
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, মাসুদ রানা ও আরিফ হোসেনকে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৪ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এ কথা জানান।
গুমের মামলায় তদন্তের স্বার্থে এ অনুমতি পেয়েছে তদন্ত সংস্থা এবং এ মামলার অন্যতম আসামি সাবেক সেনাকর্মকর্তা জিয়াউল আহসান বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এদিন জুলাই-আগস্টের গণহত্যার আরও একটি মামলার বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
চাঁনখারপুলে ৬ জনকে হত্যা মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে ৭ আগস্ট। এদিন গুমসহ আরও ৬ মামলার শুনানি হয় ট্রাইব্যুনালে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত: ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচ জনকে অপহরণ করা হয়। বিষয়টি দেখে ফেলায় অপহরণের শিকার হন আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক মো. ইব্রাহিম। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে ৬ জনের মরদেহ, পরদিন পাওয়া যায় আরেকজনের মরদেহ। নজরুল, চন্দন ও ইব্রাহিম ছাড়া হত্যার শিকার অন্য ব্যক্তিরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম।
এ ঘটনায় হওয়া দুই মামলায় ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন নারায়ণগঞ্জের আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন দণ্ডিত ব্যক্তিরা। হাইকোর্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল এবং অপর ১১ আসামির দণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ৯ আসামির দণ্ড বহাল থাকে। আসামিপক্ষ হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। এখনও তা নিষ্পত্তি হয়নি।
হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিদের মধ্যে তারেক সাঈদ ছাড়া রয়েছেন সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর (চাকরিচ্যুত) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম এম রানা এবং সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা নূর হোসেন।
কারা অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেমড সেলে আছেন তারেক সাঈদ। এম এম রানা আছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার–২–এ। আর আরিফ আছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার–৪–এ।