শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৫ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সেনা কর্মকর্তার বাড়িতে শোকের মাতম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০১:০৩, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সেনা কর্মকর্তার বাড়িতে শোকের মাতম

সংগৃহীত

বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জেএসএস সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময়ের ঘটনায় নিহত সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  

পটুয়াখালী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের গাজি বাড়িতে তার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে চলছে শোকের মাতম।

নির্বাক হয়ে আছেন তার বাবা, মায়ের চিৎকারে ভারি হয়ে আসছে আকাশ।

হাবিবুর রহমানের গ্রামের বাড়ি জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার লতিপুর গ্রামে। তিনি আব্দুল মজিদ সরদারের দ্বিতীয় সন্তান।

পরিবার জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানাজা শেষে নিজের হাতে গড়া বাড়ি পটুয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গাজি বাড়ির আঙ্গিনায় দাফন করা হবে তাকে।  

হাবিবুর রহমানের বড় ছেলে হাসিবুর রহমান বিশ্বাস করতে পারছেন না, তার বাবা আর নেই। অভিযানে যাওয়ার আগে বড় ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন হাবিবুর রহমান। বলেন, ‘কোনো দাবি থাকলে ক্ষমা করে দিও, একটা কাজে বের হচ্ছি। ’ 

শোকে পাথর হলেও দেশের জন্য বাবা প্রাণ উৎসর্গ করায় গর্ববোধ করছেন তিনি।

স্থানীয় প্রতিবেশীরা জানান, হাবিবুর রহমান ছিলেন নম্র ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের। নিজের করা নতুন বাড়ির আশপাশে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন তিনি।

নিহত হাবিবুর রহমানের বাবা, মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। ছেলেদের মধ্যে বড় ছেলে হাসিবুর রহমান (২২) সদ্য ডিপ্লোমা শেষ করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির অপেক্ষায় আছেন। আর ছোট ছেলে হাবিব বিন হাসান (২০) সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে কর্মরত।

সেনাবাহিনীর বান্দরবান ব্রিগেড থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সন্তু লারমা সমর্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মূল দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের একটি দল রুমা উপজেলার বথিপাড়ায় চাঁদাবাজি করতে আসবে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প থেকে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে বথিপাড়ায় যায়। এসময় ওই এলাকার একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে হঠাৎ গুলি ছোড়েন। সেনা সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালান। এতে তিন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এসময় বাকি সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলি মাথায় লাগলে টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। এসময় ফিরোজ নামে এক সেনা সদস্যের ডান পায়ে গুলি লাগে। আহত সেনা সদস্যকে সকালে রুমা থেকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।  

এদিকে এসময় ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি এসএমজি, ২৭৫ রাউন্ড তাজা গুলি, তিনটি অ্যামোনিশন ম্যাগজিন, তিনটি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের পাঁচ রাউন্ড গুলি, চার জোড়া ইউনিফর্ম এবং চাঁদাবাজির নগদ ৫২৯০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে সেনা টহল দল ওই এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে এবং স্থানীয় ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।