বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১০ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

বাণিজ্য মেলায় সেলফি তোলায় ব্যস্ত চায়ের রাজা রাজা মামা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২৩:০০, ১১ জানুয়ারি ২০২৩

বাণিজ্য মেলায় সেলফি তোলায় ব্যস্ত চায়ের রাজা রাজা মামা

রাজা মামার চা

বর্তমানে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলার অন্যন্য দোকানগুলোতে বেচা-বিক্রি কম হলেও রাজা মামার চায়ের দোকানে কিন্তু ক্রেতাদের কমতি নেই। শুরু থেকেই তার চায়ের দোকানে মানুষের ভিড় লেগেই আছে।

তার এই চায়ের দোকানে প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনি থেকে শুরু করে নানা পেশার মানুষ তার দোকানে ভিড় করছেন। দূরদুরান্ত থেকেই মেলায় আসছেন শুধু তার চা খেতে। তবে এই চা বিক্রেতার এখন চা বানানো থেকে সেলফি বা ছবি তোলাতেই বেশি ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। 

বুধবার (১১ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চা রাজা বিক্রেতা রাজা মামা একটি রাজকীয় হাসি দিয়ে তার ক্রেতা ও ভক্তদের সাথে ছবি ও সেলফি তোলায় ব্যস্ত। 

জানা যায়, তাঁর আসল নাম আজহার উদ্দিন। বসয় ৪৩ বছর। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার নওধার গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আলীম উদ্দিন। ছোটবেলা থেকে নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে তিনি আজ এই অবস্থায় এসেছেন। অভাব ঘুচাতে পাড়ি দেন দুবাইতে। ২০১৮ সালে দেশে ফিরে তিনি চায়ের ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে সারাদেশে তার ১৮ টি ব্রাঞ্চ রয়েছে। ভবিষ্যতে নারায়ণগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়াতেও চায়ের একটি ব্রাঞ্চ দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।

কথা হলে রাজা মামা ওরফে আজহার উদ্দিন জানান, তার বাবা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। জায়গা জমি বিক্রি করে তিনি বিদেশ পাড়ি জমান। তখন তার ধারণা ছিল, বিদেশ গিয়ে তিনি প্রতি মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন। কিন্তু সে সুযোগ তার হয় নি। দুবাইতে গিয়ে একটি চায়ের দোকানে কাজ করার সুযোগ হয় তার। তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন, দেশে ফিরে গিয়ে এমন একটি চায়ের দোকান দিবেন। প্রথমে তার ধারণা ছিল, দেশের মানুষ তার দামি চা খাবে কিনা। কিন্তু তার তৈরী চায়ের স্বাদে মুগ্ধ হয়ে ক্রেতারা তাকে রাজা মামা উপাধি দিয়েছেন।  

তার চায়ের বিশেষত্ব হচ্ছে কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, জাফরান, নানা জাতের মসলা, তাল মিছরি, গরুর দুধ ও গুঁড়া দুধ মেশানো হয়। এছাড়া এটি বালুর তাপে গরম করা হয়।  তার চা কেন এতো বিখ্যাত তা না বললেও তিনি জানান, চায়ে তিনি যে জাফরান ব্যবহার করে থাকেন ওই প্রতি কেজি জাফরানের দাম ৯-১০ লাখ টাকা। তার চায়ে ব্যবহারকৃত প্রত্যেকটি উপাদানই খুবই দামি। তবে সে সুলভ মূল্যে এই রাজা চা বিক্রি করে থাকেন। তার তৈরী এই চায়ের দাম প্রতি কাপ ৫০ টাকা।

তিনি আরও জানান, যখন তিনি বিদেশ থেকে দেশে ফিরে চায়ের ব্যবসা শুরু করেন গ্রামের অনেক মানুষ আমাকে নিয়ে হাসি তামাশা করেছিল। কিন্তু আজ দেশের মানুষ আমাকে সত্যিই রাজা বানিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে তার ১৮টি ব্রাঞ্চে ৭২ জন স্টাফ রয়েছেন। যাদের প্রত্যেককে তিনি ১২-২৮ হাজার টাকা সম্মানী দিয়ে থাকেন।

আকাশ নামে এক চা প্রেমিক বলেন, আমি মিরপুর থেকে বাণিজ্য মেলায় এসেছি শুধু রাজামার সাথে একটি সেলফি তুলতে । আমি যখন শুনেছি রাজা মামা এখানে আছে তখন থেকেই শুধু সময় খুঁজছি কখন যাব রাজা মামার দোকানে।

আনিস নামে এক ব্যক্তি জানান, রাজা মামার চায়ের নাম অনেক শুনেছি কিন্তু কখনোই খাই নেই তাই আজ ছুটেল এই চায়ের স্বাদ নিতে।