
জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ
নারায়ণগঞ্জে উদ্বোধন হলো দেশের প্রথম জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ নগরীর হাজীগঞ্জ এলাকায় এই স্মৃতিস্তম্ভটি উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টা।
২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সেইদিন ছাত্রজনতার সম্মিলিত গণ-আন্দোলন ফ্যাসিস্ট সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অন্তত ২২ জন তরুণ, যাদের অধিকাংশই ছাত্র। আহত হন সাড়ে তিনশো মানুষ। দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ, যা পরে রূপ নেয় পূর্ণাঙ্গ গণ-অভ্যুত্থানে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ঘোষণার একটি ছিল, জুলাই শহীদদের স্মরণে দেশের প্রতিটি বিভাগ ও জেলা শহরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ।
নারায়ণগঞ্জ নির্বাচিত হয় প্রথম ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ স্থাপনার জন্য একাধিক কারণে। এই জেলায় অন্যতম ভয়াবহ দমনপীড়নের ঘটনা ঘটেছিল। এই শহরের জনগণ ছিল আন্দোলনের অন্যতম চালিকাশক্তি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের লোকদের এমনভাবে হত্যা করা হলো, অঙ্গহানি করা হলো এর বিচার কোথায়? আমি আপনাদের দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই, বিচার এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের শাসনামলেই এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে।
তিনি জানান, ৫ আগস্টের আগেই অভিযোগপত্র দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত অনেক অগ্রসর হয়েছে। অনেক মামলার অভিযোগপত্র প্রস্তুত। পাঁচ আগস্টের মধ্যেই বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা করছি।
শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, এটা হবে স্বৈরাচারের ঠিকানা। আমরা এটা সংরক্ষণ করতে চাই, দেখাতে চাই ফ্যাসিস্টরা কীভাবে অত্যাচার করতো। আমি গণপুর্ত মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, তারা উদ্দ্যেশ্যহীন ভাবে প্রান দেয়নি। একটি নির্দিষ্ট উদ্দ্যেশ্যে তারা প্রান দিয়েছে। সেটা হল বৈষম্য বিহীন একটি বাংলাদেশ গড়ার। শহীদদের সম্মান দেয়ার উপায় হল স্বৈরাচারের বিচার নিশ্চিত করা। এটা অবশ্যই ন্যায় বিচার হতে হবে। যারা বেঁচে আছেন, লড়াইয়ে বন্ধু ও সহযোদ্ধাদের হারিয়েছেন তারা ন্যায় বিচার চান। আমরা এই বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছি। বিচার প্রক্রিয়া আমাদের শুরু এবং শেষ করতে হবে স্বচ্ছ ভাবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা এবং পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার সহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শহীদ পরিবারের সদস্যরা।