে মামলা থাকার পরও সহকারী কমিশনার ভূমি কার্যালয়ে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে নামজারীর আবেদন করেন। পরে দু’পক্ষের উপস্থিতিতে নামজারীর আবেদন বাতিল করে দেন। প্রতারণার মাধ্যমে নামজারী করতে না পারায় সে পুনরায় আদালতে ওই জমিতে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আবেদন করেন। আদালত উভয় পক্ষকে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে এনসিপির সোনারগাঁ উপজেলার সদস্য পরিচয়ে ওই জমিতে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেন। এতে করে আদালত অবমাননার সামিল বলে মনে করেন।
ব্যবসায়ী আল মামুনের দাবি, জমির এ বিরোধকে কেন্দ্র করে তাদের কাছ থেকে তার কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন নাজমুল হুদা। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এনসিপি দলকে ব্যবহার করে অপহরণ ও হত্যার হুমকি প্রদান করেন। জমি বিক্রির পরও জমি ফেরতের জন্য আদালতে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত নাজমুল হুদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বাবা এম এ বাছেতের মৃত্যুর পর তাকে মামুন গংরা অপহরণ করে সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে জোরপূর্বক জমি পাওয়ার অব এ্যাটর্নির মাধ্যমে লিখে নেন। এ ঘটনায় তিনি আল মামুন, সাব রেজিষ্ট্রার ও জেলা রেজিষ্ট্রারকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। তিনি এনসিপিকে ব্যবহার করেননি বলে দাবি করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সোনারগাঁ উপজেলা আহবায়ক শাকিল সাইফুল্লাহ বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে উভয় পক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আদালতের রায় জমিতে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়াও এনসিপির পরিচয়ে কেউ প্রতারণা করলে প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।