বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১১ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

টানা অভিযানেও উদ্ধার নেই অস্ত্র!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ১৩ মে ২০২৩

টানা অভিযানেও উদ্ধার নেই অস্ত্র!

ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যাবহার

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সন্ত্রাসীদের উৎপাত বেড়েই চলেছে। মাদক ব্যাবসায়ের নিয়ন্ত্রণসহ নানা কারনে সন্ত্রাসীরা একের পর এক সংঘাতে জড়াচ্ছে। এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে রূপগঞ্জে একের পর এক অভিযান চলছে। তবে এখনও সন্ত্রাসীদের বিশাল অস্ত্র ভান্ডার পুলিশের অধরাই রয়ে গেছে।

সম্প্রতি রূপগঞ্জের চনপাড়ায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যাবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এসময় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যাবহার করতে দেখা গেছে সন্ত্রাসীদের। এসময় এক দিনমজুর গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

এ সংঘর্ষের ছবি ভিডিও প্রকাশিত হলে তাতে দেখা যায় প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে ও গুলি করতে একদল সন্ত্রাসীদের। কিন্তু সেই আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের কোন তথ্য এখনো মেলেনি।  

এঘটনার পর চনপাড়ায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এসময় পাঁচজনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে সংঘর্ষের সময় ব্যাবহৃত অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের কোনটিই এখন পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

রূপগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আতাউর রহমান বলেন, চনপাড়ায় গোলাগুলি ও সংঘর্ষের পর রাতভর অভিযান পরিচালনা করে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে রামদা, চাপাতি, সামুরাইসহ লাঠিসোটা উদ্ধার করা হয়।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যাবহার করতে দেখা যায় দুই পক্ষকেই। এসময় দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। এঘটনায়ও কোন অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

রূপগঞ্জ উপজেলা জুড়ে সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। এর কেন্দ্র বিন্দু উপজেলার চনপাড়া বস্তি। দুর্ভেদ্য এই চনপাড়া প্রসিদ্ধ মাদক ব্যাবসায়, অত্যাধুনিক ও দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র কেনাবেচা ও দাগী অপরাধীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে।

সম্প্রতি চনপাড়ার ডন হিসেবে খ্যাত সিটি শাহীন ও বজলুর মেম্বারের মৃত্যুর পর অশান্ত হয়ে উঠে চনপাড়া৷ এর নেপথ্যে রয়েছে মাদক ব্যাবসাসহ পুরো চনপাড়ার অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নিজের কব্জায় নেয়া। জানা গেছে এই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নেয়াকে কেন্দ্র করে বর্তমানে বেশ কয়েকটি গ্রুপ নিজেদের মাঝে সংঘাতে জড়াচ্ছে।

অপরাধীদের এই সংঘাত শুধু রূপগঞ্জের অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণের জন্যেই নয়। এখানে রয়েছে রাজনীতিও। অপরাধীদের মাঝে ধারণা রয়েছে প্রভাব কায়েম করতে পারলে যেমন ক্ষমতাসীনদের আশ্রয় প্রশ্রয় পাওয়া যায় তেমনি জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারলে প্রশাসনের সাথে সখ্যতাও গড়ে তোলা সম্ভব হয়।

তাহলে এই সখ্যতার নেপথ্যে কী? এর নেপথ্যে রয়েছে পেশী শক্তি। অপরাধীদের ছত্রছায়ার রাখার বিনিময়ে রাজনৈতিক নেতারা বরাবরই এসকর অপরাধী ও কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের পেশী শক্তি হিসেবে ব্যাবহার করে আসছে। রাজনৈতিক সভা সমাবেশে শোডাউন, প্রতিপক্ষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন কাজে এসকল অপরাধীদের ব্যাবহার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই অপরাধী ও রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে চলছে এই "গিভ এন্ড টেক" সম্পর্ক। পুরো রূপগঞ্জ উপজেলা জুড়ে এমন অপরাধী গ্রুপের উত্থান ঘটছে। এদের কেউ সরাসরি রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত আবার কেউ পরোক্ষ ভাবে।