শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

|

বৈশাখ ২৫ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

বন্দর থানা বিএনপিতে পূণার্ঙ্গ কমিটিতে নৌকা মার্কা নেতা

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বন্দর থানা বিএনপিতে পূণার্ঙ্গ কমিটিতে নৌকা মার্কা নেতা

প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির অন্তুভক্ত বন্দর থানা বিএনপির পূণাঙ্গ কমিটিতে নৌকা-লাঙ্গল মার্কা নেতা, মাদক ব্যবসায়ী, মোবাইল চোর ও হত্যা মামলার আসামীদের ঠাঁই দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ত্যাগী ও যোগ্য নেতা অভাবে এমন বন্দর থানা বিএনপি পূণাঙ্গ কমিটিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃনমূল নেতা-কর্মীরা। এ সময় মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে টাকা বিনিময়ে অযোগ্য নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ না দেয়ার আহবান জানিয়েছে।

জানা গেছে, মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক আবুল কালাম ও অব্যাহতিপ্রাপ্ত যুগ্ম আহবায়ক আতাউর রহমান মুকুলকে মাইনাস করার কারণে নৌকা ও লাঙ্গল মার্কা নেতারা বন্দর থানা বিএনপি নেতৃত্বে সুযোগ পেয়েছে। ২০০৮ সালে পর থেকে মহানগর বা বন্দর থানা বিএনপি কোন মিছিলে সভা ও কর্মসূচীতে দেখা যায়নি, তারা পেয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদ। বর্তমান মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু’র পছন্দের নেতাদের ওয়ার্ডের নেতৃত্বে দিয়েছে। বন্দর থানা বিএনপি কাউন্সিলের নিজেদের পছন্দের নূর মোহাম্মদ পনেছকে সভাপতি করতে না পারলে টাকা বিনিময়ে হয়েছেন নৌকা লাঙ্গল মার্কা শাহেন শাহ আহম্মেদ। তিনি একই সাথে নাসিক ২০নং ওয়ার্ড প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার নেতৃত্বে বন্দর থানা বিএনপি মহানগরের বিভিন্ন কর্মসূচীতে সক্রিয় থাকলে এবার বিরুদ্ধে মহা অভিযোগ উঠেছে।

থানা বিএনপির একাধিক ক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীরা জানান, মহানগর বিএনপি দুই গ্রুপ সৃষ্টিতে বন্দর থানা বিএনপিতে ত্যাগী ও যোগ্য তোর অভাব দেখা গিয়েছে। ইতোমধ্যে টাকা বিনিময়ে অযোগ্য, হত্যা মামলার আসামী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বন্দর থানা বিএনপির পূণাঙ্গ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে অন্তুভুক্ত করা হচ্ছে। এমন কর্মকান্ড সংবাদে তৃণমূল নেতৃবৃন্দদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বতর্মান সভাপতি শাহেন শাহ আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা কমিটি বানিজ্যে মেতে উঠেছে বলে জানা গেছে। পদ বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। অংকের সংখ্যা বুঝে টাকার পদ পাচ্ছে বির্তকির্ত নেতারা। তাদেরকে সুযোগ করে দিচ্ছে মহানগরের আহবায়ক কমিটির সিনিয়র নেতারা।

তারাও অভিযোগ করেন, বন্দর থানা যুবলীগ নেতা খান মাসুদের সহযোগী ও নাসিক মেয়র আইভীর এককালীন ঠিকাদার সানোয়ার হোসেনকে সম্মেলনের মাধ্যমে ২২নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়। মেয়র আইভী কাছ থেকে একাধিক ঠিকাদারের মাধ্যমে টাকার মুখ দেখেন সানোয়ার। এরপর সহযোগি খান মাসুদের সাথে বিভিণ্ন স্ট্যান্ডে টাকা উঠান বলে অভিযোগ করে। ২০২২ সালের নাসিক নির্বাচনে মেয়র আইভী ২২নং ওয়ার্ডে গণসংযোগকালে খান মাসুদের পক্ষে ফুলের তোড়া তুলে দেন এই সানোয়ার হোসেন। ওই সময় মেয়র আইভীকে বন্দর ঘাট থেকে ২২নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় প্রদক্ষিণ করতে দেখা গেছে। তার ফেসবুকে নৌকা মার্কায় মেয়র প্রার্থী ডা. আইভীকে ভোট দেয়া লিফলেট সহ ছবি দেখা গেছে। বন্দর থানা বিএনপি’র ২২নং ওয়ার্ডের সম্মেলনেও সিনিয়র নেতাদের সাথে উচ্চ বাক্য হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হলেও মহানগরের নেতারা তাকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দেন। এর পর থেকেক বন্দর থানা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক করতে নাজমুল হক রানা নিয়ে মাঠে নামেন। বন্দর থানা বিএনপি সভাপতি হওয়ার জন্য শাহেনশাহকে উৎসাহ দেন রানা ও সানোয়ার গ্রুপ।

একাধিক নেতারা জানান, সম্মেলনে একজন কর্মী ২২নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি আবার বন্দর থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আসেন, তাহলে বিএনপি কোন নিয়ম মানা হলো না। এক কর্মী যদি টাকা বিনিময়ে নেতাদের খুশি করে বন্দর থানা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে অসিন হয়, তাহলে ওই কমিটি বৈধতা থাকে না।

আরেক সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ রুবেল প্রার্থী হন। পরে সম্মেলনের নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়ে তিনি সভাপতি প্রার্থী নূর মোহাম্মদ পনেছের হস্তক্ষেপে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। রুবেলকে ২২নং ওয়ার্ড বিএনপি ভোটার করার জন্য নূর মোহাম্মদ পনেছে হাত রয়েছে। রুবেল কখনো বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল সক্রিয় না থাকলেও বিএনপি এক নেতা বনে গেছে সিনিয়র নেতাদের আর্শিবাদে। রুবেলের বিরুদ্ধ মোবাইল চুরি অভিযোগে উত্তম মধ্যম হয়েছিলে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, কমিটির ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয়নি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৯জুন বন্দর থানা বিএনপি সম্মেলনে ভোটে নির্বাচিত সভাপতি শাহেন শাহ আহম্মেদকে লাঙল মার্কার লোক হিসেবে অবহিত করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু। ওই সময় কোন নৌকা মার্কা বা লাঙ্গল মার্কা নেতাকে বন্দর থানা কমিটিতে ঠাঁই দেয়া হবে না বলে ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান। ওই দিনই সন্ধ্যা পর কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তজার্তিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের হস্তক্ষেপে বন্দর থানা বিএনপির কাউন্সিল করা হয়। দিনব্যাপী নাটকীয়তা শেষে ভোটগ্রহণে কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগের এক সময় যোগদানকারী ও নাসিক ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহেন শাহ। বন্দর বিএনপিতে আবুল কালাম ও আতাউর রহমান মুকুলদের মাইনাস করার জন্য বন্দর থানা আহবায়ক কমিটিতে শাহেনশাহ আহম্মেদ অন্তুভুক্ত করে ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু। অপরদিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব টিপু’র আস্থাভাজন নাজমুল হক রানা।