শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

প্রিয় দলকে ভালোবেসে নিজের ঘর সাজিয়েছেন হল্যান্ড ভক্ত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২২:০৮, ২৩ নভেম্বর ২০২২

প্রিয় দলকে ভালোবেসে নিজের ঘর সাজিয়েছেন হল্যান্ড ভক্ত

হল্যান্ড ভক্ত মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা লস্কর

ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হলেই এদেশে শুরু হয়ে যায় বাড়তি উন্মাদনা। পছন্দের দলকে সমর্থন দিতে পুরো বাড়ি পতাকার রঙে সাজানো কিংবা কয়েক কিলোমিটারজুড়ে পতাকা টাঙানো। প্রিয় দলের জন্য ভক্তদের কান্ড-কীর্তির শেষ নেই। বিশ্বকাপকে ঘিরে সারাদেশের ফুটবল প্রেমীরা যেখানে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিয়ে উন্মাদনায় ব্যস্ত। তাদের ভিড়ে দেখা মিলল নেদারল্যান্ডস দলের এক অন্ধ ভক্তের। নিজের বাসস্থানকে সাজিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের সকল ক্রীড়া সামগ্রী দিয়ে। তার নাম মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা লস্কর। 

৪২ বছর বয়সী মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা লস্কর। পেশায় সরকারি প্রথম শ্রেনীর একজন কর্মকর্তা তিনি। বর্তমানে বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায় একাউন্টস অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ গোদনাইল এনায়েতনগর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সে। শতব্যস্ততার মাঝেও ফুটবল খেলাকে মনে প্রাণে ভালোবাসেন বলে জানান এ ভক্ত।

চার সদস্যের পরিবার লস্করের। দুটি ছেলে সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন। তবে নিজে নেদারল্যান্ড করলেও পরিবারের অন্য সদস্যরা ভিন্ন দলের সাপোর্টার। তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস মিলির প্রিয় দল আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে ১০ বছরের বড় ছেলে আমির হামজা লস্কর জার্মানি দলের চরম ভক্ত। তবে বয়স কম হওয়ায় তিন বছর বয়সী আব্দুল্লাহ শাহেদ এখনো নিজের প্রিয় দলটি বাছাই করতে পারেননি।

তার ভাষ্যমতে, বাল্যকাল থেকে ফুটবলের সাথে পরিচিত তিনি। খেলা বুঝতে শেখা বা উপভোগ করতে পারার অল্প কিছুদিন পর ১৯৮৮ সালে হল্যান্ড ফুটবল দলকে দেখেছিলেন ইউরো কাপ জয়ী হতে। তখন সবেমাত্র মাত্র ৮ বছর বয়স ছিলো তার। সেদিন হল্যান্ডের খেলোয়াড় রুড খুলিতের ইউরো কাপ উঁচিয়ে ধরার দৃশ্য আজ অব্দি আবেগতাড়িত করে বেড়ায় তাকে। ঠিক তখন থেকে রুড খুলিত তার প্রিয় খেলোয়াড়ে পরিণত হন। শুধু রুড খুলিত-ই নন, মার্কো ভ্যান বাস্তেন, ফ্রাংক রাইকার্ড, রোনাল্ড কোয়েম্যান রোনাল্ড ডি বোয়েরদের খেলা বেশ ভাল লাগতো তার। 

লস্কর জানান, সর্বশেষ ২০১০ সালে আর জে রোবেন, ভ্যান পার্সি, ওয়েসলি স্লাইডাররা হল্যান্ড দলকে ফাইনালে তুললেও স্পেনের কাছে ১-০ গোলে হারার স্মৃতি ভুলতে পারিনি সে। এদিকে সর্বশেষ বিশ্বকাপে বাছাইপর্বে বাদ পড়ে যায় নেদারল্যান্ডস। 

ফুটবলে বহুদলের খেলা হওয়ায় সত্বেও তার পছন্দ হল্যান্ড। তাই নিজের মনকে আনন্দিত করার জন্যে প্রিয় দলের সকল ক্রীড়া সামগ্রী সংগ্রহ করে সেটা নিজের ঘরে সাজিয়ে রাখেন তিনি। তার পোশাক-আশাকে ফুটিয়ে তোলেন নেদারল্যান্ডসকে।

লক্ষ্য করে দেখা গেছে, ফ্লোরে ভিতরে ৮ ফুট ও ১২ ফুটের আকর্ষণীয় স্টেডিয়াম তৈরি করেছেন। ঘরে সংরক্ষণ আছে ১৯৮৮ সাল থেকে বর্তমান সকল রকমের ২৫টি জার্সি ও টি শার্ট। আছে হল্যান্ডের কাপ (কালো, নীল), প্রাক্টিস কিট, হল্যান্ডের পানির পট, হল্যান্ডের পানির মগ, হল্যান্ডের প্লেট, হল্যান্ডের বল, হল্যান্ডের চাবির রিং সহ অনেক টুকিটাকি জিনিস। 

লস্কর বলেন, ফুটবলে সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ডিফেন্স। বর্তমান দলে ভ্যান ডাইক এর মতো বিশ্বসেরা ডিফেন্ডার আছে, সাথে আছে ডি লিট, নাথান আকে, ড্যাম্ফ্রাইস, মালাসিয়া এর মতো বিশ্বের অন্যতম ডিফেন্ডাররা। মাঝমাঠে আছে বিশ্বসেরা ফ্রাংক ডি ইয়ং, ডি রুন, কোমপেয়ারস এর মতো খেলোয়াড়রা স্ট্রাইকিং এ আছে মেনফিস ডিপেই, গেগপো, নুয়া ল্যাং। এই দলে বিশ্বকে চমক দেখানো মাত্র ১৯ বছর বয়সী সিমন্স ও আছে। যে একাই খেলার মোড় ঘুরে দিতে পারবে। তাই আশা করছি, এবার সিমন্সই হবে বিশ্বকাপের সেরা তরুণ প্লেয়ার।