ঢাকায় বিএনপির গণ অবস্থান কর্মসূচিতে দিপু ভূইয়ার নেতৃত্ব বিশাল মিছিল
মৃতপ্রায় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলকে রাজপথে এনে হাজার হাজার নেতাকর্মীর জোয়ার সৃষ্টি করে সফলতার পর এবার জেলা বিএনপিকে জাগিয়ে ও নেতাকর্মীদের জোয়ার সৃষ্টি করে দেশজুড়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রশংসায় ভাসছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু। দিপুর তত্বাবধানে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটির সক্রিয়তা, কর্মসূচীগুলোতে নেতাকর্মীদের ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করা ও নবগঠিত কমিটির সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেশব্যাপী আলোচিত হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জে ঝিমিয়ে পড়া জেলা বিএনপিকে আবারও রাজপথে নিয়ে আসা ও শহরে একাধিক বড় শোডাউনে চাঙ্গা হয়েছে দলের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন যাবৎ দক্ষ নাবিকের অভাবে ভুগতে থাকা কর্মীরা এবার একটি আস্থা ও ভরসা সামনে দেখেছেন। জেলা বিএনপির আহবায়ক গিয়াসউদ্দিন ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনকে দিয়ে ঝিমিয়ে পড়া জেলা বিএনপিতে পুনরায় জাগরণ সৃষ্টি করতে পেরেছেন দিপু।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের অভিভাবক হিসেবে কাজ করেছিলেন দিপু ভূঁইয়া। কমিটি গঠন ও পরিচালনায় সেই সময়কার অনেক সাফল্য রয়েছে তার। এরপর গোলাম ফারুক খোকনকে আহ্বায়ক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান রনিকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়।
গত বছরের ১৬ মার্চ খোকনকে আহ্বায়ক ও রনিকে সদস্য সচিব ঘোষণা করে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই জেলা বিএনপির কর্মসূচিতে যুবদলের একের পর এক বিশাল শোডাউন সকলের নজর কাড়ে। এসব জাগরনের নেপথ্যের নায়ক ছিলেন দিপু ভুঁইয়া।
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনারে বেশ কয়েকটি সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর মিছিল নিয়ে যোগ দিয়েছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল। জেলা বিএনপির কর্মসূচিগুলো সে সময় যুবদলের শক্তিমত্তার ওপর নির্ভর করেই পালিত হত।
৮ আগষ্ট ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীর একটি বিশাল মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল। সমাবেশে উপস্থিত অনেকেই জানান, সেদিনের সমাবেশে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় মিছিল। ঢাকার সমাবেশে জেলা যুবদলের এমন ব্যাপক শোডাউনে দেশব্যাপী আলোচনায় উঠে আসেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল। সাংগঠনিক সাফল্যের ফলে ব্যাপক সমাদৃত হন জেলা যুবদলের স্টেয়ারিং হাতে নেয়া নেতা দিপু ভূঁইয়া।
জেলা যুবদলের এমন সাফল্যের মাঝেই গত ১০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে আহ্বায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিবের দায়িত্ব দিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়। যুবদলের পর জেলা বিএনপির স্টেয়ারিংয়ের দায়িত্ব পেয়ে পুনরায় চমক দেখিয়েছেন দিপু। কমিটি গঠনের পর থেকে সরকারি দলের নানা উস্কানি ও টিপ্পুনীর জবাব রাজপথে নেতাকর্মীদের জোয়ার তৈরীর মাধ্যমে দেন দিপু ভুঁইয়া।
কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জে নতুন ভাবে বিএনপি নেতাকর্মীরা চাঙা হতে শুরু করেছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকা নেতাকর্মীরাও এখন দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছে। বিগত সময়ে জেলা বিএনপির বেশ কয়েকটি সভা সমাবেশে এ দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিটি কর্মসূচীতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। নেতাকর্মীদের মতে, এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র দিপু ভুঁইয়ার মত একজন ক্যারিশমাটিক লিডারের হাতে জেলা বিএনপির দেখভালের দায়িত্ব যাওয়ায়। আর দিপু ভুঁইয়া একজন কর্মীবান্ধন রাজপথের নেতা। শুধু কর্মসূচীর সময় নয়, সার্বক্ষনিক তিনি নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখেন। যেকোন আনন্দ দুর্যোগে তাকে কাছে পায় নেতাকর্মীরা।
কমিটি গঠনের পর থেকেই জেলা বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে ঘিরে বেশ জোরদার প্রস্তুতি নেয় জেলা বিএনপির নেতারা। এসময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াসউদ্দিনের বাড়িতে বেশ একাধিকবার পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযান চলে সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের বাসায়ও। রূপগঞ্জে খুঁজে খুঁজে দিপু ভুঁইয়ার অনুগত নেতাকর্মীদের ধরপাকড় ও তাদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এদিকে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরাও বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা চালায় ও তাদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। ধরপাকড় শুরু হলে এক পর্যায়ে সতর্ক অবস্থানে থেকেই দল পরিচালনা করতে থাকেন গিয়াস ও খোকন।
১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৯ ডিসেম্বর বিকেলে সমাবেশের ভেন্যু ঘোষণা করা হয়। ভেন্যু ঘোষণার পর দিপু ভুঁইয়ার নেতৃত্বে সন্ধ্যার মধ্যেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে অবস্থান নেন এবং রাত্রি যাপন করেন। রাতেই নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দিপু ভূইয়াকে মাঠে অবস্থান করতে দেখা যায়। পরের দিন সকালে সমাবেশ শুরু হওয়ার পর হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে দিপু ভুঁইয়াকে সামনে রেখে সমাবেশে যোগদান করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে বিশাল বিজয় র্যালি বের করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। প্রায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী এসময় বিজয় র্যালিতে অংশ নেন। একই দৃশ্য দেখা গেছে গত ২৪ ডিসেম্বর বিএনপির নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচিতে।
দিপু ভূইয়ার অধীনে জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটি ক্ষমতাসীনদের বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। নারায়ণগঞ্জে জেলা বিএনপির বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীনদের সাথে অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে পড়েন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে নেতাদের দূরদর্শিতার ফলে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচিগুলো পালিত হয়েছে।
সবশেষ গত ১১ নভেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণ অবস্থান কর্মসূচিতে দিপু ভূইয়ার নেতৃত্ব বিশাল মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে উপস্থিত হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। এসময় মিছিলে হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির এই মিছিলটি ঢাকা ও বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাদের কাছে ব্যাপক ভাবে সমাদৃত হয়। এর ফলে ব্যাপকভাবে দেশজুড়ে আলোচনায় উঠে আসে একটি নাম 'দিপু ভুঁইয়া'। দলের প্রতি তার আনুগত্য ত্যাগ তিতিক্ষা সর্বত্র প্রশংসিত হয়। তার ভূয়সী নেতৃত্ব ও নেতাকর্মীদের রাজপথে সম্পৃক্ত করার সক্ষমতা সকলের মাঝে আলোড়ন আনে।
এদিকে গত কয়েকমাসে রাজনৈতিক মামলায় নারায়ণগঞ্জে জেলা বিএনপির প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। ইতোমধ্যে গ্রেফতার বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের জামিন সম্পন্ন হয়েছে। বাকিদের জামিনের জন্য আদালতে আইনি লড়াই চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। গ্রেফতারের শিকার ও পলাতক নেতাকর্মীদের জামিনসহ আহত নেতাকর্মীদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন দিপু ভূঁইয়া। নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে শক্তিশালী সাংগঠনিক অবস্থানে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন এই বিএনপি নেতা। দলীয় কর্মসুচিগুলোতে ইতোমধ্যে যার প্রতিফলন ঘটছে। নারায়ণগঞ্জের পাশাপাশি দেশব্যাপী বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও দিপু ভূঁইয়ার সফলতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।