
বিএনপি নেতা হাসান
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও একাধিক হত্যা মামলার আসামি বিএনপি নেতা হাসান আহমেদকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। নারায়ণগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে উস্কানি, সহিংসতা ও সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক নানা ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হেফাজতে ইসলামের নাশকতার মামলার গ্রেফতার দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবিরের আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম জানান, হেফাজত কান্ড থেকে শুরু করে সাম্প্রদায়িক উস্কানির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, আদালতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এদিকে হাসান গ্রেফতার হলেও অধরা রয়ে গেছে তার সহযোগীরা। হাসান গ্রেফতারে স্বস্তি নেমে এলেও তার সহযোগিদের ধরতে পুলিশের অভিযানের প্রত্যাশা করেছেন নগরবাসী।
নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী, কাশিপুরের জোড়া খুনের মামলার প্রধান আসামী বিএনপি নেতা হাসান আহমেদ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীর ঘনিষ্ঠ সহচর প্যানেল মেয়র-১ আফরোজা হাসান বিভার স্বামী। তিনি সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরী করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
এ হাসানের বিরুদ্ধে জোড়া খুনসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মন্ডলপাড়া, নিতাইগঞ্জ, বাবুরাইল এলাকায় বিভিন্ন পরিবহন, অবৈধ অটো স্ট্যান্ডে চাদাঁবাজী, মাদক বিক্রেতাদের শেল্ডারদাতা- মাদক সম্রাট সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী হাসান।
অভিযোগ রয়েছে, এই শীর্ষ সন্ত্রাসী হাসান বাহিনীকে ব্যবহার করে নানা কার্যসিদ্ধ করে থাকেন সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। জিমখানায় রেলওয়ের কোয়ার্টার ভেঙ্গে বসতবাড়ী উচ্ছেদ করতে হাসানের নেতৃত্বে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনীকে ব্যবহার করেন। এর আগে মন্ডলপাড়া ট্রাকস্ট্যান্ড নিয়ে সংঘর্ষে মেয়র আইভীর পক্ষে দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হাসান বাহিনী ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। পুরস্কার স্বরুপ মেয়র আইভী তাকে মন্ডলপাড়া এলাকায় ডিআইটি সিটি কর্পোরেশন মার্কেটে নামমাত্র মুল্যে বিশাল জায়গা বরাদ্দ দেন। মেয়র আইভীর সাথে হাসানের স্ত্রী বিভাকে সার্বক্ষনিক সঙ্গি হিসেবে ব্যবহার করে দেওভোগ, বাবুরাইল ও আশপাশের এলাকায় একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করে হাসান বাহিনী। শহরের দক্ষিনাঞ্চলের মাদক সিন্ডিকেটও এই হাসান বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে বলে জানা গেছে।
এদিকে, ২০১৭ সালের ১২ অক্টোবর রাতে মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধে কাশিপুরের হোসাইনি নগর এলাকায় একটি রিকশার গ্যারেজে সশস্ত্র হামলাকারীরা কুপিয়ে তুহিন হাওলাদার মিল্টন (৪০) ও পারভেজ আহমেদ (৩৫) নামে দুজনকে হত্যা করে। পরে নিহত পরিবারগুলোর পক্ষে মামলা না হওয়ায় ১৪ অক্টোবর দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মাজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই মামলা করেন। মামলায় প্যানেল মেয়র বিভার স্বামী বিএনপি ক্যাডার হাসান ও তার ভাই এম এ মজীদকে হত্যাকান্ডের ইন্ধনদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।