
ফাইল ছবি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির সংগঠক নীরব রায়হান বলেছেন, একটা আক্ষেপের জায়গা থেকে যখন কেউ তিক্ত হয়ে যায়, তখন অনেক সময় আবেগে অনেক কিছুই বলা হয়ে যায়।
তিনি জানান, শনিবার শহরে অনুষ্ঠিত এনসিপি'র প্রতিবাদ মিছিলে একটি বিতর্কিত স্লোগান উঠেছিল, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে নীরব রায়হান বলেন, আমরা যারা সামনে ছিলাম, তারা সঙ্গে সঙ্গে বলেছি, এই ধরনের স্লোগান সঠিক না। এটা আমাদের দলের অবস্থান নয়। কিন্তু ঘটনাস্থলে থাকা বিভিন্ন জেলা ও কলেজ-ভার্সিটি থেকে আসা কিছু আবেগপ্রবণ কর্মী স্লোগানটি দেয়। হত্যাকাণ্ডের বীভৎসতা, দীর্ঘদিনের ক্ষোভ আর রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের প্রতিবাদে অনেকেই তখন আবেগ সামলাতে পারেনি। এটাই বাস্তবতা।
তিনি আরও জানান, মিছিল চলাকালে ওই স্লোগান শুনেই আমি মাইক নিয়ে আমাদের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করি। কারণ আমরা চাইনি, কেউ সুযোগ নিয়ে পরিবেশ নষ্ট করুক। কে বা কারা এই স্লোগান দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চেয়েছে, তা তদন্ত করে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
নীরব রায়হান বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যার পর এমন ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড এই প্রথম। মানুষ ভীত, ক্ষুব্ধ এবং প্রতিবাদমুখর। তাই আমাদের এই মিছিলে শুধু আমাদের দলের নয়, আরও নানা সংগঠনের, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, আন্দোলনের নামে কোনো উসকানি বা বিভ্রান্তিকর স্লোগান দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করা কখনোই আমাদের লক্ষ্য হতে পারে না। তবে যে বীভৎস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তার প্রতিবাদে দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের হৃদয়ে যে ক্ষরণ তৈরি হয়েছে, সেটিও অস্বীকার করা যায় না। এ কারণেই এমন কিছু মুহূর্ত এসেছে, যেখানে মানুষ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আবেগের বশে কিছু বলে ফেলেছে।
শেষে নীরব রায়হান স্পষ্ট করে জানান, এনসিপি এবং জাতীয় যুবশক্তি এমন কোনো কর্মকাণ্ড বা স্লোগানের পক্ষে না, যা সাম্প্রদায়িকতা, ঘৃণা বা সহিংসতার জন্ম দেয়। আমরা শৃঙ্খলিত রাজনৈতিক চর্চায় বিশ্বাসী, এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে আমাদের প্রতিটি কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
সাক্ষাৎকার শেষে তিনি পুনরায় আহ্বান জানান, মানুষের প্রতিবাদের ভাষা হোক বাস্তবভিত্তিক, যুক্তিনির্ভর ও অহিংস। আমরা তদন্ত করে দেখব কারা এই স্লোগান তুলেছিল এবং প্রয়োজনে দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।