শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

|

কার্তিক ২৪ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ বাসীর জন্য অভিশাপ : রাশেদ খাঁন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ৭ অক্টোবর ২০২৪

শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ বাসীর জন্য অভিশাপ : রাশেদ খাঁন

ফাইল ছবি

রাশেদ খাঁন বলেন, শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ বাসীর জন্য একটি অভিশাপ। ওসমান পরিবার আজকে পালিয়ে গেছে। তারা নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। শামীম ওসমান ত্বকী হত্যার পেছনে জড়িত রয়েছে। তখন নারায়ণগঞ্জে যতগুলো খুনের ঘটনা ঘটেছে, এর মাষ্টারমাইন্ড ছিলো শামীম ওসমান। আমার প্রশ্ন কিভাবে সে পালিয়ে গেল? কিভাবে কারা তাকে সহযোগিতা করেছে? এই  শামীম ওসমানকে অনতিবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। এবং তার সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। আজকে ওসমান পরিবার যেভাবে লুটপাট করে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলো- তারা কি ভোগ করতে পেরেছে? সুতরাং তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে, যদি কেউ লুটপাট করতে চান, দুর্নীতি করতে চান, দখলদারিত্ব করতে চান, তাদের অবস্থা কিন্তু শামীম ওসমানের মত হবে।

সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকালে নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দক্ষিণপাড়া দশপাইপ এলাকাস্থ একটি রেষ্টুরেন্টে ‘রাষ্ট্র সংস্কারে তারুণ্যের ভাবনা শীর্ষক মতবিনিময় সভা এবং মহানগর কমিটি ঘোষণা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির  বক্তব্যে রাখেন।

নারায়ণগঞ্জে আপনারা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন কুখ্যাত শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে। শামীম ওসমান এর আগে বোরকা পড়ে পলিয়েছিলো। এবারও বোরকা পড়ে পালিয়েছে। উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন করেন-  তাহলে সে পুরুষ, না কি মহিলা? প্রতিউত্তরে নেতা-কর্মীরা মহিলা বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, শামীম ওসমান এতোদিন বলতো আমি বীর পুরুষ, খেলা হবে। কিন্তু খেলতে পারে নাই। খেলার আগেই আউট হয়ে গেছে। এই নারায়ণগঞ্জে যারা দুর্বৃত্ত ছিলো, যারা সন্ত্রাসী ছিলো, যারা লুটেরা ছিলো- তারা খেলার আগেই মাঠ ছেড়ে পালিয়েছে। আমরা যারা সংগ্রাম করেছি, দেশ এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করেছি, আমরা আসলেই মাঠে খেলেছি। সুতরাং এখন থেকে খেলা  হবে শ্লোগান শামীম ওসমানের শ্লোগান হতে পারে না। ও খেলতে  পারে না, ও কাপুরুষ। ও দু’বার বোরখা পড়ে পালিয়েছে। কিন্তু এ গণঅধিকার পরিষদ তাদের কোন পালানোর ইতিহাস নাই।

তিনি বলেন, আমরা ২০১৮ সাল থেকে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। ২০১৮ সালে আমরা কোটা সংস্কার আন্দোলন সফল করেছিলাম। আজকের এই গণঅভ্যূত্থানের বীজ, সেই বীজ কিন্তু আমরাই বপন করেছিলাম। সেই বীজ আজকে বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। আমরা ১৮ সাল থেকে ২৪ সাল পর্যন্ত একটানা লড়াই করেছি। এই লড়াই করতে গিয়ে আমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়েছে। এ গণঅভ্যুত্থানে আমাদের ১১ জন শহীদ হয়েছে। আমাদের অসংখ্য ভাই গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। এ ভাইদের রক্তের কারণেই আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। শুধু গণপরিষদ নয়, বিএনপির ৪২২ জন্য শহীদ হয়েছে। ছাত্র শিবিরের ১৫২ জন শহীদ হয়েছে। ছাত্রদলের প্রায় শতাধিক শহীদ হয়েছেন। তাদের নেতৃবৃন্দরা গুলিবিদ্ধ হয়েছে, আহত হয়েছে। এখন আমাদের সময় এসেছে সকলে একসাথে কাজ করার। সুতরাং এ বাংলদেশে ঐক্য এবং সংহতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই বাংলাদেশে হানাহানি, বিদ্বেষ, হিংসা, দুর্নীতি, ঘুষ এগুলো থাকতে পারে না।

অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী আরিফ ভূইয়াকে সভাপতি, রুহুল আমিন (রাহুল)-কে সাধারণ সম্পাদক ও রাকিব মাহমুদ কালামকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৪৪ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটি ষোঘণা করা হয়। পরবর্তীতে এর সদস্য সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন নব গঠিত মহানগর কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী আরিফ ভূঁইয়া।

দপ্তর সম্পাদক শাহিন হাওলাদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সমন্বয়ক শাকিল উজ্জামান, গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান মিল্কি, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নাহিদ প্রমুখ।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে জাতীয় সরকার গঠিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই সরকারে গণঅধিকার পরিষদ থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা দেখেছি ৭১ এর পরে যেভাবে ঐক্য এবং সংহতি সরকার গঠন করা দরকার ছিলো কিন্তু শেখ মুজিব পারে নাই। শেখ মুজিব তার আশপাশে যারা ছিলো, তিনি তাদের ভয় পেতেন। মনে করতেন এরা আমাকে ছাড়িয়ে যাবে। সুতরাং এদেরকে আমার আশপাশে রাখা যাবে না, এদেরকে মাইনাস করতে হবে। শেখ মুজিব তাজউদ্দিন আহমেদকে মাইনাস করেছিলেন। শেখ মুজিবের অবর্তমানে তাজউদ্দিন আহম্মেদ কিভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেই তাজউদ্দিন আহমেদকে মাইনাস করতে গিয়ে শেখ মুজিব নিজেই মাইনাস হয়ে গিয়েছিলেন। শেখ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগনকে বিএনপি-জামাত, গণঅধিকার পরিষদকে মাইনাস করতে গিয়ে আজকে আওয়ামীলীগকে মাইনাস করে দিয়েছে। মাইনাসের রাজনীতি আমরা আর করবো না। আমাদেরকে এখন প্লাসের রাজনীতি করতে হবে।

রাশেদ খাঁন আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদদের সরকার। এই সরকারকে আমরা বসিয়েছি। সুতরাং এই সরকারকে আমাদের নজরদারীতে রাখতে হবে। এই সরকার কি করে সেটি আমাদের দেখতে হবে। এই সরকার যদি ব্যর্থ হয় তাহলে, এ গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যাবে। সুতরাং এই সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এই সরকারকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। ডঃ ইউনুস শুধুমাত্র আমাদের জন্য গর্বের বিষয় না। সে পৃথিবীর জন্য গর্বের বিষয়। এরকম একজন মানুষ আমরা পেয়েছি। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, তার আশপাশে এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা তার সুনাম নষ্ট করছে। নিয়োগ বাণিজ্য করছে। আওয়ামীলীগের ডিসি নিয়োগ দিচ্ছে। আওয়ামীলীগের এসপি নিয়োগ দিচ্ছে। ডঃ ইউনুসের আশপাশের মানুষ আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে। 
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেছেন, পূজা উপলক্ষ্যে প্রতিমা ভাংচুর করা হয়, এগুলো ইন্ডিয়ান ‘র’ এর ষড়যন্ত্র। তারা আমার হিন্দু ভাইদের নামিয়ে দিয়েছে ৮ দফা দাবিতে। কেউ যদি রাজনীতির কারণে হয়রানির স্বীকার হয়, হিন্দুরা কি আওয়ামীলীগ করে নাই। এখন যদি কোন হিন্দু রাজনীতি করার কারণে হয়রানির স্বীকার হয়, সেই কি ঐ সংখ্যালঘুর কারণে হয়রানির স্বীকার হয়েছে? সেতো আওয়ামীলীগের হয়ে নির্যাতন-নিপীড়িন করেছে। সুতরাং আজকে যদি সে রাজনীতির কারণে, জনগনের উপর অত্যাচার করার কারণে গ্রেফতার হয়- তবে কেন আপনারা বলছেন, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে? আমি আমাদের হিন্দু ভাইদের বলবো- আমরা আপনাদের সাথে রয়েছি, পাশে রয়েছি। যতদিন পর্যন্ত দুর্গাপূজা শেষ না হয়, ততদিন আপনারা প্রত্যেকটা মন্দির পাহারা দিবেন। ইন্ডিয়ান ‘র’ ষড়যন্ত্র করবে, ভারত ষড়যন্ত্র করবে, প্রতিমা ভাংচুর করবে এবং আমাদের সম্মান নষ্ট করার চক্রান্ত করবে। এটি আমরা হতে দেব না। এ দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ একটি চক্রান্ত করার চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা চট করে বাংলাদেশে ফিরে আসতে চায়, আমরা শেখ হাসিনাকে চট করে বাংলাদেশে ফিরতে দেব না। আমরা শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে চাই, তবে সেটি বন্দীচুক্তি অনুযায়ী। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই ফিরিয়ে আনতে হবে। এবং তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সেনাবাহিনীর হাতে ৬২৬ জন আশ্রয় নিয়োছিলো, তারা কোথায়? সেই তালিকা কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না।  সেই তালিকা অনতিবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।