![বিদ্যুৎ ও পানি সংকট জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি বিদ্যুৎ ও পানি সংকট জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি](https://www.narayanganjpost.com/media/imgAll/2023June/untitled-11-1716920696-1-2405291343.jpg)
ফাইল ছবি
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নারায়ণগঞ্জে ডিএনডি বাঁধের ভেতরে-বাইরে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক বাড়ির পানির পাম্প ডুবে গেছে, পানির রিজার্ভারে ঢুকেছে ময়লা পানি। পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংকটের কারণে তৈরি হয়েছে পানির তীব্র সংকট।
অন্যদিকে বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় গতকাল মঙ্গলবার বিসিকের গার্মেন্টগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
গত সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জের প্রায় সব জায়গায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়ক, সলিমুল্লাহ সড়কসহ প্রধান প্রধান রাস্তা সোমবার বিকেল থেকে ছিল হাঁটু পানির নিচে। তবে মঙ্গলবার বৃষ্টি না হওয়ায় বিকেলে বঙ্গবন্ধু সড়কে পানি অনেকটা কমে এসেছে।
তবে নগরীর বিভিন্ন মহল্লার রাস্তা ও বাড়িঘর মঙ্গলবার বিকেলেও কোথাও গোড়ালি, কোথাও হাঁটু বা কোমর পানির নিচে ছিল।
নগরীর আল্লামা ইকবাল রোডের বাসিন্দা শাহ্ আশিকুর রহমান জানান, বৃষ্টিতে তাদের বাড়ির পানির পাম্প পানির নিচে চলে যায়। মঙ্গলবার পানি কিছুটা কমলেও এখনও পাম্পের ওপরে পানি আছে। এ ছাড়া পানির রিজার্ভারেও নোংরা পানি ঢুকে গেছে। রাস্তার পানি নেমে গেলে রিজার্ভারের পানি পাম্প করে বাইরে ফেলতে হবে। এ ছাড়া পানির পাম্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা মেরামত করতে হবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা বাসার পানির পাম্প চালু করতে পারেননি। খাওয়ার পানি কিনে এনেছেন। জমিয়ে রাখা পানি দিয়ে কোনো রকমে দৈনন্দিন কাজ সারছেন।
এ মহল্লার আরেক বাসিন্দা এজাজ কোরেশি জানান, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে তাঁর বাসার বিদ্যুৎ চলে যায়। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বিদ্যুৎ আসে। এসে আবার ৭৫ মিনিটের মধ্যেই চলে যায়। ফলে এ ভবনের পানির ট্যাঙ্ক পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। প্রায় দুই দিন পানি না থাকায় সবারই পানির চাহিদা বেশি ছিল। ফলে দ্রুতই ট্যাঙ্ক খালি হয়ে গেছে।
একই পরিস্থিতি নগরীর জামতলা, মাসদাইর, গলাচিপা, নন্দীপাড়া, পালপাড়া, উত্তর চাষাড়া, খানপুর ব্যাংক কলোনিসহ বিভিন্ন এলাকায়।
ডিএনডির পাগলা এলাকার বাসিন্দা মোখলেসুর রহমান তোতা জানান, প্রচণ্ড বৃষ্টিতে দৌলতপুর, রসুলপুর, আদর্শনগর, পিলকুনি, নন্দলালপুর এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত পঞ্চবটির বিসিক শিল্প নগরীতে বিদ্যুৎ ছিল না। বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, যদিও বিসিকের ফ্যাক্টরিগুলোতে ডিপিডিসির বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে জেনারেটর আছে, তবু টানা জেনারেটর চালালে গরম হয়ে যায়। তখন বন্ধ করে বিশ্রাম দিয়ে আবার চালু করতে হয়। এতে ফ্যাক্টরিগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
ডিপিডিসির নারায়ণগঞ্জ (পশ্চিম) জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়ে বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে বিদ্যুতের লাইনে পড়েছে, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে লাইন ছিন্ন হয়ে গেছে। ট্রান্সফর্মার জ্বলে গেছে। এসব মেরামত করে তারা ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। প্রচণ্ড ঝড় ও জলাবদ্ধতার কারণে তারা ইচ্ছে করেই লাইন ট্রায়াল দেননি। কারণ এতে বিদ্যুতায়িত হয়ে হতাহতের আশঙ্কা থাকে।
এই প্রকৌশলী জানান, মঙ্গলবার আবহাওয়া ভালো থাকায় সকাল থেকেই তাদের কর্মীরা মাঠে কাজ করছেন। নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্প নগরীতে শীতলক্ষ্যা ও মাতুয়াইলে দুই দিক থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। দুই দিকের লাইনেই সমস্যা হয়েছে। সেগুলো তারা মেরামত করছেন। বিসিক শিল্প নগরীতেও দ্রুতই বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।