সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫

|

ভাদ্র ১ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

বর্ষায় ভরা যৌবনা শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গা, দূষণ রোধে সক্রিয়তার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৭:৫৫, ১৭ আগস্ট ২০২৫

বর্ষায় ভরা যৌবনা শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গা, দূষণ রোধে সক্রিয়তার দাবি

ফাইল ছবি

বর্ষা এলেই টইটম্বুর হয়ে উঠে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা নদী। নদীর পানিতে নতুন প্রাণ, দুই পাড়ে নৌকা আর জেলের জাল সব মিলিয়ে যেন ফিরে আসে নদীর পুরনো রূপ। কিন্তু ভরা পানি আর দৃশ্যমান সৌন্দর্যের আড়ালে আজও বয়ে চলছে এক কঠিন বাস্তবতা, নদীর নিত্যদিনের দূষণ। বিশেষ করে শীতলক্ষ্যার দুই পাড়জুড়ে গড়ে ওঠা অসংখ্য শিল্প-কারখানার বর্জ্য প্রতিনিয়ত মিলছে নদীর পানিতে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষাকালীন পানির প্রবাহে এই দূষণ কিছুটা আড়ালে থাকলেও, সারা বছরই নদীর পানিতে কালো রঙ, দুর্গন্ধ ও তৈলাক্ত স্তরের অস্তিত্ব থাকে।

ফতুল্লা, পাগলা, বন্দর ও সোনারগাঁ এলাকার আশপাশে থাকা কারখানাগুলোর অনেকেই বর্জ্য শোধন ছাড়াই তা নদীতে ফেলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় জেলে মো. আলম বলেন, একসময় আমরা দিনে অন্তত এক-দুই কেজি মাছ পাইতাম। এখন পানির রঙ দেখে জালই ফেলতে ইচ্ছা করে না। মাছ নাই, পানিতেও গন্ধ।

শুধু শীতলক্ষ্যা নয়, বুড়িগঙ্গার অবস্থাও একই। ফতুল্লা থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত নদীতে পড়ে যাচ্ছে শিল্প কারখানার বর্জ্য, ঘরবাড়ির ময়লা, মেডিকেল বর্জ্য, এবং মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের উচ্ছিষ্ট।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত ৫ বছরে একাধিকবার অভিযান চালানো হলেও, নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। অধিকাংশ কারখানায় ইটিপি কাগজে থাকলেও বাস্তবে তা বন্ধ বা অকার্যকর।

পরিবেশবাদীরা জানান, শুধু অভিযান চালিয়ে লাভ নেই, চাই স্থায়ী সমাধান। নদী বাঁচলে শহর বাঁচবে এটাই এখন সবচেয়ে বড় সত্য।

নদী গবেষকরা মনে করছেন, নদীর স্বাভাবিক জীবনধারা ফিরিয়ে আনতে হলে এখনই নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ। এর মধ্যে রয়েছে, অবৈধ বর্জ্য নিষ্কাশন বন্ধ, ইটিপির কার্যকারিতা নিশ্চিত, নদী তীর দখলমুক্ত করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি।

নগরবাসীর দাবি, নদীর রূপ বর্ষায় ফিরলেও, প্রাণ ফিরিয়ে আনতে দরকার সারা বছর কার্যকর তদারকি ও আইন প্রয়োগ। অন্যথায় এক সময় শুধু মানচিত্রেই হয়তো টিকে থাকবে শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গার নাম।