শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৫ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

সফলতার এক বছর কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুজ্জামানের 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৩:৩০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

আপডেট: ০৩:৩১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

সফলতার এক বছর কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুজ্জামানের 

ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান

হাইওয়ে পুলিশ গাজীপুর রিজিয়নের কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামানের পথচলা ও সাফল্যের আজ ( ১৩ সেপ্টেম্বর)এক বছর পূর্ণ হলো। পথচলা ও সাফল্যের এই দিনে কাঁচপুর হাইওয়ে থানাধীন পরিবহন মালিক, শ্রমিক নেতৃবন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সংবাদকর্মী, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক বছর পূর্তিতে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন কাঁচপুর হাইওয়ে থানার সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামানকে। 

সেই সাথে এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতেও তার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। 

পরিবহন মালিক শ্রমিকসহ সর্বসাধারণের নানা অভিযোগে অভিযুক্ত কাঁচপুর হাইওযয়ে থানায় ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন তিনি। এ থানায় যোগদানের পূর্বে এই থানা পুলিশের বিরদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, চাঁদাবাজি,ব্যাটরি চালিত রিকশা, ফলের রিকশা ভ্যান গাড়ি,ইজিবাইক ও থ্রী হুইলার আটক করে মোটা অংকের টাকাb আদায়, ফুটপাতের দোকান থেকে দাবিকৃত চাঁদা না পেলে দোকান লাথি মেরে ফেলে দেওয়া ও হয়রানিসহ নানা রকম অভিযোগে অভিযুক্ত ছিল বলে পরিবহন মালিক শ্রমিক ও সাধারন মানুষ অভিযোগে জানায়। 

ব্যাপক অনিয়ম অত্যাচার করার এক পর্যায়ে সর্বসাধারন বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে এই থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। অত্যাচার হয়রানি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে একাধিকবার বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধের ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সোনারগাঁ থানা পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীরা শান্ত হয়। পরবর্তীতে অভিযুক্তদের কাঁচপুর হাইওয়ে থানা থেকে অন্যত্র বদলী করা হয়। অতিরিক্তি আইজিপি মলি¬ক ফকরুল ইসলাম বিপিএম,পিপিএম মহোদয় হাইওয়ে পুলিশ গাজীপুর রিজিয়নের টাঙ্গাইলের গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামানকে পোষ্টিং দেন কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় । তাঁর নির্দেশ মোতাবেক ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অশান্ত এই থানার হাল ধরেন তিনি। 

এখানে যোগদানের সময় সকলের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, অতিরিক্তি আইজিপি মহোদয় এবং পুলিশ সুপার আলী আহমেদ খান মহোদয় আমাকে কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় ওসি হিসেবে পাঠিয়েছেন আমি যেন, মানবিক পুলিশ হিসেবে কাঁচপুর হাইওয়ে অঞ্চলে পরিবহন মালিক শ্রমিকসহ পরিবহনের সাথে সংযুক্ত মানুষের যে সকল সমস্যা রয়েছে তা যেন সমাধান করতে পারি ,মানুষকে সেবা দিতে পারি ।আমার স্যারদের ভাবমূর্তি শতভাগ অক্ষুন্ন রেখে সততা ও ন্যায় নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনে নিজেকে নিয়োজিত রাখবো বলে অঙ্গীকার করে মনিরুজ্জামান আরও বলেছিলেন, কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় অতীতে কি হয়েছে তা আমি জানিনা, তবে আমি আমার স্যারদের দিক নির্দেশনা মোতাবেক কাঁচপুর হাইওয়ে থানাকে একটি মডেল ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে শতভাগ রুপ দেওয়ার চেষ্টা করবো। এই থানার কোন পুলিশ সদস্য যদি চাঁদাবাজি, ধান্ধাবাজি, দায়িত্ব পালনে গাফিলতি, মানুষকে হয়রানি করবেন এই চিন্তা চেতনা ধ্যান ধারণা মনে পুষে থাকেন তাকে এই থানায় থাকার দরকার নেই, স্বেচ্ছায় আগেই চলে যান বলে তিনি হুঁশিয়ারি করেছিলেন। 

তিনি আরও বলেছিলেন,জনগনের টাকায় আমাদের বেতন হয় আমরা জনগনের জন্য কাজ করতে এসেছি হয়রানি করার জন্য নয়। সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিগত একটি বছর কাঁচপুর হাইওয়ের অফিসার ইনচার্জ হিসেবে সকল কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রেখে শতভাগ চেষ্টা করেছেন মানুষকে সেবা দিতে। 

বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান ও পিকাপ মালিক সমিতির নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃমামুন হাওলাদার বলেন, ওসি মনিরুজ্জামান কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় যোগদান করার পর থেকে থানার চিত্র পাল্টে যায়,চাঁদাবাজি হয়রানি বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন বলেই আমরা অনায়াসে পরিবহন ব্যবসা করতে পারছি। মহাসড়ক থেকে একাধিকবার একাধিক ডাকাত ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করায় মহাসড়কের প্রায় ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে গত এক বছরে কোন পরিবহনে কোন রকম ডাকাতি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেনি বলে কাজী সাত্তার জানান। মহাসড়ক সুরক্ষার্থে পুলিশি টহল জোরদার করেছেন। 

বিভিন্ন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমন কোন পরিবহন মালিক শ্রমিক কিংবা সাধারন মানুষ নেই যে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারেন। কারণ যখনই ঘটনা ঘটে ঠিক তাৎক্ষণিক সমাধানের চেষ্টা করা হয়। পরিবহন সেক্টরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় আগে ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে আগে অহরহ তেল চুরির ঘটনা ঘটতো। কয়েকটি গ্রুপ সিন্ডিকেট করে জোর পুর্বক গাড়ি থেকে তেল নামিয়ে রাখতো । রাস্তার পাশে টং দোকান নির্মান করে অপকর্ম করে যেতো। সেই সব টং দোকান এখন আর নেই ওসি সে গুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। রাস্তার পাশে বিশ্রামের জন্য গাড়ি পার্কিং করলেই রেকার দিয়ে আদায় করা হত মোটা অংকের টাকা,দেওয়া হতো না কোন রেকারের বিলের রশিদ। এই সকল অভিযোগ এখন আর কাঁচপুর হাইওয়ে থানার বিরুদ্ধে নেই। কোথাও কোন পন্যবাহী গাড়ি দাঁড়ালেই ছিনতাইকারীরা চাকু ও ছোড়ার ভয় দেখিয়ে ড্রাইভার, হেলপারদের টাকা পয়সা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যেত। বর্তমানে মহাসড়কে নিবিড় তদারকির কারনে ছিনতাই এর মত ঘটনা প্রায় নেই বললেই চলে। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন,পুর্বে কাচঁপুর থানায় সেবা প্রত্যাশী জনসাধারন প্রবেশ করতে গেলেই নাক ছিটকাতো। ময়লা আবর্জনা আর দুর্গন্ধে ছিল সবাই অতিষ্ট। বর্তমান ওসি ব্যক্তি উদ্যোগ সকল ময়লা আবর্জনা পরিস্কার,অফিস, বারান্দা ফোর্সের ব্যারাকে টাইলস করাসহ থানা বাউন্ডারীর ও অফিসের রং করান। এই থানা কমম্পাউন্ডের চেহারাও বদলে দিয়েছেন। কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় কর্মরত সকল পর্যায়ের সদস্যের সাথে গড়ে তুলেছেন আন্তরিক ও নিবিড় সম্পর্ক। হাইওয়ে হেডকোয়াটার্সের সকল নির্দেশনা তাৎক্ষনিকভাবে পালনে সবাই একাগ্রতা দেখান। 

কাঁচপুর থানায় কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের বর্তমান কর্মস্থলে তারা অনেক ভালো আছেন।