মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫

|

আশ্বিন ২০ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

ফতুল্লায় বাউল শিল্পি অনিকার রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী আটক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১১:৫৯, ৪ অক্টোবর ২০২৫

ফতুল্লায় বাউল শিল্পি অনিকার রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী আটক

বাউল শিল্পি আনিকা আক্তার অনিকা

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাউল শিল্পি আনিকা আক্তার অনিকার (১৯) রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে। গতরাত ৩টায় ফতুল্লার ভুইগড় এলাকার ভাড়া বাসা থেকে অনিকার মৃত দেহ তার স্বামী হাবিবুর রহমান স্থানীয় একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হাবিবুর রহমানকে আটক করে অনিকার লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন।

আনিকা আক্তার অনিকা (১৯) মাদারীপুর জেলার মোস্তফাকুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে।

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর কারন জানাযাবে। তবে নিহতের পরিবার দাবী করছে পারিবারিক কলহের জের ধরে অনিকাকে হত্যা করেছে তার স্বামী হাবিবুর রহমান(২৫)। এজন্য জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাবিবুরকে আটক করা হয়েছে। হাবিবুর ও অনিকা ফতুল্লার ভুইগড় এলাকায় মাস্টারের ভাড়াটিয়া বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। এ ভাড়াটিয়া বাসায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

অনিকার বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৫ বছর আগে অনিকাকে হাবিবুর ভালোবেসে বিয়ে করেছে। তাদের বিয়ের পর জানতে পেরেছি স্ত্রীর সাথে সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলেই আবার বিয়ে করতেন। এভাবে হাবিব পর্যায়ক্রমে অনিকার আগে ৪টি বিয়ে করেছে। ৪ মাস আগে অনিকার একটি কন্যা সন্তান হয়েছে। সেই সন্তান কোলে নিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকের পাশে অবস্থিত একাধীক বাউল ক্লাবে গিয়ে গান করতেন। সারারাত গান গেয়ে যে টাকা কামাতেন সেই টাকা বাসায় আসলেই অনিকার কাছ থেকে জোড় করে নিয়ে যেত হাবিবুর রহমান।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি মালা নামে এক বাউল নারী শিল্পিকে হাবিবুর বিয়ে করেন। হাবিবুরের কাছে সেই বিয়ের সত্যতা জানার চেষ্টা করেন অনিকা। এনিয়ে হাবিবুর ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে গ্রামের বাড়ি চাদপুর চলে যায়। সেখান থেকে কয়েকদিন আগে অনিকাকে তালাকের প্রথম নোটিশ পাঠায়। অনিকা সেই নোটিশ নিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে নালিশ করেন। এতে হাবিবুর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে স্বর্না নামে আরেকজন নারী বাউল শিল্পিকে দিয়ে অনিকাকে হত্যার চেষ্টা করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে অনিকার বাসায় গিয়ে হামলা চালায় স্বর্না। এসময় বেধরক মারধর করে অনিকার পরিহিত নাকের গলার ও হাতের স্বর্ণের অলংকার খুলে নেয়। তখন অনিকার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে অনিকাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়। ওইসময় কৌশলে স্বর্ণা পালিয়ে যায়।

অনিকার বাবাসহ তাদের পরিবারের দাবী পরিকল্পিত ভাবে অনিকাকে হত্যা করে তা আড়াল করতেই হাবিবুর মৃত দেহ নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সর্বচ্চো সাজা দাবী করেন নিহতের পরিবার।
এবিষয়ে হাবিবুর রহমান জানান, অনিকাকে সে হত্যা করেনি। গ্রামের বাড়ি চাদপুর থেকে এসে অনিকার খোজে তাদের ভাড়া নেয়া ভুইগড়ের ফ্ল্যাট বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে দরজায় অনেক সময় ধাক্কা ধাক্কি করেন। তখন দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে দেখি অনিকার নিথর দেহ জানালার গ্রীলের সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে। এরপর তাকে নিয়ে সাইনবোর্ড প্রোঅ্যাকটিব হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অনিকাকে মৃত ঘোষনা করেন। 

তিনি আরো বলেন, অনিকাকে যে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছি সেটি ভুয়া তাকে ভয় দেখানোর জন্য পাঠিয়ে ছিলাম।