ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জ–৪ (ফতুল্লা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন এখনো ঘোষণা হয়নি। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় সর্বাগ্রে উঠে এসেছে সাবেক থানা সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের নাম। শনিবার বিকালে আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়নের বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতারা তাঁর প্রতি প্রকাশ্যে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
বিকেল থেকেই আলীরটেক ও গোগনগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল নেতারা দলে দলে ফতুল্লায় শাহ আলমের নিজ বাসায় উপস্থিত হতে শুরু করেন। তাঁরা জানান, নতুনভাবে আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়ন ফতুল্লা আসনে যুক্ত হওয়ায় এলাকাবাসীর একমাত্র প্রত্যাশিত নেতা হিসেবে শাহ আলমকে এগিয়ে দেখতে চান তাঁরা। একইসঙ্গে স্থানীয় উন্নয়ন, প্রশাসনিক সেবা ও সংগঠনের গতিশীলতার স্বার্থে তাঁর নেতৃত্বই সবচেয়ে কার্যকর হবে বলে মনে করেন তাঁরা।
শাহ আলম নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমি অত্যন্ত খুশি যে আলীরটেক, গোগনগর আবার আমাদের ফতুল্লা আসনের সঙ্গে এসেছে। আল্লাহ তায়ালা যদি আমাকে দায়িত্ব দেন, আমি যদি দায়িত্ব পাই, তাহলে এই পুরো এলাকার উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। উন্নয়ন এমন একটি জিনিস যা দলমত নির্বিশেষে জনগণের জন্য করতে হয়।”
তিনি বলেন, “আমাদের সবাই পারিবারিকভাবে একে অপরকে চিনি। আমরা ব্যাংক ডাকাত না, লুটেরা না, ভূমিদস্যুও না। বরং ওয়েলফেয়ার কার্যক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে আমরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই, যদিও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। প্রশাসনিক সহযোগিতা ছাড়া বৃহৎ পরিসরে উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই সবার সহযোগিতাই সবচেয়ে বড় শক্তি।”
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের কথা উল্লেখ করে শাহ আলম বলেন, “২৫ বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে আছি। আগেও যারা আমার সাথে ছিল, এখনও তারা আমার সাথে আছে। সংগঠনই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। যখন আমি ফতুল্লা থানা বিএনপির দায়িত্বে ছিলাম, তখন সবাইকে যথাযথ পদমর্যাদায় রেখে কমিটি গঠন করেছি; সেখানে নিজের আত্মীয়স্বজনকে আমি কখনও স্থান দিইনি। কারণ দলগত মূল্যায়নই সংগঠনকে শক্তিশালী করে। এখন সেসব জায়গায় মূল্যায়নের অভাব চোখে পড়ে, যা তৃপ্তি আনে না মাঠের কর্মীদের জন্য।”
শাহ আলম এলাকার দীর্ঘদিনের অবহেলিত সমস্যার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আলীরটেক, গোগনগর বা বক্তাবলি—যে এলাকায়ই কোনো সমস্যা হোক, সবাইকে ছুটে আসতে হয় ফতুল্লা থানায়। এটা ওসব এলাকার মানুষের জন্য অনেক বড় কষ্টের বিষয়। নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পেলে আমি সর্বপ্রথম চেষ্টা করবো সেখানে একটি নতুন থানা প্রতিষ্ঠার জন্য, যাতে সাধারণ মানুষ দ্রুত সেবা পেতে পারে।”
বিএনপিকে নিয়ে সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি কখনও সন্ত্রাসীদের দল না, চাঁদাবাজদের দলও নয়। আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব অতীতে বহু জনকে বহিষ্কার করেছেন কেবল অপরাধের কারণেই। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, দল তাকেই সরিয়ে দেয়। বিএনপি এমন একটি রাজনৈতিক সংগঠন, যারা কখনও সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বা ভূমিদস্যুতার প্রশ্রয় দেয় না। কারণ এরা থাকলে দলও নিরাপদ থাকে না, দেশও নিরাপদ থাকে না।”
আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়নের নেতারা বলেন, নতুন করে এই দুই ইউনিয়ন ফতুল্লা আসনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এলাকার উন্নয়ন, নিরাপত্তা, রাস্তা–ঘাট, জনসেবা কেন্দ্রসহ নানামুখী সমস্যার সমাধানে তাঁরা একজন কার্যকর নেতৃত্ব চান। তাঁদের প্রত্যাশা, বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া মাত্রই শাহ আলম মাঠে সংগঠনের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে শক্তিশালী প্রতিযোগিতায় নামতে পারবেন।
সমর্থন জানাতে আসা নেতারা আরও বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এসব এলাকায় প্রশাসনিক যোগাযোগব্যবস্থার জটিলতা, অপর্যাপ্ত জনসেবা এবং নানা স্থানীয় চাহিদার সঠিক প্রতিফলন হয়নি। সেই জায়গা থেকেই তাঁরা এমন একজন জনপ্রিয় ও সক্রিয় নেতাকে চেয়েছেন, যিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতি, সংগঠন এবং জনসম্পৃক্ততার ভিত্তিতে তাঁদের পাশে থাকবেন।
শাহ আলম বলেন, “রাজনীতি হলো মানুষের সমস্যা সমাধানের অঙ্গীকার। কেউ যদি আমাকে ভালোবেসে এটি করতে সুযোগ দেয়, আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে চাই। দল, জনগণ আর দেশ—এই তিনটির জন্যই আমরা কাজ করি।”

