
হাতে হাত রেখে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদহারণ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যেই হুট করে দেশে শারদীয় দূর্গাপূজার সময় কুমিল্লায় একটি ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা দেখা গেলেও নারায়ণগঞ্জ ছিল তার ব্যতিক্রম। দেশের বিভিন্ন স্থান সহিংস হলেও সম্প্রীতির অনন্য নজর দেখায় নারায়ণগঞ্জ।
এর মধ্যে পূজা দেখতে নারায়ণগঞ্জকে এসে শহরকে নিজের প্রাণের শহর দাবি করে অতীত স্মৃতি রোমন্থন করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। ১২ অক্টোবর রাতে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে নেচে তাদের উৎসাহ দিয়েছেন তিনি। তার নাচ ও বক্তব্য উপস্থিত দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যপক সাড়া ফেলে। এসময় তার সহপাঠী ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াও তার নাচ উপভোগ করেন।
এদিন রাতে নারায়ণগঞ্জের আমলাপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন নায়ক ফেরদৌস।
১৩৯ বছর ধরে এই আমলাপাড়া এলাকায় ঐতিহ্য ধরে রেখেছে মুসলমান ও হিন্দুরা। পাশাপাশি মসজিদ মাদ্রাসা ও দুর্গাপূজার মণ্ডপ শহরের আমলাপাড়া এলাকায়।
আজানের সময় আজান, নামাজের পর কুরআন তেলাওয়াত। এদিকে নামাজের সময় বন্ধ থাকে ঢাক ঢোল। আমলাপাড়া সার্বজনীন পূজা মণ্ডপ নিয়ে কখনো অভিযোগ করা তো দূরে থাক বরং তাদের সব সময় নিরাপত্তা দিয়েছেন মসজিদ মাদ্রাসার মুসলমানরা। আর পূজা উদযাপন কর্তৃপক্ষ আজানের সময় গান কিংবা ঢাক ঢোল বন্ধ রেখেছেন।
পূজার আয়োজকদের অন্যতম প্রদীপ সাহা জানান, এখানে মিলেমিশে আমরা এক অনন্য নজির স্থাপন করেছি যা বছরের পর বছর ধরে রয়েছে।
স্থানীয় মুসুল্লি রমজান মিয়া জানান, আমরা মসজিদ মাদ্রাসার মানুষ এই মণ্ডপের নানা বিষয়ে সহযোগিতা করি। আমাদের মধ্যে সম্প্রীতির এ ধারা শত বছরের পুরোনো।
একই সময়ে হাতে হাত রেখে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদহারণ সৃষ্টি করে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন নারায়ণগঞ্জের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। পূজা মণ্ডপে গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে যে কোনো পরিস্থিতিতে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।
১৪ অক্টোবর রাতে ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ শীষ মহল রাধানগর গোবিন্দ মন্দিরে এ ঘোষণা দেন মুসল্লিরা। এ সময় পূজা মণ্ডপের সামনে হিন্দু মুসলিম একে অপরের হাত ধরে উঁচুতে তুলে ধরে একাত্মতা প্রকাশ করেন।