শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৫ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

মসজিদ-মাদ্রাসা রক্ষা, দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারে আন্দোলন ছিল আলোচিত

মাহফুজুর রহমান পারভেজ

প্রকাশিত: ২৩:৪৯, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১

মসজিদ-মাদ্রাসা রক্ষা, দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারে আন্দোলন ছিল আলোচিত

দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারে আন্দোলন

নারায়ণগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবোত্তর সম্পত্তি মেয়র আইভী ও তার পরিবার কর্তৃক দখলের প্রতিবাদ ও সম্পত্তি উদ্ধারে আন্দোলন ছিল বছরজুড়েই। এই আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে শারদীয় দূর্গাপূজার সময় প্রতিটি পূজা মন্ডপে আইভী পরিবারের এ দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যানার। 

শুধু দেবোত্তর সম্পত্তি নয়, মসজিদ মাদ্রাসা রক্ষায় সম্মিলিত ওলামা পরিষদও মাঠে ছিল।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী ৫৩৯ বছরের পুরাতন মণ্ডলপাড়া জামে মসজিদের ওয়াকফ এস্টেটের প্রায় ৮৩ শতাংশ জায়গায় স্থাপনা ভাঙচুর, দখলের চেষ্টা ও অবৈধভাবে বাণিজ্যিক করণের মাধ্যমে পার্ক ও মার্কেট নির্মাণে দীর্ঘদিন ধরে অপচেষ্টা করছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী।

এ বিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের করলে মসজিদের জমির ওপর আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আদেশ নিয়েছেন বলে জানায় মসজিদ কমিটি। ২৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ শহরেরর চাষাঢ়া রাইফেল ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ।

এদিকে ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জুমার নামাজের পর বাগে জান্নাত মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন সম্মিলিত ওলামা পরিষদের নেতারা। অ

ওলামা পরিষদের নেতারা বলেন, মাদরাসা ভেঙে পার্ক কেন করতে হবে? শহরে কি আর জায়গা নেই? জনগণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এ ধরনের কাজ কেন মেয়র করবেন? যারা মসজিদ ও মাদরাসায় হস্তক্ষেপ করে তাদের পরিণাম কখনো ভালো হয় না।

এ ছাড়া দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া শহীদ মিনারে সমাবেশ, দেবোত্তর সম্পত্তির পাশে মানববন্ধন ও সমাবেশ ছাড়াই দেশের বাইরেও বিভিন্ন দেশে সমাবেশ হয়।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘নারায়ণগঞ্জ নগরী স্থাপনের সময়কালে শ্রী ভিকন লাল ঠাকুর শহরের দেওভোগ আখড়া এলাকায় দেবতা লক্ষ্মীনারায়ণের নামে ‘শ্রীশ্রী রাজা লক্ষ্মীনারায়ণ জিউর বিগ্রহ মন্দির’ প্রতিষ্ঠা করেন। শত বছর ধরে এই মন্দির নারায়ণগঞ্জের লাখো হিন্দু ধর্মাবলম্বীর কাছে পবিত্রতা ও শুদ্ধতার কেন্দ্র। ভিকন লাল পাণ্ডে মন্দিরটির পাশে পূজা-অর্চনা ও আশপাশের অধিবাসীদের সুবিধায় ৩৬৭ শতাংশ জমির ওপর একটি পুকুর খনন করান, যা স্থানীয়দের কাছে জিউস পুকুর নামে পরিচিত। ভূমি জরিপের সিএস (ব্রিটিশ) পর্চায় এই বিশাল সম্পত্তি দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে রেকর্ডভুক্ত হয়। জিয়াউর রহমানের আমল থেকে দেবোত্তর এই সম্পত্তি দখল করতে উঠেপড়ে লাগে মেয়র আইভীর পরিবার। যে নকল দলিল করে এই সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে তাতে মেয়র আইভীর মা, দুই ভাই এবং আত্মীয়-স্বজনের নাম রয়েছে। ’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষায় আমরা কখনো প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতাম না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ দেশে এখন আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত। আমরা এ দেশের শান্তিপ্রিয় নাগরিক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অবিচল আস্থা রেখে তার দ্বারস্থ হয়েছি। দেবোত্তর এই সম্পত্তিটির বর্তমান মূল্য ১০০ কোটি টাকার উপরে। মেয়র আইভী ও তার পরিবারের দখলদারির কাছে আমরা অসহায়। ’