শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৫ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

সিদ্ধিরগঞ্জ যুবলীগ

১৯ বছরেও শেষ হয়নি আহ্বায়ক কমিটির ৬ মাসের মেয়াদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৩:৩৬, ২৩ মে ২০২৩

১৯ বছরেও শেষ হয়নি আহ্বায়ক কমিটির ৬ মাসের মেয়াদ

যুবলীগ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল মাত্র ৬ মাসের জন্য। কিন্তু দীর্ঘ ১৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই কমিটির '৬ মাস মেয়াদ' এখনো শেষ হয়নি! দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় যুবলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০৪ সালের ৪ জুলাই তৎকালীন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের স্বাক্ষরিত বিবৃতির মাধ্যমে মতিউর রহমান মতিকে আহ্বায়ক এবং মো. মনসুর আহমেদ ও এম এ জমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

উক্ত থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- মো. কবির হোসেন, মো. মোস্তাফিজ, মো. মিজান মাষ্টার, মো. শাহজাহান, মো. রেজা ফারুক, মো. মিজানুর রহমান, দিন মোহাম্মদ দিনু, মো. নেকবর আহমেদ, মো. নাজমুল ইসলাম বাবুল, মো. শহীদুল্লাহ্, মো. তমিজ উদ্দিন, মো. আতিকুর রহমান বাবু, মো. ফারুক আজম, মো. মানিক খন্দকার, মো. রফিকুল ইসলাম বাবু, মশিউর রহমান নিরব, মো. মামুন, শাহ্ আলম, মো. মোফাজ্জল হোসেন, মো. মহিউদ্দিন, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. শামীম আহমেদ, মো. আসলাম, মো. নাসির, মো. জাহিদ, মো. ইকবাল হোসেন, মো. রবিউল, মো. নাছির হোসেন।

এই কমিটি ঘোষণার পর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করা হলেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির প্রতি নজর নেই কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের। তাই আহ্বায়ক কমিটিতেই ঝুলে আছে গুরুত্বপূর্ণ এ থানাটি। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দাবি, এতে তারা নিজেদের অবস্থান তৈরিতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

রাজধানীর ঢাকার অতি সন্নিকটস্থ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা। আওয়ামী লীগের ক্রান্তিকাল থেকে শুরু করে সব সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অংশগ্রহণ করে থাকেন এ থানার নেতাকর্মীরা। কিন্তু লম্বা সময় অতিবাহিত হলেও নতুন কমিটি না হওয়ায় হতাশা তারা।

এ দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতিকে সর্বদা রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে লক্ষ্য করা গেলেও উক্ত কমিটির অন্যদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো নয়। বর্তমান সরকার দলীয় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত মতিউর রহমান মতির নেতৃত্বে দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে আহ্বায়কে ঝুলে থাকা যুবলীগ রাজনৈতিক মাঠে চাঙ্গা রয়েছে।

বর্তমান বিরোধী দল জাতীয়তাবাদী বিএনপি সরকার ক্ষমতাথাকালীন ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিটি ৬ মাসের জন্য অনুমতি দেওয়া হলেও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার ১৪ বছরেও পূর্ণাঙ্গে রূপ নিতে পারেননি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগ।

যুবলীগের মাঠ পর্যায়ের একাধিক কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ১৯ বছরেও যুবলীগের সম্মেলন না হওয়ায় নতুন পদপ্রত্যাশীরা দিন দিন নিরাশ হচ্ছেন। কবে নাগাদ সম্মেলন হবে, সেটিও নিশ্চিত নয় কেউ।

বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ জামান বলেছেন, আমাদের কমিটিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার কারণ হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপ না থাকায়। মূলত আমরা এমপি ভিত্তিক রাজনীতি করে থাকি। সেক্ষেত্রে আমাদের ক্ষেত্রে কমিটির বিষয়টি সহজ নয়। আমরাও চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক। আমরা তো দীর্ঘদিন ধরে যুবলীগ করে যাচ্ছি, এখন বয়স হয়ে গেছে৷ এখন অপেক্ষায় আছি যদি মূল দলে স্থান পাই। তাহলে শেষ বয়স পর্যন্ত জনগণের জন্যে কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছে আছে।

এতো দিনেও পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান বলেছেন, আমাদের যখন ২০০৪ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম ভাইয়ের মাধ্যমে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়। তখন আওয়ামী ক্ষমতার বাহিরে ছিলেন। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই আমি অনেকবার জেল হাজত খেটেছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে নানানভাবে হয়রানির শিকারও হয়েছিলাম। আবার তখনকার দূর দিনে আমাদের তেমন কোনো নেতাকর্মীদের পাশে পাওয়া যেতো না এটাও একটা কারণ।

তিনি আরও বলেন, বিরোধী দল ক্ষমতায় থাকাকালীন আমাকে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আমাদের দল ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবর্তনসহ নানান কারণে আমরা আর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারিনি। তবে আমি কেন্দ্রে অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। তারা বলেছিলেন পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হবে।

নতুন নেতৃত্বের বিষয়ে মতিউর রহমান বলেন, আমিতো বহুদিন ধরে যুবলীগ করে গেলাম। এখন বয়স হয়েছে। আমি আর যুবলীগ করবো না। আমি চাই নতুন যোগ্য নেতৃত্ব আসুক। যারা দীর্ঘদিন ধরে দল করে যাচ্ছে, তারাও পদে আসা প্রয়োজন।

কমিটির বিষয়ে মন্তব্য জানতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কথা করা সম্ভব হয়নি।