
কাঁচপুরে বিএনপি পুলিশ সংঘর্ষ
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে পুলিশের সামনে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলে দলীয় কর্মসূচী সফল করে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে প্রশংসিত হয়েছেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু।
শনিবার (১৯ আগস্ট) কেন্দ্র ঘোষিত একদফা দাবি আদায়ের দলের পদযাত্রা কর্মসূচীতে কাঁচপুরে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এসময় গুলি ও টিয়ারগ্যাসের সামনেও নেতাকর্মীদের সাহসী ভূমিকা ছিল প্রশংসিত। এর মাঝে নেতাকর্মীদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান ভুঁইয়াসহ দিপু ভুঁইয়ার অনুগত নেতাকর্মীদের। তবে জেলা বিএনপির সম্মিলিত কর্মসূচী হলেও জেলা বিএনপি কিংবা জেলার দলের নির্বাহী কমিটিতে থাকা অন্য নেতাদের এদিন দেখা মেলেনি।
একই সময়ে জেলা বিএনপির পক্ষে মিছিলে নেতাকর্মীদের নিয়ে সাহসী ভূমিকা নিয়েছেন দলের আরেক নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নানও। তার মিছিলটি দেখা গেছে কাঁচপুরে। এ ছাড়া আর কারো সেদিকে শারীরিক উপস্থিতি না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেখানে অনেকে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান দেন স্ট্যাটাস দিয়ে। এর মাঝে অনেকে ফোন করে গণমাধ্যম কর্মীদেরকেও জানান সেখানে তারা ছিলেন যদিও বাস্তবে সেখানে তাদের দেখা পাওয়া যায়নি।
এর আগে দলের ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচীতে ২৯ জুলাইও দিপু ভুঁইয়া ও তার অনুগত নেতাকর্মীদের ছাড়া কাউকে দেখা যায়নি মহাসড়কে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দলের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচী পালন করতে দুপুর থেকেই নেতাকর্মীরা কাঁচপুরে জড়ো হতে থাকেন। একই সময়ে জড়ো হন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলা ফারুক খোকনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুর ৩ টার পর সেখানে এসে উপস্থিত হন নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু। এদিকে জেলা বিএনপি কিংবা অন্য কারো উপস্থিতি না হওয়ায় পুলিশ নেতাকর্মীদের সরে যেতে বার বার চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিতে লাঠিপেটা করলে নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ করেন। এসময় দিপু ভুঁইয়াসহ নেতারা পুলিশের আচরণের প্রতিবাদ করলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে নেতাকর্মীরা পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে শুরু হয় দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।
এর মাঝে পুলিশের সাজোয়া যান থেকে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে চাইলে নেতাকর্মীরা সাজোয়া যান ঘিরে ফেলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ পিছু হটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপরও থেমে থেমে কয়েক দফায় বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সড়কে মহড়া দেয়।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের উপর নির্বিচারে কোন কারণ ছাড়াই গুলি ও টিয়ার গাস চার্জ করেছে পুলিশ। এতে আমাদের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত ও অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ ঘটনার দায় সম্পূর্ণ পুলিশের।
জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াদউদ্দিন বলেন, আমাদের একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী ছিল এটি। এতে পুলিশকে আমরা বার বার অনুরোধ করেছি যেন আমাদের শান্তিপুর্ণ কর্মসূচীতে তারা কোন হামলা না করে বা বাধা না দেয়। তবুও বিনা উস্কানিতে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও গুলি করেছে তারা। এতে আমাদের অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, আহত হয়েছেন অনেকে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম বলেন, আমরা দিপু ভুঁইয়ার নেতৃত্বে রাজপথে পুলিশের বিনা উস্কানিতে আমাদের উপর হামলা প্রতিরোধ করেছি। কর্মসূচী সফল করতে আমাদের যা প্রয়োজন তাই আমরা করেছি। রাজপথে আমাদের প্রতিরোধে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান ভুঁইয়া জানান, আমি নিজে আহত হয়েছি। আমাদেরকে সামনে থেকে দিপু ভুঁইয়া নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে নেতাকর্মীরা আরো দিগুণ সাহস নিয়ে এগিয়েছে। দিপু ভুঁইয়ার নেতৃত্বে আমরা পুলিশকে মোকাবেলা করে রাজপথে জোরালো অবস্থানে ছিলাম।