
প্রতীকী ছবি
ফতুল্লার ধর্মগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমকে শ্বাসরোধে হত্যা শেষে তার ঘর থেকে টাকা লুট করার ঘটনায় নিহতের মেয়ের জামাই জাহের আলী (৫৪) বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা তিন জন দুস্কৃতিকারি মঙ্গলবার রাত ১০ টার পর থেকে রাত দু্ইটার মধ্যে কোন এক সময়ে তার শ্যালক কে হাত পা বেধে এবং তার শ্বশুড় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম কে শ্বাসরোধ করে হত্যা শেষে ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত ত্রিশ লাখ টাকা এবং তার শ্যালকের রুমের আলমারীতে থাকা দুই লাখ টাকা সহ মোট ৩২ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। দুষ্কৃতিকারীদের সকলের বয়স ২৫- ৪০ বছর উল্লেখ্য করা হয় এবং সকলেই জ্যাকেট পরিহিত ছিলো।
মঙ্গলবার রাতে ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাওলা বাজার এলাকায় এঘটনা ঘটে।
নিহত মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল হালিম(৭২) মাওলাবাজার এলাকার মৃত. মহব্বত আলীর ছেলে। বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে।
নিহতের ছেলে হাফেজ মোঃ মাসুদ জানান, পরিবারের লোকজন মঙ্গলবার আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে তার বাবা নিজ রুমে ও সে তার রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত প্রায় ১১টার সময় ঘুমন্ত অবস্থায় ৩জন লোক তার হাত পা ও চোঁখ বেধে মারধর করে। তার বাবার রুমে কয়জন ছিলো তার জানা নেই। তবে দুর্বৃত্তরা রাত ২টায় যাওয়ার সময় জমি বিক্রির ২০ লাখের বেশি টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। দুবৃর্ত্তরা কিভাবে রুমে প্রবেশ করেছে তা বলতে পারেন না মাসুদ।
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার এসআই হুমায়ুন কবির জানান, ময়না তদন্ত রিপোর্টে বুজাযাবে মৃত্যুর কারন। তবে যে ঘরে ঘটনা ঘটেছে সে ঘরে বাহির থেকে ভিতরে প্রবেশ করার কোন আলামত পাওয়া যায়নি। ঘরটিতে চারটি সিসি টিভি ক্যামেরা রয়েছে। তবে ক্যামেরার মেশিন থেকে হার্ড ডিক্স খুলে নিয়েগেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহতের ছোট মেয়ে নুরুননেছা জানায় রাত আড়াইটার দিকে তাদের ভাড়াটিয়ার মেয়ে তাকে ফোন করে জানায় যে তাদের বাসায় ডাকাতি হয়েছে। তার ভাই কে হাত-পা বেধে,মারধর করে টাকা -স্বর্নালংকার নিয়ে গেছে।এবং তার বাবা কোন কথা বলছেনা। সংবাদ পাওয়ার পরপর সে ধর্মগঞ্জস্থ বাসায় ছুটে আসে। তিনি আরো জানান,বাসায় ত্রিশ লাখ টাকা ছিলো। সেই টাকা নিয়ে গেছে। বাড়ীর কাজ করার জন্য ব্যাংক থেকে মাস খানেক পূর্বে এই টাকা উত্তোলন করা হয়েছিলো বলে তিনি জানান
পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া মাহিনুর বেগম জানায়, তার স্বামী কাচামাল ব্যবসায়ী।প্রতিরাতে দুইটাট দিকে সে কাচামাল সংগ্রহে বাসা থেকে বের হয়। রাত দুইটার দিকে তার ঘুম ভাঙ্গলে সে ভাড়িওয়ালার ঘরের দরজা ঠাস্ ঠাস্ শব্দ শুনতে পান এবং গোঙ্গানীর শব্দ শুনতে পেয়ে তার স্বামী কে ঘুম থেকে ডেকে তুলেন। তখন সে দরজা খুলে দেখতে পান বাড়ীওয়ালার ফ্ল্যাটের প্রধান ফটক খোলা। তিনি ভিতরে প্রবেশ দেখতে পান বাইরে রুমের ভিতর প্রবেশ করার দুটি দরজা বাইরে থেকে আটকানো। তখন সে বাইরের সিটকিনি খুলে দেখতে পান গামছা দিয়ে বাড়ীওয়ালার ছেলে হাফেজ মাসুদের হাত- পা বাধা এবং অপর একটি কাপড়ের টুকরো দিয়ে মুখ বাধাস্থায় ফ্লোরে পরে রয়েছে। তখন সে তার হাত- পা মুখের বাধন খুলে দেন। পাশের রুমে গিয়ে দেখতে পান বিছানার ওপর পরে রয়েছে নিহতের মৃতদেহ।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মহসীন জানান,নিহতের মেয়ের জামাতা মামলা দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যেই তারা একাধিক বিষয় সামনে রেখে তদন্ত করছেন। নিজস্ব সোর্সের পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধিদের শনাক্ত সহ গ্রেফতারের চেস্টা করে যাচ্ছেন।