আহমদ আলী
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের হাজী রজ্জব আলী সুপার মার্কেটে অবস্থিত বহুল আলোচিত-সমালোচিত পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের অঘোষিত মালিক ছিল মার্কেটের মালিক আহমদ আলী। গত মাসে অনিবন্ধিত হাসপাতাল বন্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে আসছেন এমন তথ্য শুনে এক প্রসূতি মা ও নবজাতককে অস্ত্রোপচার টেবিলে রেখেই পালিয়ে যান এ হাসপাতালের কথিত ডাক্তার আরিফ, নার্সসহ অন্যান্য কর্মীরা। সংবাদ মাধ্যমগুলোর কল্যাণে বর্বর ও পাশবিক এ সংবাদ প্রকাশ হলে দেশ জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করে।
এর আগে এ একই জায়গায় ছিল পপুলার হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ল্যাব নামে একটি হাসপাতাল। এ হাসপাতালের নামেও ছিল নানা অনিয়মের অভিযোগ। ২০১৯ সালের ৯ জুলাই অনুমোদনহীন পপুলার হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ল্যাবে অভিযান চালায় র্যাব-১১। এসময় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: কামাল হোসেন (৪৩) ও চেয়ারম্যান মায়া বেগম (৩৬) নামে দুই ভূয়া ডাক্তারকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১ সদস্যরা। তারা দুজন সম্পর্কে ছিলেন স্বামী-স্ত্রী। সেময় র্যাব সাংবাদ মাধ্যমগুলোর সংবাদিকদের জানায়, এ দম্পতি হাজী রজ্জব আলী সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় সরকারি অনুমতি ছাড়াই “পপুলার হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ল্যাব” গড়ে তুলে নিজেদের ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগী দেখে আসছিল। এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করি এবং প্রমাণও পাই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভূয়া ডাক্তার দম্পতি এ মার্কেটের মালিক আহমদ আলীকে মাসিক ৩০ হাজার টাকা (ভাড়ার বাইরে) চুক্তি ও ১ লক্ষ টাকা ভাড়ায় দুই বছর হাসপাতাল পরিচালনা করে। কিন্তু র্যাব অভিযান চালানোর পর কথিত ডা. আরিফ হোসেন মার্কেটের মালিক আহমেদকে অংশীদার বানিয়ে মোট ৮ জন মিলে ২ মাসের মাথায় গড়ে তোলেন পদ্মা জেনারেল হাসপাতাল। যার বৈধ কোন কাগজ বা স্বাস্থ্য বিভাগের কোন অনুমোদন ছিলো না। এ হাসপাতালের মালিকরা হলেন ডা. আরিফ হোসেন, মো: সুজন, মো: বদরুল, আহমেদ আলীসহ আরো ৪ জন। এর দেড় মাস পর হাসপাতালটিকে আবারও সিলগালা করে ভ্রাম্যমান আদালত। এ হাসপাতালের ডা. আরিফ হোসেন। তিনি নিজেকে পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার পরিচয় দিতো। কিন্তু তার কোনো ডাক্তারি কখনো দেখাতে পারেনি। নবজাতক ও তার মাকে অপারেশনের বিছানায় রেখে কথিত ডাক্তার আরিফ সে সময় পালিয়ে যায়। অভিযানের পর থেকেই আরিফ ও মার্কেট মালিক আহমদ আলীসহ অন্যান্যরা আত্মগোপনে আছেন।'
এ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ভুক্তভোগী সোলায়মান বুলবুল জানান, মার্কেট মালিকের সহযোগিতা ছাড়া একই জায়গায় পর পর দুটি অবৈধ হাসপাতাল কিভাবে গড়ে উঠে? আমি এটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে তদন্ত করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
সূত্র জানায়, মার্কেট মালিক আহমদ আলী এ মার্কেটের পাচঁ তলায় কুমিল্লা বোডিং নামে একটি হোটেল পরিচালনা করে। সেখানে দেহ ব্যবসা ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অনৈতিক কাজ চলে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী এ ব্যপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মার্কেট মালিক আহমদ আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে তার ০১৭৯০৭০৮৪৮৮ সম্বলিত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযানের পর থেকে তিনি পলাতক আছেন বলে জানিয়েছে মার্কেটে অবস্থিত দোকানদাররা।#