কঠিন চীবর দানোৎসব
ধর্মদান সকল দানকে জয় করে, ধর্মরস সর্বরস অপেক্ষা উত্তম —এই পুণ্যময় বাণীকে ধারণ করে নারায়ণগঞ্জে শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বুদ্ধ বিহার ও ড. শাসন রক্ষিত ধ্যান কেন্দ্রের আয়োজনে দানোৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়।
সকালের প্রথম প্রহর থেকেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সমবেত হন এই দানানুষ্ঠানে। প্রাতঃকালের জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা ও ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পুণ্যময় এই আয়োজনের কার্যক্রম। সকাল ৯টায় মঙ্গলাচরণ, পঞ্চশীল প্রার্থনা ও স্বাগত ভাষণের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের মহাসচিব ও আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ ভদন্ত সুনন্দপ্রিয় মহাথের। প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার, বাসাবো, ঢাকার উপাধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মানন্দ মহাথের। প্রধান ধর্মদেশক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের গহিরা বোধি বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত লোকবংশ থের।
নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বুদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত চন্দ্রবংশ থেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদযাপন পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ বড়ুয়া ও মহাসচিব প্রদীপ কুমার বড়ুয়া। অর্থ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সুমেধ বড়ুয়া এবং বিহার নির্মাণের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা সুজিত কুমার বড়ুয়া।
প্রধান অতিথি ভদন্ত ধর্মানন্দ মহাথের তাঁর বক্তব্যে বলেন, ধর্মদানই প্রকৃত দান, যা মানুষের মনকে পবিত্র করে এবং সমাজে শান্তির আলো ছড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, কঠিন চীবর দান শুধু ভিক্ষুসংঘের প্রতি শ্রদ্ধা নয়, এটি মানবতার প্রতি ভালোবাসার প্রতীক। এরপর প্রয়াত ড. শাসন রক্ষিত মহাথের ও বেনুতোষ তালুকদারের স্মরণে অষ্টপরিষ্কারসহ সংঘদান এবং ভিক্ষুসংঘের পিন্ডদান অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় চীবর ও কল্পতরু উৎসর্গ। এরপর অতিথি আপ্যায়নের মাধ্যমে শেষ হয় দিনব্যাপী চলা এই অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে শ্রীলংকার নাগরিকবৃন্দ, বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষুসংঘ, ধর্মপ্রাণ ভক্তবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

