বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

|

অগ্রাহায়ণ ২৬ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

প্রবাসীর রহস্যজনক মৃত্যু, মরদেহ উদ্ধার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রবাসীর রহস্যজনক মৃত্যু, মরদেহ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিজাম উদ্দিন (২৫) নামের এক সৌদি প্রবাসীর রহস্যজনক মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোরে ফতুল্লা মডেল থানার হাজীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সড়কের তজুমুদ্দিনের পঞ্চম তলার ভাড়া বাসা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটিকে রহস্যজনক মনে হওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রী মনিরা বেগমকে (২১) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

নিহত নিজাম উদ্দিন দিনাজপুর জেলার খানসামা থানার আড়াজি গ্রামের মৃত মনসুর আলীর পুত্র। তিনি দুই বছর পর গত সোমবার (ডিসেম্বর ৮) সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে হাজীগঞ্জ এলাকায় স্ত্রী ও ৫ বছর বয়সী কন্যা নাফিসাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন।

নিহতের স্ত্রী মনিরা বেগম, যিনি একটি পোশাক তৈরি কারখানায় কাজ করেন, তিনি জানান, বুধবার রাত ১১টার দিকে অফিস ছুটি হলে স্বামীর সঙ্গে বাসায় আসেন। রাতের খাবার খেয়ে রাত ১২টার দিকে তারা ঘুমিয়ে পড়েন।

মনিরা বেগমের ভাষ্য অনুযায়ী, রাত দেড়টার দিকে নিজাম উদ্দিন শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিলে অসুস্থতার কারণে তিনি প্রথমে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তবে পরে তারা শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। এ সময় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে স্বামী নিজাম ডিভোর্সের কথা বললে তিনি তাতে সম্মতি দেন। এরপর তারা শুয়ে পড়েন।

তিনি আরও জানান, রাত আড়াইটার দিকে গোঙানির শব্দ শুনে তার ঘুম ভেঙে যায়। তিনি দেখেন, স্বামী নিজাম উদ্দিন নিজের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শয়নকক্ষের জানালায় ঝুলে আছেন।

মনিরা বেগম চিৎকার করলে সকলে এগিয়ে এসে নিজাম উদ্দিনকে জানালায় পেঁচানো ওড়না থেকে নামিয়ে বিছানায় শোয়ান। তবে তার স্বামীর বড় ভাই মইনুদ্দিন ও খালাতো ভাই আশরাফুল তাকে হাসপাতালে নিতে দেননি বলে তিনি দাবি করেন।

পরকীয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্ত্রী মনিরা স্বীকার করেন, একজনের সাথে তার সম্পর্ক ছিল, তবে বর্তমানে তা নেই। এই বিষয়টিও তিনি রাতে স্বামীকে জানিয়েছেন।

নিহতের ভাই মইনুদ্দিন জানান, বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ভাইয়ের মৃতদেহ বিছানায় দেখতে পান। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। পরে পুলিশে খবর দিলে ভোররাতে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে পাঠায়।

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে খবর পেয়ে তারা লাশ উদ্ধার করেন।

ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হওয়ায় মৃতের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা—তা নিশ্চিত করতে পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।